কবিতা এক লিখলাম, "কালো কাপড়ের ঝাঁঝ,
কবি গুরু'র উদাহরণ দিলো, পাঠক প'ড়ে আজ।
আনন্দের স্রোতে আমি ভাসিয়ে দিয়ে মন-
কবি হওয়ার স্বপ্ন দেখার করি আস্ফালন!
আমি গাঁয়ের ছেলে, মোর কাদা-জলে বসবাস,
কবিতা লিখে দিলাম তাতে শিশিরধোয়া ঘাস।


বনের মায়াবী লতা-পাতা দিলাম একটু এনে,
পল্লী কবি'র মতো আমায় নিলো সবাই মেনে!
এবার দিলাম শেওলা-ঘাসফুল মাছরাঙাদের কথা
পাঠ ক'রে বলল সবে এযে রূপসীবাংলার কবিতা!
এবার দিলাম ক্ষুধিতের দাবি আর দ্রোহের আগুন,
বললো "সুকান্ত ভট্টাচার্য'র মতো লেখায় আছে গুণ।"


আরও একদিন দিলাম একটু  ছন্দে-বন্দে তত্ব,
বললো সবাই, "বাহ বা! এযে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত!"
"গড়াগড়ি" লিখলাম যেই সবার বড্ড হাসি পেলো!
বললো সবাই "বঙ্গে কী আবার সুকুমার রায় এলো?"
শোষকের প্রাচীর ভাংতে ধমনীতে রক্ত উঠলো দুলে,
বললো পাঠক "সে কী আবার ফিরলো বাবরি চুলে?


আজও জানি না, নিজের লেখা ভালো না কী মন্দ,
নিরবে শুধু লিখেই যাই, কাটে না তো মনের দ্বন্ধ!
মন্তব্যগুলো সত্যি না আবেগ, ভাবিও না একচুল,
প্রশংসা নয়, কৃতিত্ব-যদি কেউ ধরিয়ে দেয় ভুল।
কখনও ভাবি এসব আমায়, বলার  জন্যই বলা,
কী-ই বা এমন আমার ভেতর আছে কাব্যকলা?


লেখার জন্যই লিখি শুধু, কবি হতে  তো নয়,
বুঝাতে কিছু আত্মকথা, জানাতে জগৎ বিচিত্রময়!
যদিও আমি বাগিচায় ফোটা পারিজাত ফুল নই,
নগণ্য, বৃথা শুধু আলো-বাতাস দখল ক'রে রই।
আমাতে দেখো কবিদের ছবি, আমি আসলে মেকি!
জোড়াতালি  দিয়ে  লিখি  কবিতা,  অকর্মার ঢেঁকি!


রচনাস্থান : শার্শা, যশোর।
রচনাকাল : ২০.০৯.২০১৪ খ্রিঃ