নারকেলের ওই লম্বা কেশে হঠাৎ দেখি জােসনা রাতে
কে যেন তেল মাখিয়ে দিয়েছে নরম দুটি হাতে।
কাঠিগুলোর পিঠ চক্ চক্ করে, যেন মুক্তা হেম
ডাটার 'পর দােয়েল দম্পতি বিলাইছে দােঁহারে প্রেম।
পাখসাটে উঠিছে কাঁপি নারকেলের জােয়ান পাতা
বুড়ো নারকেল গুলো একে অপরের বুকে গুজেছে মাথা।
টুপ্ টাপ্ করে ঝরে পড়ছে, গাদা গাদা সাদা ফুল
যেন মনে হয় ছিড়ে পড়ল নব বধুর কানের দুল।
মধুকরেরা পালাক্রমে আসিতেছে তাদের বাড়ি
মধু নিয়ে তারা সবাই করিছেতে কাড়াকাড়ি।
মৃদু হাওয়া লাগিছে বুকে, হৃদয়ে বাঁধিছে সুর
আউশ ধানের মাঠ পাকিছে গন্ধ আসে ভুর ভুর।
ঘরের পীছে হলদি বাগানে বড় তাল গাছটিতে
দুষ্টু বাদুড়েরা একটানা চেচাইছে জোরে জােরে।
সারাটাদিন ভুত খাটুনির পর রাতে বিছানাতে
প্রাণভরে ভরে ঘুমাইব তা হয় না কােন মতে।
সহসা বাদুড়ের ঘর থেকে পাকা তাল পড়িছে খসি
ভয়ে বাদুড়ের দৌড় দেখে চাঁদের লাগিছে হাসি।
মাঠের 'পরে কাঁঠাল বাগানে ডাকিয়া উঠিছে ফেউ
ডাক শুনে পাড়ার কুকুরগুলো করিতেছে ঘেউ ঘেউ।
কুড়ের কান্দায় পাটকাঠির গল্লা রয়েছে লাইন দিয়ে
গুড় মুড় করে ফেলে দেয় খেক শেলেরা সেথা গিয়ে।
সকাল বেলা পাটকাঠি ওয়ালা এসে দাঁড়িয়ে কয়
এসব গুলো কারা ফেলেছে জেন-ভুতে মনে হয়!
এমনই ঘটনা নিত্য চলে আমার পল্লী গাঁয়
ভালো লাগে গ্রামখানি, ভালো লাগে খুব ভাই!
রচনা : ১৯.১১.১৯৯৬ খ্রিঃ
কাব্যগ্রন্থ : 'প্রথম বসন্তে ফোটা ফুল'
প্রকাশ : ডিসেম্বর-২০০৭ খ্রিঃ