আজকাল আমি সূর্যাস্তের সাথে সাথেই নিগূঢ় ঘুম ভানে আচ্ছন্ন হই-
সতেজ- শ্যামল পরিচ্ছন্ন একটি ভোরের এক বুক আশায়।


হঠাৎ ঘুমেই আৎকে উঠি এ্যাটমের শব্দে,
ঝলসে যাওয়া মানব চিৎকারের আর্তনাদে।
জানালা খুলতেই নাকে ভেসে আসে ঝাঁঝালো বিশ্রি বিদঘুটে গন্ধ।
দরজাটা খুলতেই থেমে যাওয়া ঘড়ির অগ্নিদগ্ধ  হাত, চেপে ধরে আমার বাহু।
আমিও পুড়ে যাই মানবতার ক্রন্দনে।
ছুটে চলি একটু সবুজের শতযুগ প্রত্যাশায় -
আবারও, দু'পা আটকে ফেলে রক্তের হোলিখেলা পিচঢালা রাজপথ।
রক্ত প্লাবিত কচি তরুণ দেহের প্রাণ ভিক্ষার আকুলতায় নৃত্যের উল্লাসে গোসল করে বাংলার মানচিত্র গিলা হায়েনা দল।
বুকভাঙা অশ্রুর প্লাবনে আবারও ছুটে চলি নাম না জানা কত অলিগলি-
সেখানেও...সেখানেও নিস্তার নেই লুণ্ঠিত মানবতার....
তরুণীর নির্বাক দৃষ্টিতে আমি হয়ে যাই স্তব্ধ!
ওড়না বাঁধা মুখে তাকিয়ে শুধু নির্বাক দৃষ্টি..
আর চিঁড়ে খাচ্ছে নেড়ি কুকুরের দল তরুণীর ঠোঁট, বুক ও নাভীর তলদেশের নরম মাংসপিণ্ড।
চিৎকারের আর্তনাদ চেপে ধরে আমার দু'কান।
আবারও ছুটছি...
আর খুঁজছি আমার পিতার স্লোগানে মুখরিত সেই মঞ্চ..
খুঁজছি রক্তিম স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা সেই গর্জিত বাণী...
খুঁজছি ৩০লক্ষ শহীদ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে গেয়ে যাওয়া সেই স্বাধীন বাংলার গান।
খুঁজছি সন্তান হারা বাবার, অপেক্ষা কাতর মায়ের, স্বামী হারা স্ত্রীর, ভাই হারা বোনের, সম্ভ্রম হারা নারীত্বের লাল সবুজের সেই মানচিত্রটা।


চারপাশ ক্রমশই গ্রাস করছে আমাকে ,
হাসছে  নৈতিকতা, ন্যায্য অধিকার
শ্রবণ করছি মুক্তিকামী মৃত আত্মার অবুঝ আহ্বান .....
ঘৃণায়, লজ্জায়, আমি নিজ টুঁটিতেই চেপে ধরি,
অশ্রুর আত্মচিৎকারে লুটোপুটি খাই মাটিতে।
রক্ত রঞ্জিত ধুলিকণারাও চেপে ধরে আমার চোখ, নাক, কান, ও হৃৎপিণ্ডের বামপাশ।
আমিও চিৎকার করি
মাগো.... মা...ওমা
আমি তো চোখ থেকেও অন্ধ
কান থেকেও বধির
মুখ থেকেও বোবা
পা থেকেও পুঙ্গ।
এই বাংলার পিতার বীর সেনানীরা-
যদি জেগে উঠে আবারও একবার
মাগো আমিতো আজও,
আজও.. আজও.. সেই অপেক্ষায়.....
রচনাকাল
৬/৭/২০১৯.  কুমিল্লা।