হাতটা দুই হাতে নিয়ে বুকের উপর রেখে
বললো, তুমি খুশি ছিলে তো আমার সাথে?
একসাথে থেকে আমরা খুশি ছিলাম আর
এখনো আমরা ভালো আছি এবং সবসময় থাকবো।
দিতে তো পারিনি সকল কিছু যা চেয়েছিলে
তবুও কি তুমি সুখ খুঁজে নিয়ে নিলে?
বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে বললো তাকে,
সবার কি সব কিছুর আশা মিটতে পারে?
মুখ তুলে জানতে চাইলো, কিন্তু আমি কি
পেরেছি তোমার জীবন রাস্তার যোগ্য সাথী হতে?
বড্ড দুর্বল হাতে তার মাথায় বুলিয়ে দিয়ে
তৃপ্ত আত্মা বললো, হ্যাঁ, তুমি আমার সাথী
যার এক বুক ভালোবাসা আমায় মিশে আছে।
জীবনের রূঢ় রাস্তায় হারিয়ে গিয়ে এই আমি
দিতে পারিনি ভালোবাসার মূল্য, দিয়েছি তোমায় দুঃখ।
তা নয়, এসব কিছু নয়, সেগুলো ক্লান্তি।
দূরে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললো ক্ষীণ কণ্ঠ,
জীবনের চক্র, তাই না? ঘুরছে আর ঘুরছে;
আমরা চলে যাব আবার আসবে নতুন কেউ
আবার একদিন এই বিছানায় কিংবা অন্য কোথাও
শেষ সময়গুলো পার করবে আমাদের সন্তান সকল।
পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে সে বললো,
হ্যাঁ, দেখো তাদের জীবনে কত চাঞ্চল্য, সজীবতা;
ঠিক আমরা যেমন ছিলাম নবীন, স্বপ্নে বিভোর।
স্বপ্ন! বুকভরা কত রঙিন স্বপ্ন ছিল মোদের
আর ছিল কর্মচঞ্চল মন, কোথায় হারিয়ে গেল;
আজ যেন শরীরের মতোই মন স্থবির, ক্লান্ত।
এমনই তো হয়, আমরা স্বপ্ন দেখেছি আর
আমাদের নবীনরা সময়ের অপূর্ণ স্বপ্নগুলো সত্যি করবে।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললো, মনে হয় যেন
এক ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে যেতে হচ্ছে;
সেটা বুঝি সবার কাছে ঋণী হয়ে থাকা,
দশের জন্য ঠিক কতটা করতে পারলাম আমি?
হেসে বললো, এই ঋণ শোধ হবার নয়।
বাইরে থেকে আসা আলোর দিকে তাকিয়ে ভাবে,
জীবনের শুরুটা যাঁর কাছে, শেষটা কেন নয়?
তার কাছে মনে হয় সেটা অলৌকিক আলো;
লৌকিকতার শেষে সবাই তার অপেক্ষায় রয়েছে সেখানে।