পুরনো কিছু বইয়ের পাশে একটি ভাঙা চেয়ার
নিস্পৃহ জীবনের বেদনায় এখনও জেগে থাকে,
রৌদ্রে ধীরে ধীরে ভরে গিয়েছে তার সমস্ত চুল
কলমের পাশে শুয়ে রয়েছে এক ঝাঁক অন্ধকার।
এখনও তবুও কেনো হই জলের জন্য ব্যাকুল
কেনো ছুটে যাই যে জীবন গিয়েছে চলে তার খোঁজে?  


গভীর রেখা মুছে এখানে তবুও আসে হলুদ মৌমাছিরা
নাব্যতা নেই জেনেও মানুষ নদী বলেই ডাকে
ছিলো তো একদিন—কতকিছুই ছিলো আঙুলে আঙুলে
স্বাধ ফুরালে জীবনের জাহাজও হারায় তার দিক!
পরিত্যক্ত লোহার বুকে জলের আঘাতে আঘাতে
ফুরিয়ে গিয়েছে আমার কোমলতম ঘ্রাণ-প্রেম-দৃষ্টি।


আমাদের রাতের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে অমল সরীসৃপ
ডাইনিং টেবিল থেকে কিছু সুস্বাদু আপেল
আমাকে বিদায় জানিয়ে চলে যাচ্ছে সূর্যাস্তের সাথে...
তুমি ভুলে গেলেও আমি ভুলবো না এই ভুল পথে
যেখানে ফেলেছিলাম নোঙর একদিন, তারপর—
আমার শরীরেও ছিলো সময়ে অসময়ে ব্যস্ততার উৎসব
তবুও ফুলেরও মৃত্যু হতে হয় ফলের আগমনে।


তোমার দুচোখ অন্ধকারে কাকে খোঁজে বেড়ায়?
শার্টের ভেতর থেকে রুপোলি দীর্ঘশ্বাসরা যায় ওড়ে
প্রতনু দুপুরের কাছে আমার নেই আর অভিযোগ—
যে কলম গিয়েছে ফুরিয়ে সে প্রেম দিয়েছো ফিরিয়ে
পাশে মৃত সব স্মৃতি নগ্ন নেচে যায়, এই তো জীবন!
তবুও কেনো এই নোঙর একই জনপদে বারবার
ফিরে যাও ফিরে যাও ভাঙা বুক অরণ্যের কাছে।


পরিচিত পলিথিন জন্ম সহোদরের মতো আজও ডাকে
রক্তের চিহ্নে লেগে আছে ক্লান্তি, এই আর্তির শেষ নেই—
এইদিকে ফুটপাতে তুমি তুমি করে নামে হঠাৎ বৃষ্টি
ওইদিকে গ্রামের মেঠো পথে হাঁটছে আমার হৃদয়
দুটো বিপরীত রঙের মাঝে বয়ে চলে যে দ্বিধা
হাঁসের জীবন পেলে ভুলে যেতাম এইসব ব্যথা।


তবুও ব্যথা তবুও ব্যথা আমৃত্যু নিয়তি যার ঝুলে আছে
ব্রহ্মাণ্ডের পাথর বুকে নিয়ে এসেছি পুণ্য জলের কাছে
হায় অতীত তবুও অতীত এইসব একদিন ঝরে গেলে
এই পথে এখনও স্মৃতি শুয়ে আছে, আমার তারুণ্য
অনেক পথ সম্মুখে, তবুও কেনো এই ভুল এই ক্ষরণ
এই স্মরণ একই মরণ বুঝি তবুও ভালোবাসো—
জলের দৃশ্যে দেখো আজ অনেক মৃত মাছ ভেসেছে!