কেউ কেউ নিয়ে আসে কলা পাউরুটি আপেল কমলা
কেউ কেউ নিয়ে আসে ভাত মাছ মাংসের তরকারি  
কেউ কেউ নিয়ে আসে ট্যাবলেট ইনজেকশন কতকিছু!
অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে শুয়ে শুয়ে আমি রাত কাটাই
জেগে থাকি সারারাত একা একা খুব একা
তাকিয়ে থাকি দেয়ালের টিকটিকি মাকড়সার দিকে
জানি কেউ নেই তবুও করুণ দুচোখ থাকে প্রতীক্ষায়।
ছেলে বসে আছে তার বৃদ্ধ পিতার পাশে
স্ত্রী এগিয়ে দিচ্ছে এক কোয়া কমলা, ট্যাবলেট
চারিদিকে গোঙানি আর চিল্লানোর শব্দ ভেসে আসে
তবুও তাদের ভয়ার্ত দুচোখে দেখি সুখের ফানুস;
কেউ কেউ যত্ন আর সেবায় দ্রুত সেড়ে ওঠে
বাড়ি ফিরে যায়, ফিরে যায় পরিচিতজনের ছায়ায়।
এ অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে আমার কোনো এটেনডেন্ট নেই
তাই শুয়ে থাকি নিরুপায়
খোঁজ নেয়ার মতো কেউ নেই, কেউ নেই
সেবা-যত্ন করার মতো কেউ নেই,
কেউ নেই যে শুনেই কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসবে
অভয় দিয়ে বলবে এ ওষুধটি খাও, দ্রুত সেড়ে যাবে,
ওটিতে যাবার আগে কেউ নিষ্পলক চেয়ে রবে
ফের আলিঙ্গনের তুমুল প্রত্যাশায়।
আমার জীবন এক পরিব্রাজকের, এক আগন্তুকের
যার কপালে হাত রাখার মতো কেউ নেই
যাকে বুকে টেনে নেয়ার মতো কোনো বুক নেই
যার ফিরে যাওয়ার মতো নির্দিষ্ট নারী কিংবা ঘর নেই।