রাত টা পোহালেই,,,তেলের পুড়া গন্ধ
থাকবে না আর পিঠার গায়ে,,,
গরম গরম নরম নরম মুড়ির মোয়া গুলিও
হবে বেশ শক্ত,,
তিলের নাড়ু টা একেবারে তো
শুকনো মাটির মতই হবে,,,
আলুর পিঠা,পাটি সাপটা,মালফা,,পাপড়,,,
সব সবগুলি সুয়াইয়ের নাড়ুর মত
এক্কেবারে পাক্কা শক্ত হবে,,,,
সারা বাড়ি ভরে পিঠার গন্ধে
মৌ মৌ করে বেড়াবে সবার মন,,,,
আরগে আল্পনায়।


কিন্তু এই যে এক অভাগী নারী,,,
মাতৃজন্মের পর থেকেই প্রতি এমনদিনে
একটি পিঠা লুকিয়ে রাখে কোন এক কৌটায়,,,
তার পিঠাও কি শক্ত হবে?হবে ইট পাথর,,,?
কভু কি তার পিঠা কৌটার বাইর হয়ে
দেখতে পারবে,,,
রাতভর গরম তেলের উপর শুধু
চালের গুড়ির পিঠা হয় নি,,,
হয় এক নারীর চোখের জলেরও ক্রন্দন।
কভু কি দেখতে পারবে,,,
নিমন্ত্রন্য মেহমানদের মাঝেও
বার বার খোঁজে বেড়ায় সে নারী
একটি মুখ,,,একটি বচন,,,!!


যে বচনে সে নিজে নিজেই বলে,,,
নিজে নিজেই শুনে,,,


--না না মা, আমি পিঠা খাই না,,,,
এত পিঠা দিও না,,
আমি খাব না,,,।
---না বাবা তুই খা,,কত শখ করে মা বানিয়েছে না,,,?
একটা পিঠা খা বাবা,,এই নে নে,,সুজির লুচিটা খেয়ে নে,,ও বাবা তাও খাবি না,,,!!তাহলে সন্দেশ,,নারিকেলের সন্দেশরে কর্পুর দিয়ে বানিয়েছি,,,,ওই যে ছোটকালে লুকিয়ে রেখে দিয়েছিলে পালঙের নিচে,,,তুই খাবি বলে, ঠিক সেই নারিকেলটা দিয়েই বানিয়েছি,,,,তুই না সিঙ্গারা পছন্দ করিস,,এই দেখ,,তোর জন্যে সিঙ্গারাও বানিয়েছি,,ঝাল দিয়েছি ঘরের কোনের গাছের মরিচ দিয়ে,,খা বাবা,,,খা।আমি মুখে তুলে দিচ্ছি,,, খা নারে,,বাবা,,,?
তুই খেলেইত এ রাত পোহাবে,,,
পিঠা নাড়ুর গন্ধে কাল হবে সংক্রান্তি,,
উঠান ভরে সংক্রান্তি,,,,
বিন্যি ধানের খই এনে দেই? বোর ধানের ছিড়া?
তবু এ রাতটি পোহা,,বাবা এ রাতটি পোহা।


ঠিক এমন সময়ে
পাশের বাড়ির বালক,,, নয়ন
মায়ের কোলে বসেই  উঠল বলে,,,


'খোকন খোকন ডাক পারি
খোকন দিল দেশ ছাড়ি
আয়রে খোকন ঘরে আয়
দুধমাখা ভাত কাকে খায়?
তা শুনেই,,,ঝি ঝি পোকার শব্দগুলিও গেল বদলে
বুলেটের ভাষায় সরগরম চারদিকে,,,
সকল মায়ের মন প্রলয় হুংকারে,,
ওরে দশভুজার দশ হাতে অস্ত্রের বদলে
বসল পিঠা,,,,
গগন ভেদে উঠল বলে,,,
এ সময়,,এ স্থানযুদ্ধ,শুধু নয়রে দমন অসুরে
সন্তান যেন কভু দেশ হতে যায় নারে দূরে।


( অনেক আঞ্চলিক শব্দ আছে হবিগঞ্জের)