আমি তোমাকে মা,,
মা বলেই ডাকতাম মা,,
মা বলেই ডাকতাম,,
সামান্য ক্ষুধা পেলেই,, চলে আসতাম তোমার কাছে
পাখির শাবকের মত হা করে বসে থাকতাম আপন ঠোটে।
সামান্য অসুখ হলেই,,, অজান্তেই বলতাম, ও মা মাগো।
গাছের ছায়ায় বসেও ভাবতাম,,,
দুনিয়ার কোন কিছুই তোমার ছায়াতুল্য নয়,,,
ওই যে নদী চলে যাচ্ছে দ্রুত বেগে,,জানো কেন?
আমি ভাবতাম তোমার কাছে লজ্জা পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে,,
যাচ্ছে পালিয়ে গঙ্গোত্রীতে জন্ম নেওয়া গঙ্গা
তার কাছে তেমন কোন প্রশান্তি নেই
তেমন কোন পবিত্রতা নেই যা তোমাকে হারাতে পারে,,,,
তবে আছে শুধু জাগ্রত কিবা নিদ্রিত
বুক ভরা বালু চর মা,, শুধু বুক ভরা বালুচর।


কিন্তু এই বালুচরের মত সন্ন্যাসীর থলের ভেতর
একি মাংসপিন্ড দেখছি মা,,,
একি রূপ দেখছি দূর্গা মাতার দেহে ডাকিনীর মস্তক,
একি দেখছি তোমার আশ্রিত গাভীর ওলান থেকে
বের হচ্ছে বিষ,,,সাদা বিষ,,,
মা এই বিষকেও আমার কি দুধ বলতে হবে ,,,?
আমার কি বলতেই হবে,,,,
নারী রূপ দেখেও ভুত প্রেত্নীর
"সর্ব মঙ্গলমঙ্গলে শিবে সর্বার্থ সাধিকে
সরন্যে ত্রম্বকে গৌরি নারায়ণী নমস্তুতে।"


মা মাগো এই মন্ত্র টা কি আমি শ্মশানঘাটে বলে যাব?
আমি কি মা নামের উপন্যাসের পাতায় পাতায়
লিখে যাব,,,দুগ্ধের রঙ লাল,,দুগ্ধের নাম রক্তগঙ্গা।
আমি কি মাতৃছায়া শব্দটার অভিধান খুঁজব
কোন ভাগাড়ে?সত্যি মা কোন ভাগাড়ে?
যদি তাই না হয়
তাহলে কেন তুমি এক বৃদ্ধ গাছের উপরে,,
অসহায় এক আহত বৃদ্ধ পাখির উপরে
তোমার আশ্রিত এক প্রাণের উপরে,,,
বার বার ঢেলে দিচ্ছ তোমার
সেই সৎ মা রূপ!
কেন তুমি সহ্য করতে পারছ না
এক ফুল হয়ে আরেক ফুলকে।
নারী তো মা ই হয়,,ওই মাটির মত
হোক না সে বৃদ্ধ, হোক না সে যুবতি,, হোক না সে শিশু।
কিন্তু তুমি স্তন দিয়ে কেটে আরেক স্তন,,
তুমি লম্বা কেশ, লম্বা আঁচল নিয়েও হলে দুশাসন,,
তুমি নারী দেহে হলে পুরুষ,,,কেবল পুরুষ।
এই সভ্যতার পুরুষ,,,,


যে পৌরুষ্য রূপে ভাবছি
মায়ের মধ্যেও প্রকার আছে,আছে ভেদ?
নাগিন যতবারই  মা হোক,,
ততবারই তার বিষাক্ত থলি উঠে ভরে  ,,
বাঘিনী যত মা ই হোক তবু সে বাঘিনী
পশুত্ব শক্তি তার যায় বেড়ে,,,
আর তাই,,,
তুমি বধু হতে পেরেছ,,সন্তান জন্ম দিতে পেরেছ,,
সেই অন্ধকার হতে আলোর চকচকে দিন পর্যন্ত
তুমি বিষ খেয়েও করেছ হজম,,
সমস্ত সত্ত্বায় জয় করেছ বিশ্ব - ভালবাসা দিয়ে,,,
শুধু পারলে না কেবল স্বামীর মায়ের কন্যা হতে।
আড়ালে আবডালে দিয়েছে আড় চোখ,,
দিয়েছ বিষের নজর প্রায় সব ঘরে ঘরে
না না পারলে না হতে মানুষ,পেরেছ
ওই সাদা ধবধবে কেশিনীর কেশে দিতে হাত,,
নিজের যোনিপথ ছিড়ে বের করতে নোংরা গন্ধ,,
কিন্তু একবারেও ভাবলে না,,,মা
আজ যে অসহায় তোমার কাছে,,,
একদিন তুমি ছিলে অসহায় তাহার কাছে,,
আবার হবে অসহায় কারো কাছে,,কারো কাছে।
বউ- শাশুড়ি ; শাশুড়ি - বউ এর চক্র অভিযানে।


( পশ্চিমবঙ্গে সেই বৃদ্ধ দিদিমার চরণে দিলাম এই লেখাটি,,,যাঁকে ফুল তোলার অপরাধে তার পুত্রবধু নির্মম ভাবে প্রহার করেছে।ঘটনা এটি একটি নয় সমাজে এ রকম ঘটনা অহরহ।মাত্র কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ হয় বাকী সব থাকে চার দেয়ালের ভিতর।)