বন্ধুর মাথায় মাটির ঝুড়ি, দেখতে কেমন মানায়?
নিজের তো নয়, বইতেন, পরের পুকুর-খানায়!
বন্ধুর মনে দিবানিশি, বাজে বেদনার সানাই!
দে'খে সবাই মজুর, তিনি কে তা নাই তো জানাই!


বোশেখের রোদে কাটেন ধান, তার ওঠে নাভিশ্বাস!
দেখা দূরে থাক, শুনেও তো হবে না কারও বিশ্বাস!
তার দেহটি খাটত সদা দশটি মুখের জন্য,
সে মুখে আজ বোল ফুটেছে, বলে তাকে জঘণ্য!


দুপুর রোদে ধানের বোঝা, মাথায় হত সওয়ার!
বন্ধুর মনে বইত সদা, কাব্যনদীর জোয়ার ৷
দেখা যেমন এমন কথা, হয়নি কভু শোনাই,
উপরে হাস্যবদন, গভীর ব্যথা মনের কোণায়!


শুইতেন বন্ধু রান্নাঘরে, খাটের নিচে ছাগল,
নাদি চূণা চেচামেচিতে ক'রে দিত পাগল!
খাটেন বন্ধু, ভাবেন বন্ধু, ভোর হতে সাঁঝঘোর,
গায়ের চেয়ে বন্ধুর মনে অনেক বেশি জোর!


দেখা নয়, ভাবুকদের ভাবতেও লাগবে অবাক,
কী নিদারুন দৃশ্য তার গায়ে নোংরা ছেড়া পোশাক!
দেখতে কেমন লাগে বন্ধুর, মাথায় ভাঙা টোকা,
ভেতরটা তার অনেক গভীর, বাহির দেখায় বোকা!


বন্ধুর হাতে থাকবে কলম, সেথা কোদাল কাস্তে,
বাবা বলেন পরম্পরার কাজ, শিখো আস্তে আস্তে!
সংসার তার অভাবগ্রস্থ, লেখাপড়া দিয়ে বাদ,
মজুর দলে লেগে গেলেন, জিন্দেগী বরবাদ!


মাঠের কাজ, কবিতা লেখা, এরপরও বন্ধু রাতে,
শেখেন লেখা নামফলক, ছবিও আঁকেন তাতে!
শীত গীষ্ম বজ্র বৃষ্টিতেও নেই বন্ধুর দুখ,
সেই হাসিতে রাখত ডেকে, দশটি ভুখা মুখ!


চাষার ছেলে ছাষা হবে, নেই এমন তার যুক্তি,
বলেন "খোদা মেথর হব, চাই এ থেকে মুক্তি" ৷
খেলাধূলা অবসর সম্মান এসবের পায়নি স্বাদ!
সে বাবার জৈষ্ঠ সন্তান, তার এটাই অপরাধ!


২৪/০৩/২০০৭