পহেলা বৈশাখের উত্তরী গায়ে দিয়ে আমাকে যদি
বরফাশ্রিত কোন জঙ্গলে ফেলে দাও,,
ঢেকে দাও সাইবেরিয়ার মাটিতে,,,
আমি সেখান থেকেও প্রাণের দাবী নিয়ে
সম্মুখে দাঁড়াব  সবার,,, দাঁড়াব ঢোল মৃদঙ্গ বাজিয়ে!
আমাকে যদি পহেলা বৈশাখের মেলার সুর দিয়ে
ফেলে দেওয়া হয় দোযকের বালির আগুনে,,,
আমি সেখানেও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করব হেসে হেসে।
আমাকে যদি পহেলা বৈশাখের প্রভাত ফেরি দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শত কোটি জল্লাদের ঘরে,,
আমি সেখানেও প্রেমের উদ্যানে ফুটাব ফুল
জারি সারি বাউল গান দিয়ে।
আমাকে যদি নামিয়ে দেওয়া হয় আগ্নেয়গিরির বুকে,,,
অপরাধ দেওয়া হয় পান্তা ইলিশের স্বাদ
আমি সেখানেই বানিয়ে ফেলব হাজার খানেক বেহেস্ত বাংলার ধুলি বালি কিবা কাদামাটি দিয়ে।
আমাকে যদি নিমগ্ন করা হয় পাতালে
আমার বাঙালি পোশাক বস্ত্রের অপরাধে,,,
আমি অট্টহাসিতে বিষের পেয়ালায় নেমে করব স্নান,,,
সাঁতার কাটব শতকোটি সাপের লেজ ধরে,,,।
আমাকে যদি আমার শোভাযাত্রার জন্যে
ফাঁসি নিতে হয় কারো বিধানে,,,।
আমি সেই বিধানের ফাঁসি দিয়ে যাব গণ আদালতে,,।


আমাকে যদি হাওর জলে নৌকাবাইচের অপরাধে
দাঁড়াতে হয় ঈশ্বর সম্মুখে,,,
আমি হাসতে হাসতে উন্নত শিরে দাঁড়াব সেথায়,,
লাথি দিয়ে ফেলে দিব সব বেহেস্তের হকারী।
আমাকে যদি আমার মাটির গন্ধ থেকে করা হয় বিচ্যুতি
আমার সংস্কার থেকে সরিয়ে নেয় আমার সংস্কৃতি
কোন ফেরেস্তা,,,!
আমার বায়ু,আমার আলো,আমার ভূমিকে
করা হয় অবরুদ্ধ,,!
সে হোক বিধাতা তবু আমি নই তাতে কভু মুগ্ধ।


আমি বাঙলার ঘরে বাংলার সন্তান,,
বাংলার মাটিতে বাংলা।
আমি ধান ক্ষেতের কাদার গন্ধে উদর ভরি,,
বাঁশেরবাঁশীতে ভেজাই সুর,,,
আমি আমার গৃহে আমি থাকি
গৃহ রাখি না আমা হতে কভু দূর।
যে হিমালয় হতে আসে জল আমার মাটি চুমিবারে,,,
আমি সেই জল পান করি করি যাই হিমালয়ে,,,।
আমি আমার মাঝে দেখেছি সাজ,,দেখেছি অভ্যাস
ওই নিত্য পরিচয় বন্ধনে।
আমি বাঙালি, রণে বনে জঙ্গলে
আমি বাঙালি আকাশে পাতালে ।
আমি বাঙালি ধর্ম,বর্ণ, গোত্র চূর্ণ করে।
আমি বাঙালি গীর্জা, মসজিদে, মন্দিরে।
আমি বাঙালি রাত,দিন কিবা স্বপনে
আমি বাঙালি সর্বসময় সর্বস্থানে,,
আমি বাঙালি আমার আত্মার সন্ধানে।
পহেলা বৈশাখ আমার তাজ অহংকার
আমার অলঙ্কার সর্ব মননে,,,
পহেলা বৈশাখ আমার মুষ্টি মুষ্টি  চাল,
আমার হাতের হাড়িতে।
পহেলা বৈশাখ আমার পারিজাত ফুল
আমার পরিচয় উদ্যানে।
#############
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
১২/০৪/১৮