নামাজের সময় নামাজ পড়ে, করেনা মোটেও হেলা,
মনের আনন্দে ঠাওর পায় না, কখন কাটে বেলা।
দু'এক জন বলে "কিছু জানি নে কি করব বল?"


যেখানে ওয়াক্ত হয়, সেখানে রেখে কাজ,
তাড়াতাড়ি অজু করে পড়ে নেয় নামাজ।
হোক না বৃষ্টি, সেথা থাক্ না কাদা-জল।


সারা দেশের মাঠ ওদের সেজদার স্থান,
মাঠে মাঠে গায় ওরা আল্লাহ পাকের গান।
শঙ্কায় থাকে! কৃতকর্মের কেমন হবে ফল!


সময়ের অভাবে কখনও নামাজ হয় কাজা,
মনে মনে অনুতপ্ত হয়, এর কী কঠিন সাজা?
দুঃখ-হতাশা, ক্ষোভে চোখদুটি ক'রে ছল্ ছল্ ।


রমজান মাসে ইফতারির সময় আগত হলে,
বাড়ি ফেরা যায় না অবশিষ্ট কাজ ফেলে।
কাজ সমাপ্ত করে আসতে শরীর কাঁপে টল্ মল্ ।


সারাদিন ভূত খাটুনির পর স্বস্থির সাথে,
গোসল সেরে ইফতার করা যায় না কোনো মতে ৷
নদী সাঁতরিয়ে বাড়ি এলেই হয়ে যায় গোসল।


এশার আজানের সময় ইফতার করে যায় হাটে,
টাকা আদায় করে ভাগ করে হাইস্কুলের মাঠে।
সদয় কিনে বাড়ি ফেরে গভীর রাত্রিকাল।


বাবা যখন কাজে যায় বাচ্চারা ঘুমিয়ে থাকে,
রাতে ঘুমানোর আগেও পায় না তারা বাবাকে।
ঘুম থেকে উঠে মা'কে বলে "মা আব্বা কে বল!"


কারো স্ত্রী-সন্তানেরা ভাত নিয়ে যায় মাঠে,
স্ত্রী-সন্তানেরাও ভুতের মত দিন-রাত খাটে।
বাচ্চারা হারায়, স্কুল, শৈশব, জীবনটা নিষ্ফল!


দেশকে ওরা মুক্ত রাখে, ওরা মস্তবীর,
দেশের সেবায় ওরা সদা থাকে অধীর।
দিবা-রাত ফসল ফলায়, ওরা মালির দল।


শীতের মাসে ভোর-বিহানে ধান রোপনের সময়,
হাত-পাগুলো বরফের মত জমে কঠিন হয়!
তবু তারা কাজ রেখে খোঁজে না অনল।


নানা বয়সী মানুষ আছে ওদের মজুর দলে,
যুব-বৃদ্ধ-কিশোর, অর্ধশিক্ষিত অশিক্ষিত সকলে।
কারো ফুলের মত কৈশোর আগুনে পুড়ে লাল!


একবৃদ্ধ পিতার ছেলে নাই, একপাল আছে মেয়ে,
খোরপোশের জন্য বৃদ্ধ বয়সে খাটতে হয় মাঠে যেয়ে।
একদা স্বচ্ছল ছিলেন, সংসারের ভারে হয়েছে দূর্বল।


ওরা কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীতে শ্রম দেয়,
অভাবের তাড়নায় গমের দামে সোনা করে বিক্রয়!
করবে না কেনো ওরা যে হতভাগার দল!