বাইরে কনকনে শীত,,,
কুয়াশা না তুষার না বাতাসের দুরন্তপনা
নাকি বৃষ্টির অভিমানী রূপ,,কে জানে?
কাচের জ্বানালার ভেতর থেকে বাইর
এর চেয়ে আর ভালো বুঝা যায় না,,,
যেমনটি বুঝা যায় না
ফোনে অপাশের সব শব্দ সব অনুভব,,,,!
প্রতিবারেই জিজ্ঞেস করা হয় কেমন আছ,,,
হাত থেকে মেঝেতে পড়ে যাওয়া গ্লাস
কাচের টুকরোতে হীরার হাসি হেসে বলে
এই তো বেশ আছি,,,ভালো আছি,,,
দুর্দান্ত যাচ্ছে দিনকাল! সব অমৃত হতে জল
ধরে রাখছি বুকে,,,স্বর্গে আছি গো স্বর্গ হয়ে।
এর চেয়ে উত্তম জীবন নেই আর ভবে!!
কভু কভু ওপাশ থেকে অভিমানের সুর আসে ভেসে
রাগের চিত্র খানি বিচিত্র অভিযোগে।
হায় অভিমান,হায় অভিযোগ!
ওপাশের আগুন যে এপাশে আসলেই হয়ে যায়
শীতল এক তুষার ঝরা সকাল,,,
আর সেখানে তুমি তো সামান্য সিগারেট ধোয়া,,,।
তবু তুমি আসিও,,,তবু তুমি প্রেয়সির চুলের মত
মুখ খানি ঢেকে দেবার ব্যর্থ প্রয়াস বার বার করিও।


আর বার বারই দু ঠোটের মাঝ দিয়ে বের হয়ে যাওয়া উষ্ণ পবনে,,,
তোমাকে সরিয়ে মুখ দেখে নিবে কোন প্রেমিক তার প্রেমিকার,,,
পুরুষের ঘ্রাণে নারী পাবে তার নারীত্বের স্বাদ নাসিকার কর্মচাঞ্চলে
হাজার কোটি নক্ষত্র দূরত্বে দাড়িয়ে,,,সহবাসে যাবে দু দুটি বাসর।
দুদুটি সুখ,দুদুটি বেদনা,,,দুদুটি স্বপ্ন বিলাস আশা,,,


কিন্তু এভাবে কতক্ষণ?
এভাবে আর কতদিন?
এভাবে আর কত অপরাধের মিলন হবে এক জীবনে?
বাড়িতে, আপন গৃহে কত সতেজ গাছই সহসা বেড়ে যায় পোকা মাকড়,,,
কত পুরাতন ভিটেতে পরে নতুন মাটি,,,
কত স্বচ্ছল বাল্ব হঠাৎ অকেজো,,,
কত দালানের উপর বাড়ে আরো দালান,,,
কত লাটির পরিবর্তন হয় বৃদ্ধ দাদুর
অসহায় হাতের কত অপমান দেখতে হয় দিদিমার,,,
মায়ের থালার ভাতের কত চোখের জলে মিশতে হয়,,,
পুত্র পুত্র শব্দে কত রাতকে জাগতে হয় বাবার চোখে,,,
এসবের কি উত্তর আছে?  আছে কি কারো কাছে?
আছে কি না জাগতে পারা অসুস্থ শিশু সন্তানের পাশে,, অপরাধের?
আছে কি কোন উত্তর,, যথাসময়ে লক্ষ্মী দেবীকে না পাঠাতে আপন আলয় মন্দিরে?
আছে কি কোন উত্তর,,আছে কি কোন ভাষা,,,
অসুখে বিসুখে, ভালো মন্দে জিজ্ঞাসা না করতে কেমন আছ তোমরা?
নাকি সব দুনম্বরি আয়োজন আপনার স্বভাবে?
সব এক মিথ্যের প্রাসাদ সত্যের ব্যানারে,,
সব এক বিষাক্ত জালাতন অমৃতের নামে,,,


অসুস্থ বিছানার সোহাগ নিয়ে বলে দেওয়া,,
এই তো মা আমি খুব ভাল আছি,,ফুটবল খেলতে যাচ্ছি বনে।
হ্যা হ্যা খেয়েছি তো,,।আজ বিরিয়ানি করেছিলাম রান্না,,
সঙ্গে সাজনা দিয়ে মুগের ডাল।মা ঠিক তোমার হাতের মত রান্না হয়েছে।
ওই যে বিজয়ার দিন শেষ খাবার খাওয়াছিলে প্রসাদ করে,,,


অথচ সকাল হতে দুপুর হল,, দুটি পুড়া টোস্ট পাশেই পড়ে আছে লজ্জানত আখিতে,,,।
কোন ভাবেই যেন যাবে না সে এমন মিথ্যুক প্রবাসী সন্তানের উদরে,,,
যে মিথ্যে বলে সকালে,,যে মিথ্যে বলে বিকালে,,যে মিথ্যে বলে রাতে প্রভাতে,,।
যে মিথ্যে বলে প্রতি সেকেন্ডে প্রতি জনে জনে,,,।
সে মিথ্যুক,,স্ত্রীর কাছে নানা অভিযোগ সম্মুখে
সে মিথ্যুক,, সন্তানের কাছে নানা আবদার পুরনে।
সে মিথ্যুক মায়ের কাছে,,,মমতার বন্দনের জ্বালাতনে।
সে মিথ্যুক  বাবার কাছে ভালবাসার অনুভবে।
সে মিথ্যুক ভাইয়ের কাছে স্নেহ, রক্ত বন্ধনের উপদ্রবে।
সে মিথ্যুক বোনের কাছে,,রাখি চিহ্নের প্রতি আয়োজনে।
সে মিথ্যুক জনে জনে আপনাকে আড়াল করে রাখার মিশনে
মিথ্যুক এক প্রবাসী,,মিথ্যুক এক পুত্র সে জগৎ সংসারে,,
আপনারে কাদায়ে যে হাসায় সবারে।
আপনারে লুকায়ে যে প্রকাশ করে
শুধু আনন্দ আতশ বাজিরে।