আয়রে খোকন ঘরে আয়
দুধমাখা ভাত কাকে খায়।
ছন্দে ছড়ায় বাঙালী মায়ের মুখে আমরা হামেশাই শুনেছি।
কিন্তু এই বাণী যখন কানের ফোকর থেকে প্রাণের ফোঁকরে ঢুকে?
তখন কাকের ভোজন থেকে সন্তানের মুখান্ন বাঁচাতে না পারার মর্মন্তুদ বিলাপের চিত্র আমাদের নজরবন্দি হয়।


সন্তানের বঞ্চনা ও জননীর বিলাপের
এই চিত্রের সমান্তরালে বাংলাদেশের মানচিত্র
স্থাপন করলে, হাজার হাজার বছর ধরে শাসক এবং শোষক প্রজাতির কাকের কর্কশ আওয়াজে আজো আমাদের শ্রবনযন্ত্র বধির হয়ে যায়।
নিকটতম ইতিহাসে আলোক নিক্ষেপ করে দেখতে পাই,প্রায় দুশো বছর ধরে বাঙালির দুধভাত লুটেপুঠে খেয়েছে বিলিতি একঝাঁক সাদা কাক। তারা উড়ে যাবার আগে জোরের দখল ছেড়ে গেলো পাঞ্জাবি একদল শকুনের হাতে।


শকুন দুধপাত্রের ভাত খায়না। তারা খায় মাংস। বাঙালীর গাত্র মাংসই তাদের ভোজনের বস্তু মনে করে  তারা ঠোকরাতে ঠোকরাতে রক্তাক্ত করে দিল বাংলাদেশের সবুজ সীমানা। প্রাণেরর দায়ে পড়লো নিরস্ত্র বাঙালী। শকুন তাড়াবার তীব্র প্রয়োজনে বাঁশের লাঠি হাতে তুলে নিতে হলো তাঁকে।বিপরীতে মারনাস্ত্রের চালান আমদানী করলো শকুনের দল। বাঁশের লাঠি
যার মোকাবেলায় অপারগ।


বাঙালীকে সাহায্যের হাত পাততে হলো নিকট প্রতিবেশীর কাছে। তারা ফেরালোনা খালি হাতে,মারনাস্ত্রের যোগানের পাশাপাশি তা চালনার শক্তি ও যোগালো তারা।
নিজের এবং মিত্র শক্তির সন্মিলনে শকুনের বংশবধ করে ঘরে ফিরলো বাঙালী।
কিন্তু দুধ ভাতের দফারফা বহু আগেই করে গেছে ইংরেজ সাদাকাক।


মা খেতে দিলেন একতাল পান্তা ভাত।
এবার ঝাঁকেঝাঁকে উড়ে এলো পুঁজিবাদী কাক,সর্বভুক এই কাকের নিরব ও সরব উৎপাত নিবারনের কোন উপায় অবলম্বন যোগার করা ও প্রায় অসম্ভব।
কাকস্য ভোজনের এই নতুন তরিকা বাহিরে নিরীহপন্থার দেখালে ও ভয়ংকর এর ভেতরের রুপ।


অনাহার আর অর্ধাহারে ভুগিয়ে সে তিলে তিলে মারছে বঙ্গসন্তান।
শোকেদুঃখে মুহ্যমান বঙ্গজননীর সয়ে গেছে এই সব।
তিনি এখন আর খোকনকে ঘরে ফিরতে ডাক পারেননা,
উল্টো বলেন যারে খোকন বিদেশ যা
মেনত মজুরি করে খা।