বিত্ত-যশ-প্রতিপত্তি যাহাদের আছে,
ধরা যেন স্বর্গভূমি তাহাদের কাছে ।
লোকজন তাহাদের কথামত চলে,
বিরুদ্ধ প্রকৃতি তাহাদের করতলে ।
চলিতে চলিতে পথে পুষ্পমাল্য জুটে,
সমাদর আপ্যায়নে শত ভৃত্য ছুটে ।
উদগ্রীব পরিবেশে কতো হাতছানি,
তাহাদের কথা যেন ‘পুরাণ কাহিনী ।’
মনোযোগ দিয়া সবে শুনে যায় কথা,
ঢের ভালো লাগে, নাহি কোন ব্যকুলতা ।
কেহ কেহ অনুরাগে দিবে প্রায় প্রাণ,
বলে, খুব ভালবাসি! তুমি ভগবান ।


আর যাহারা দরিদ্র, নিচু-কুল-মান;
পদে পদে তাহাদের জোটে অপমান ।
সালাম-আদাব জুটিবে কী, জুটে হেলা;
মানুষের গালাগাল, অযাচিত খেলা ।
হোক সে প্রতিভাধর, নাহি মূল্যায়ন!
তাঁর জ্ঞান-গরীমা যে গুপ্ত বনায়ন ।
যে বনে থেকেও পাখি, গাহে নাতো গান;
বসন্ত যেথায় ভরায়না দেহপ্রাণ!
জীবন মনে হয় বড়ই অর্থহীন,
বাঁচিবার আশা কভু হয়ে আসে ক্ষীণ!
বিধাতার অভিশাপ আসে যেন নেমে,
জীবন তরঙ্গিণী চলে যে থেমে থেমে ।


এক মাটি দ্বারা গড়া সব নারী-নর,
মানুষের অবহেলা তবু ভয়ঙ্কর ।
একজনে লভে মান সর্বজন হতে,
আরজন নিগৃহীত ধরণীর স্রোতে ।
একফুলে গেঁথে মালা, আর ফুল দলে
ফেলে দেয় এলো স্রোতে তটিনীর জলে ।
এত কাছে ভালোবাসা, তবু কতো দূর;
শোকগীতি বক্ষে বাজে বেদনা বিধুর ,
এসো, আজ সবে মিলে বাঁধি নয়া সুর;
অনুরাগে ভালোবেসে আনি নয়া ভোর ।
থাকিবেনা যেথা কোন ভেদ-ব্যবধান,
এক সুরে গা’বে সবে মিলনের গান ।


১৭ পৌষ ১৪১৯ বঙ্গাব্দ