খুব ইচ্ছে করে আজ
নিজের চেহারাটা নিজের আয়নাতে দেখি,,
এক্কেবারে চকমকে চোখে।
কত দিন হয়ে গেল,,
চোখের মাঝে অন্যের নজর
নিয়ে নিয়েছে বখতিয়ারী দখল।
জীবন রোজনামচায় লিখে যাচ্ছে
অন্য কেউ,,অন্য কেউ,,।


না না আজ চেহারাটা দেখবই
ওই সেই আয়নায়,,
যা বিবাহের নোলক নাকে পড়ানোর সময়
মা হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল,,,
এটি যেন,,  কভু,,ভাঙ্গে না মা,,


না মা আয়নাটি ভাঙ্গে নি,,,
বাড়ির উঠানে,, মাটির উপর মাটি পড়েছে,,
ঘরের শিলিং ফ্যানে,, সেই রকম ময়লা জমেছে,,
দেয়াল হতে খসে পড়েছে রঙ,,
তবু আয়নাটি ভাঙ্গে নি,,
হাসের নিচের ডিম হতে
একে একে বের হয়ে এলো,,
অসংখ্য ছানা,,তবু,,আয়নাটি ভাঙ্গে নি,,
কিন্তু আয়নাতে যে আর আমাকে
দেখা যায় না মা,,!!
খোজেই পাই না আমাকে এক বিন্দু,,,।
সব যেন অপরিচিতা,,অপরিচিতা,,,
আমার দেহ টা গড়ণ একই,,
কিন্তু এ কি আমি?
আমি নিজেই হতবাক,,বারংবার।


আমার কাধের উপর,,ময়লাস্তুপের মত
কালো কালো দাগ পড়ে আছে,,,
আমার উদরের উপর ভাঙ্গি ফাটার মত
নানান চিহ্ন,,,
আমার শরীরের নানান স্থানে,, নানান ব্যথা,,
লোকে বলে আমি নাকি মা হয়েছি,,,
নারীত্বের মুকুট পড়েছি,,,
আমি আমার ঘরের উপরই লিখে রেখেছি ঘর,,
আমার হাতেই পূর্ণ হয়েছে আমার হাত পেয়ালার জল,,।


কিন্তু এই জলেই তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন যে দেব দেবতা
এই জলেই যে মরুভুমি হচ্ছে সবুজ,,
তারাও কি জানে,, আমি কোথায়?
নাকি জানে,,
আমি শুধু মা হয়েছি,,
ঘরের গাভীটির সাথে পাল্লা দিয়ে মা হয়েছি,,,!
বিধি বিধানের চক্রে মা হয়েছি,,


চক্রে চক্রে মা হবার পরেও
আমারও যে এখনো ক্ষুধা লাগে মনে,,
আমারো যে এখনো শখ জাগে ভালবাসার বনে
আমি যে এখনো,,ঘোমটা মাথায় চন্দ্র দেখতে চাই
বাস করতে চাই,,কারো বুকে,,,,কারো বুকে,,
কিন্তু সে বুক,,,সে কি জানে আমাকে
সে কি চায় আমাকে,, ঠিক প্রথম দর্শনের মত!!


নাকি এখন সে  উত্তেজিত,,চরম উত্তেজিত
শুধু পিতৃত্ব সুখে,,,,
তাই বুঝি খাঁচা হতে,, দুটি বাচ্চার জননী
পোষা টিয়াও বলে,,
রোজই কানে কানে
এই সদ্যপ্রসূতী জননীকে,,
তোর হাতে ভরা,,তোর পেয়ালার জল
তোকেই কি সরিয়ে দিল
অন্যলোকে,,!
অন্যলোকে,,!!
##########
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
৩১/০৮/১৯