কালবৈশাখী
- মুহাম্মদ রুহুল আমীন (মরমি কবি)


আকাশ গেল মেঘে ঢেকে
চারিদিকে থেকে থেকে
মেঘে মেঘে উঠছে ডেকে
ঝড় উঠেছে ভীষণ হেকে
বাড়ি ঘর-দোর উঠছে ঝেঁকে।


মড়মড় করে ভাঙছে যে ডাল
উড়িয়ে নিলো ঘরের চাল
ডাকছে মাঠে ছাগলের পাল
এই দুপুরে ছেড়ে সব হাল
কােথায় গেলো গাঁয়ের রাখাল?


চারদিকে উড়ছে ধূলো
গড়াগড়ি যাচ্ছে কুলো
ঝরছে আমের গুটি গুলো
ফেটে যাচ্ছে শিমুল তুলো
ছিড়ে পড়ছে যেটা ফুলো।


মানুষ শূন্য বাজার ও ঘাট
বন্ধ হলো খেঁয়াপাড় ঘাট
ঠান্ডা হলাে উষ্ণতার মাঠ
ভরলাে কাঁদায় গাঁয়েরই বাট
এলাে বুঝি গ্রীষ্মেরই ছাট্!


ওরে আছিস কেবা কোথায়
শিগগীর তোরা বাড়িতে আয়
রাত যে হলাে ঐ মেঘলায়
কোথাও নেই একটুও ঠাঁই
তোদের কি নেই হারানোর ভয়?


বৃষ্টি পড়ে ফুটাে ফুটাে
ভিজলাে বুঝি জালান-কুটাে
কাপড়-চোপড় ঘরে উঠো
তাড়াতাড়ি উপড়িয়ে খুটাে
গােয়ালে আন্ গরু দুটাে।


এদিকে তােরা কর খেয়াল
ভিজে গেলো কাঁচা দেয়াল
ঢাক্ নৈলে হবে বেহাল
তােরা কেউ করিসনে হেয়াল
বৃষ্টি মাথায় ভিজছে শেয়াল।


ভিজলাে আজি মুরগী ছানা
ঝড়ে ভাঙলাে পাখির ডানা
উড়লাে কোথা নেই তা জানা
নদীতে জাগলাে কচুরিপানা
হেঁসে হলাে সব আটখানা।


শিশুরা সব থাকো ঘরে
যেও না কেউ ঘরের বাইরে
উড়ে যাবে ভয়ানক ঝড়ে
বাইরে গেলে ধরবে জ্বরে
অনেক কষ্ট হবে পরে!


ওই শিল পড়ছে মুঠি মুঠি
শিশুরা সব নিচ্ছে খুটি
করছে সবাই ছুটা-ছুটি
শিল পড়ছে যে গুটি গুড়ি
হাসছে সবাই কুটি কুটি।


কেউ কেউ খাচ্ছে ঠান্ডা ওই শিল
কেউ হাসছে বড্ড যে খিল খিল
ডুবল নদী-নালা খাল-বিল
ঘরের দােরে এঁটেছে খিল
মানুষ গুলো করছে কিলবিল।


পান্থপাড়া, শার্শা, যশোর।
০৪.১১.১৯৯৬