মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করি আমি ঠিক কার মতো একা?
দোকানে অবিক্রীত নষ্ট একটি বাল্বের মতো
খাটের কোনায় পড়ে থাকা কালি ফুড়ানো কলমের মতো
নাকি যে নদীর জলে ফুটেনি গোলাপ তার মতো?
আমি কার মতো একা, কার মতো?
বিধবা কলিমন খাতুনের বিদীর্ণ বুকের মতো
নাকি কোনো এক এতিমের ফুঁপানো কান্নার মতো
নাকি একটি পুরাতন পরিত্যক্ত পলিথিনের মতো
নাকি কোনো এক নীল নক্ষত্রের রাতের মতো?
প্রতিটি ঋতুতে জলের গভীরে বাড়ে ক্রমাগত অবহেলা
নখের ভেতরে আশা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি চৌরাস্তায়
স্নায়ুর গভীরে প্রেরিত ধ্বনি নিয়ে আসে অজস্র প্রতিধ্বনি
আমি ঠিক কার মতো একা এই শহরে, এই পৃথিবীতে?
যারা আত্মহত্যা করেছে বেদনার রাতে তাদের মতো
যারা পঙ্গু হয়ে শুয়ে আছে খাটে তাদের মতো
ঢাকার চিড়িয়াখানায় বন্দি আফ্রিকার সিংহের মতো
নাকি ঝরে পড়া সংখ্যাহীন বসন্তের পাতার মতো
নাকি মাটির গভীরে কোনো এক পুরোনো বোমার মতো
নাকি মহাসমুদ্রে ওড়ে বেড়ানো আলবাট্রস পাখির মতো?
বুকের পাঁজর ভেঙে বেড়িয়ে আসে কষ্টের লাভা
দীর্ঘ বিবর্তন শেষে পরিণত হয়েছি সুতীব্র যন্ত্রণায়
পরিচিত সব সোর্সে খুঁজে বেড়াই আমি ঠিক কার মতো একা?
পুড়ে যাওয়া কোনো এক প্রাচীন পুঁথির মতো
ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোনো এক জনপদের মতো
জেলের ভেতরে কোনো এক ফাঁসির আসামির মতো
নাকি সুখের সমুদ্রে ভেসে থাকা কষ্টের গ্লেসিয়ারের মতো
নাকি কোনো এক সুখ-শিকারী মানুষের ব্যর্থতার মতো?