শিল্পী একটি ছবি আঁকছেন
জমিনের রং চাপানোর সময়
কিছু নগণ্য ব্যক্তি এসে দাঁড়ালো,
তারা শিল্পীকে বলল "তুই রঙের কাজ করিস?
কবে শিখলি? শিল্পী মাথা নাড়িয়ে সায় দিলেন।
কিছুক্ষণ মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে চলে গেল।


জমিনের রং শুকিয়ে গেল, এবার মূল চিত্র আঁকা শুরু-
আকাশ, নদীর রং চাপানো হলো
দূরের গাছ, উদিত সূর্য, মেঘ, পাখি, দূরের গাঁ
ডিপ-লাইট শেড; পূর্ণাঙ্গ সুখী পরিবারের চিত্র।


বাড়ির সামনে নদী, নৌকা চলছে
নৌকার মাঝে মুখ ঢেকে সরলা সুন্দরী হাসছে,
নদী তীরে জলজ উদ্ভিদ, কাশবন, মেঠোপথ।
বাড়ির পেছনে ঝোঁপ, কলাগাছ,
অদূরে কৃষাণ সোনা ফলাচ্ছে,
মানুষ, পশু-পাখির গায়ের রং চাপানো হলো।


শিল্পী মধ্যাহ্ন ভোজে গেলেন
একদল গণ্যমান্য ব্যক্তির আগমণ
"বাহ! কি চমৎকার ছবি, যেন মনে হচ্ছে একেবারে বাস্তব
কিন্তু মানুষের মাথা, চোখ, হাত-মুখ কৈ?"
কিছু সময় নানা রকম অভিমত প্রকাশ করে চলে গেল।


কিছুক্ষণ বাদে শিল্পী এলেন, বাকি কাজ শেষ হল।
কোনো এক সন্ধ্যায় ছবিটি প্রদর্শনের আয়োজন করা হল।
আমন্ত্রিত অতিথি, প্রধান অতিথি, মিডিয়া এলো
সবাই ছবিটি দেখে অভিভুত হলেন!
তিনি বিখ্যাত শিল্পী খেতাব পেলেন।


শিল্পী এঁদেরকে বুঝাতে পারলেন না-তিনি সকালে কেমন ছিলেন
সকালে যারা এসেছিল তারা শিল্পীকে রং মিস্ত্রী বলেছিল
মধ্যাহ্নে দর্শকদের সাথে শিল্পীর সাক্ষাত মিলল না,
তিনি সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা একত্রিত করতে পারলেন না
শুধু ছবিটা-ই শিল্পীর সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা বোঝে!


রচনা : ১৫.১০.২০১৪ খ্রিঃ