আজ এই ভরা আঙ্গিনায় স্থিররৌদ্র মাখা চিত্র প্রদর্শনীর দিনে।
কবি আসবেন বলে মৌন সম্মতি জানিয়েছেন।
শহুরে ব্যস্ততার বিরামচিহ্ন ভেঙ্গে কবি এসে পৌঁছাবেন ঠিক সাড়ে বারোটায়।
উপস্থিত সবাই অপেক্ষা করছেন, কবি আসবেন, লাল ফিতার গলায় পরাবেন মহাকালের ছুরি।
অবশেষে ভাঙ্গলো নীরবতা, সবাই ওঠে দাঁড়ালেন। 
আয়োজক কমিটির লোকজন  দু' তলার সিঁড়ি বেয়ে কবিকে নিয়ে গেলেন গ্যালারীতে।
অসংখ্য বিমূর্ত আলোকচিত্র অপেক্ষা করছে
কবির জন্যে।
আমাদের জানা মতে তখনো কবির হৃদপিন্ড ছিলো স্বাভাবিক ছন্দে। 


কবির অনিন্দ্য পা হেঁটে যাচ্ছেন একেকটি আলোক চিত্রের কূল ঘেষে।
হঠাৎ থমকে গেলো কবির চলার গতি।
অন্ধকারের ছায়া যে আলোকচিত্রের গায়ে লেগে আছে সমস্ত পৃথিবীর মায়া
কবি সেই আলোকচিত্রের সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।
চোখের উপর রাখলেন  চোখ, হৃদয়ের ভীতর রাখলেন হৃদয়।
ইতস্তত হয়ে পড়লেন আলোকচিত্রটি।
কবির চোখ ক্রমেই লাল হয়ে আসছে।
অগোছালো কন্ঠে কবির আকুতি---
তোমার অর্ধমাত্রার ঐ কপালের ভাঙা টিপের গহীনে
আমায় একটু নিরুদ্দেশ হতে দিবে? 
ফ্রেমের ভীতর থেকে সে নারী বললো--
----তোমরা কবি। তোমরা নারীকে নগ্ন করো শব্দের কারসাজিতে।
-----কবিরা নারীকে নয় সৌন্দয্যকে নগ্ন করে।
------আমি কবিদের বিশ্বাস করি না।
কবি বললেনঃ তাহলে তোমার গোপন ঠোঁটের কিনারায় আমায় একটা ঘর বানিয়ে দাও। অথবা পুকুর কেটে দাও তোমার সমুদ্রনীল চোখে।
আমি সাঁতরাবো গ্রীষ্মের তপ্ত রোদের অবহেলায়।
অবহেলার সীমাহীন সাহসে ভ্রু কোঁচকালো সে নারী।
কবি অবোধ বালকের মতো হাঁটুগেরে বসলেন।
বললেন আমাকে এখনি বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করো। 
অথবা আমার আগমনকে প্রশ্নবিদ্ধ করো তোমার ঠোঁটের আলিঙ্গনে।
ফ্রয়েডিয় ফ্রেমের ভিতর থেকে দুটি নিষ্পলক চোখ বলে ওঠে
পাগলামি করো না,কবি।
নারীর ঠোঁটের কম্পন অস্বীকার করে যে সমীকরণ
আমি তাকে পুরুষ বলি।
কবি বলে আমি তোমায় খুন করবো অথবা কলঙ্কিত। 


কবির উদ্ধত বুক এবং হাত ছুটে যাচ্ছে সচ্ছ ফ্রেমের দিকে।
কবিকে সবাই আটকালেন" হায় হায়! মাথা গেলো নাকি কবির?" আয়োজকরা পরলেন বিপাকে।
কবি বলছেনঃ 
যে শহরের রাতের অন্ধকার মেতে ওঠে উন্মুক্ত  যৌনতায়
যে শহর প্রেমিকার ঠোঁটে আমায় চুমু খেতে  দেয়না।
সে শহরে আমাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হউক।