অর্জিতা, বাহিরে তুমুল বৃষ্টি
তোমাকে মনে পড়ছে
অর্জিতা, তোমাকে ভীষণ মনে পড়ছে।
ভেতরে আমার সীমাহীন রোদন
কষ্টের রংতুলিতে আঁকছি ত্রিভুজ
ভুলে গিয়েছো কী যৌথ আনন্দের কথা
এক যুগ আগের সেই দিনটির কথা।
কীভাবে মানুষ ভুলে যায় শোক,
কীভাবে বৃক্ষ বেঁচে থাকে শীতের শেষরাতে,
কীভাবে আমি বেঁচে আছি তোমাকে ছাড়া,
কীভাবে স্রোত ভাসিয়ে নেয় জলকে?
সেদিনও তুমুল বৃষ্টি ছিলো
অর্জিতা, তখন তুমি কিশোরী ছিলো
তখন তুমি খুব অবুঝ ছিলে
আইসক্রিম না পেলে ক্লাসে যেতে না।
তোমার নাকে তখন আবেগ ছিলো
তোমার নখে ছিলো ভীষণ অভিমান
বুকে তখন নদী
তুমি একটি নদী ছিলে
নৌকা ছিলো।
প্রথম চুম্বনে তুমি ভয় পেয়েছিলো
দ্বিতীয় চুম্বনে তুমি ভয় জয় করেছিলে
তৃতীয় চুম্বনে তুমি নিজেকে চিনেছিলে
অর্জিতা, তোমাকে ভীষণ মনে পড়ে
তোমার হাতটি ছুঁতে ইচ্ছে করে।
শাদা রং তোমার শরীরে ছিলো
তুমি শাদা রং ভালোবাসতে
তুমি আমাকে তখন ভালোবাসতে
হাসতে হাসতে
হাঁটতে হাঁটতে
তখন আমার সবকিছু ভালো লাগতো
তখন তোমার চুলে আমার কবিতা ছিলো
তখন তোমার গালে আমার সুখ ছিলো
তখন তোমার চোখে আমার সাঁতার ছিলো।
আমি রাত জেগে নক্ষত্র দেখতাম
কারণ তুমি ছিলে তখন
আমি প্রতিটি দুপুরে তোমাকে ভাবতাম
কারণ তুমি ছিলে তখন
তোমার অসুখ হলে আমার খুব দুশ্চিন্তা হতো
কারণ তখন তুমি ছিলে
আমার শার্টে পাঞ্জাবিতে
ছিলে আমার মানিব্যাগে
ছিলে আমার হতাশায়
ছিলে আমার আনন্দে
ছিলে আমার শিরায়
ছিলে আমার গল্পে।
তুমি, অর্জিতা আমার সুখের উৎস ছিলে
তুমি আমার সাধনা ছিলে
ধ্যান ছিলে
পাহাড় ছিলে
কী ছিলে না বলো তুমি?
অর্জিতা, তুমি কেনো চলে গেলে?
পাখি কেনো চলে যায়,
পরিচিত দৃশ্য কেনো বদলে যায়,
জীবন কোনো এতো কাঁদায়,
সময় কেনো এত জ্বালায়,
কপাল কেনো হয় এত অসহায়?
অর্জিতা, তুমি এখন কেমন আছো?
এই বর্ষা তোমার কেমন কাটছে,
গত বর্ষায় তুমি কী করেছিলে,
এই শীতে তুমি কোথায় যাবে,
এই বসন্তে তুমি কোন শাড়ি পড়বে,
দুপুরে তুমি কোন সিনেমাটা দেখবে,
ছাতে কী আজ হাঁটতে যাবে?
একদিন তুমি ছিলে আমার সকালে দুপুরে রাতে
আজ আমার আঙুল থেকে অনেক দূরে তোমার আঙুল
চোখ থেকে চোখের
স্মৃতি থেকে স্মৃতির
বাস্তবতা থেকে বাস্তবতার
তুমি আজ অনেকদূরে
তবুও অর্জিতা, তোমাকে ভীষণ মনে পড়ে
ভীষণ মনে পড়ে।