এখন কবিতা এমন হওয়া চাই
যে কবিতা পড়ে বোঝা বড় দায়!
অন্যের পাতায় যখন ঢুকে গেছি আমি
কিছু না বুঝলেও, বলতে হবে তাে দামী!


আমার কবিতা পড়ে পাঠকের কপাল ঘামে
দ্বিধা-দ্বন্দে পড়ে পাঠকের দুচােখে অশ্রু নামে!
আমার কবিতায় দিল্লীকা লাড্ডু পাইবে
পড়িলেও পস্তাইবে, না পড়িলেও পস্তাইবে।


আমি মারি বক আর পড়ে পেঁচা
পাঠক না বুঝলে দিই তারে ছেঁচা!
আমি এক স্বঘোষিত মস্ত বড় কবি
যত সব উদ্ভট কাহিনীর আঁকি ছবি।


অন্যের কবিতা পড়ে করি নানা বিদ্রুপ
আমার কথায় অনেকে হয়ে যায় নিশ্চুপ।
দেশে যত কবি আছে কারো করি না গণ্য
আমি খাঁচার ময়না পাখি আর সবাই বন্য।


আমার কবিতায় নেই হাস্যরস
তবুও পাঠকের করতে চাই বশ।
আমার কবিতায় প্রেম-বিরহের নেই চিহ্ন
তবু বলি এ কবিতা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন।


আমার কবিতায় নেই দেশাত্মবােধের ছােঁয়া
বোঝেনা কেউ অর্থ, যেন কুয়াশায় ধোয়া।
আমার কবিতায় ভাঙে না জুলুমের কালো হাত
তার ভাষায় কাটেনা নির্যাতিতের তিমির রাত।


আমার কবিতায় নেই ধর্মানুভূতি
তবুও শুধু গেয়ে বেড়াই তার স্তুতি।
আমার কবিতায় নেই মানবতার দাবি
তবুও নিজকে আমি বড় কবি ভাবি!


আমার কবিতায় নেই যুদ্ধের বাজনা
চোখে মুখে রং মেখে দেখাই কত সাজনা।
আমার কবিতার ভাষায় নেই শালীনতা
পাঠক পড়ে পায় মনে ভীষণ ব্যথা!


আমি তাে বুঝিনা কারে বলে মিত্রাক্ষর
আমার কবিতা পড়লে মাথায় দেয় চক্কর!
আমি তো বুঝি না কাব্যিকতার শৈলী
মনেরে বলি তুই শুধু পীছে পড়ে রইলি?


আমার কবিতায় নেই দাড়ি কমা ছন্দ
বলি এসব সেকেলে, মনে বাড়ে দন্দ!
রূপক, অনু, হাইকু, বাইকু নাকি অন্য
কিছুই বােঝেনা পাঠক, তবু বলি অনন্য!


অনুপ্রাস, ছেকানুপ্রাস, সংজ্ঞা ও শ্রেণী
এসবের ধারিনা ধার, আমি খুব ব্রেনী
জানিও না শব্দালংকার, বাক্যালংকার
তবুও ভাবি মোর জুড়ি মেলা খুব ভার!


আমি হলাম ফুটপাতের নগন্য হকার
পূর্ণ করব জীবনে আছে যত শখ আর।
হকারের হাতে মানাই চূড়ি, ফিতা, মলম
কবির হাতেই মানাই কাগজ আর কলম।


০৮.০৮.২০১৪