আমার কোন ঘর কিংবা উঠোন ছিল না
যেখানে ভালোবাসার চৌকি কিংবা চৌকাঠ থাকবে।
ছিলনা আহলাদে ডুবে যাওয়া প্রিয় কারো বুক
কর্পূরের গন্ধে ভেসে যায়নি কখনও কোন
আলোছায়া মাখা আবির সন্ধ্যা।


কখনও ধাবমান অশ্বের খুরে রাখেনি কেউ পা
একটা অপস্রিয়মাণ ছায়া নিঃসঙ্গ চেয়ারে
সারা রাত জেগে জাগিয়েছে প্রত্যাশার আগুন
সহস্র কোটি বছর থেকে একমুঠো পোড়া ছাই হাতে
আমি অপেক্ষমান মৃত্যুর জন্যে।


এখানে উন্মত্ত উল্লাসে জাগেনি রাত
চারদিকে কেবল ছিল একটা কালছায়া
আমাকে ভাসায়নি অরণ্যচারী কোন ঢেউ
দম বন্ধ করা উচ্ছ্বাসে জলের চুম্বনে
পানকৌড়ির মত হয়নি সচকিত চাহনী আমার।


আমি দেখেছি মটরশুঁটি বেড়ে উঠা ভালবাসার জমিন
দেখেছি পতঙ্গের ডানা মেলা হরিত বন
দেখেছি বাড়ন্ত ঘাসে নিজেকে সমর্পিত
শিশিরের কোমল আবেদন। আমি দেখেছি
সোনালী শস্যের বুকে শিহরিত আলগোছে বাতাস
দেখেছি জ্যোৎস্নায় ভেসে যাওয়া নদীজল টলমল।


যেদিন ভালবাসা শব্দটা উচ্চারন করতে চেয়েছি
সেদিন আমার বিলুপ্ত নগরীতে তীব্র আর্তনাদে
রক্তের বন্যায় ভেসে গেছে মন মহুয়ার বন
আমার ঘন কালো চুল মুহূর্তে হয়ে গেছে
মরা শিউলি গাছের ডাল।


আমিও চেয়েছিলাম কারো উষ্ণ অঙ্গুলি ছুঁয়ে দিক
আমার চিবুক, আমার নরম দুটি চোখ
রেশমি খোঁপা খুলে ভালবাসার অসহ্য উত্তাপে
ভিজিয়ে দিক আমার শাড়ির আঁচল।
আমিও চেয়েছিলাম নিথর পাথরে ফোটুক
চন্দ্র মল্লিকার গোপন পাপড়ি।