ভূবনের  ভূবনেশ্বর  শ্রীকৃষ্ণস্ত ভগবান স্বয়ম্।
প্রানীকূলের হে প্রাণনাথ, তোমাকে প্রণাম।।
মথুরার রাজা কামনার কংস, দেবকী তাহার ভগ্নী
অষ্টম সন্তান বধিবে তারে হইল দৈববাণী।
একে একে সাত সন্তান দেবকীর গর্ভে নষ্ট,
অষ্টম সন্তান গর্ভে নিয়ে দিন কাটে অতি কষ্ট।
অধার্মিক অত্যাচারী কংস চরম দুস্কিৃতারী,
অত্যাচারে জর্জরিত, জীবন কষ্টে ভারী।
সর্বভূতে স্বেচ্ছাচার,চরম নারকীয় কান্ড,
হিংস্রতায় নগর হল পূর্ণ লন্ডভন্ড।।                                                                                                            
বিপদশংকুল কংস পাপী
বাসু-দেবকী করাগারে বন্দী,
অষ্টম সন্তান করিবে হত্যা
কংসের মনে মৃত্যু শংকা ।
প্রসব যাতনায় কাতর দেবকী, বাসুদেব অসহায়
ঝড়তুফানে উত্থাল রজনী কারাগার রুদ্ধদ্বার,
অন্ধকার ঘর আলোকিত কওে আসিল অর্ন্তযামী
বন্ধনহীনে বন্ধন খুলে ভাঙ্গে দ্বার আপনা আপনি।
বাসু মানে প্রান আর
দেবকী দৈবী প্রকৃতি স্বত্ত্বা,
প্রানপ্রকৃতির মহামিলনে
আবির্ভাব প্রানের প্রাণকর্তা।                                                                                                              
ভাদ্রমাসের অষ্টমী তিথি পূণ্য মাহেন্দ্রক্ষণ
দেবকীর গর্ভে জন্ম নিল পূণ্য বালক সন্তান।
জগদাধর জগতপতি জগদারাধ্য জগতপিতা
অনন্ত অনাদিদেব জন্মহীন অব্যয় আত্মা ।
প্রানের সাধনা প্রাণকর্তার
করিতে প্রাণ রক্ষা;
যমুনা পারি দেয় বাসুদেব
অপ্রকৃত প্রকৃতি উপেক্ষা ।
নিরানšদ মথুরা ছেড়ে গোপাল নন্দালয়ে গমন
আনন্দলোকে আনন্দপতির হল মহাউত্তোরন।
নন্দপত্নী যশোদার সন্তান করে বিনিময় ,
ধীরে ধীরে বাড়ে শিশু আনন্দ নন্দালয়;
দুষ্টুমিতে মত্ত গোপাল জীবন লীলাময়,
মা যশোদার আনন্দ ভীষন, তবে চিন্তাময়।
কংস রাজা বাসু-পুত্র খোঁজে হন্যে হয়ে
অবশেষে খবর মেলে আছে নন্দালয়ে;
নানান ছলে নানান চেষ্টা করিতে নিধন
ছল-ছাতুরী অতিক্রমে কওে আলিঙ্গন।
কংসের কারনে বেজায় অতিষ্ট জীবন সবার
বোধ করিল গোপাল তবে, ঠেকাতে অবিচার;
কংসের অধীন যত অসুর করিতে নিধন
ছিন্ন করিল গোপাল নন্দালয়ের বন্ধন।
সুরের লালনে, পূণ্যের পালনে
আমার কৃষ্ণ অসুর নিধনে,
সত্য ধারনে, ন্যায় পালনে
আমার কৃষ্ণ জীবন ধারনে,
মনুষ্য কৃষ্ণ শিশু-গোপাল বিশ্ব-সৃষ্টিকর্তা;
অনন্তেশ্বরের অনন্তলোকে অনন্ত জীবনসত্ত্বা।।
অন্তলোকে অন্তরাত্মা শ্রী কৃষ্ণায় নম:।
পরব্রহ্ম পরমাত্মা পরমপিতা পরমেশ্বর,
তিনিই ঈশ্বর,অধীশ্বর,জগদগুরু জগদীশ্বর।
সগুণ সাকার সবিশেষ সুমহান
অখন্ড আরাধ্য অনাবিল শ্রী ভগবান।।
নিখিল জগতের আরাধ্য যিনি
ভালবাসায় প্রাণপ্রতিম তিনি,
চিন্তার অতীত প্রেমে পূর্ণ
ভক্তের ভগবান তিনিই শ্রীকৃষ্ণ।
অখন্ডমন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরচরম,
জলে-স্থলে অন্তরীক্ষে
চিরজাগরুক স্বর্গমর্ত্যে
মহাকালের মহাজ্যোতি, শ্রীকৃষ্ণ তোমায় প্রণাম।।
কৃষ্ণরূপী মহাজ্যোতি ছড়িয়ে যাক মহাবিশ্ব,
সত্যলদ্ধা মানবসত্ত্বা অগ্নিসম তেজাশ্চিস্ম।
চৈতন্যের চেতনায়, সাধকের সাধনায়
ধর্মান্ধদের ধর্মজ্ঞানে, নীতিহীনের নীতিজ্ঞানে
জাতপ্রথা- বর্নায়নে, ধর্মপ্রথা- বিশ্বায়নে
অত্যাচারে-অনাচারে, সৎ-মতে সঙ্গায়নে
ধর্মনীতি, সমরনীতি ,রাজনীতি রাজদ্বারে
শ্রীকৃষ্ণের সাম্যনীতি সবার মাঝে সবার তরে।
পথে-প্রান্তে, কর্মক্ষেত্রে ধর্মযুদ্ধে- কুরুক্ষেত্রে,
শ্রীকৃষ্ণের ধর্মবাণী সর্বকালে সর্বক্ষেত্রে।
সর্বব্যাপী সর্বশ্রেষ্ট, কৃষ্ণ তোমায় প্রণাম।।
শ্রীকৃষ্ণ  বিশ্বকর্তা বিশ্বের  বিশ্বেশ্বর,
অর্ন্তযামী অন্তারাত্মা পুরুষোত্তম যোগেশ্বর।
সর্বভূত মনোহর সর্বলোক মনহরণ,
সীমার মাঝে অসীমের মঙ্গল অবতরন।
অসীম অনন্ত অক্ষয় বেদান্ত কর্তা যিনি,
বেদান্ত কেন্দ্রানুগ সর্ববেদের বেদ্য তিনি।
সর্বৈশ্বর্য্য সর্বশক্তি সর্বরসপূর্ণ,
সর্বভূতে বিরাজিত স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ।
জগতহিতে জগৎপতি শ্রীকৃষ্ণায়  নম:
নিরানন্দে আনন্দরূপে,
মিথ্যা হেরে সত্যরূপে,
অজ্ঞানের জ্ঞানরূপে,
অমার কৃষ্ণ শক্তিরূপে,
রাজদ্বারে শ্মশানঘাটে দূর্ভিক্ষে রাষ্ট্রবিপ্লবে,
সুখে-দূ:খে সর্বযজ্ঞে, কৃষ্ণ সহায় বন্ধুরূপে।
নিত্যদাস কওে রাখো,শ্রীকৃষ্ণ কৃষ্ণায় নম:।।
শ্রীকৃষ্ণ প্রাননাথ প্রানের প্রাণশক্তি,
সর্বশক্তি সচ্চিদানন্দ সর্বরস সর্বাধিপতি।
মহাচেতন মহাজ্যোতি মহাশক্তি জাগরণ,
বিশ্বালয়ে বিশ্বজ্ঞাত্মা বিশ্বশান্তির আভরন।
সর্বকারণের কারণ যিনি,
ব্রহ্মান্ডের ব্রহ্মা তিনি,
পূণ্যগন্ধ পৃথিব্যাঞ্চ  অগ্নিতেজে  পরিপূর্ণ,
জীবনরূপে জীবের মাঝে অবস্থিত শ্রীকৃষ্ণ।
নম: ব্রাহ্ম নম: গোবিন্দ নমো: কৃষ্ণ নম।।
মরুভূমে জলরূপে,
অন্ধকাওে প্রভা রূপে,
মহাশূণ্যে শব্দ রূপে,
আমার কৃষ্ণ বল রূপে,
ধর্মের টানে, গ্লানির হরণে, স্বধর্ম অভ্যুত্থানে,
জ্ঞান-জ্ঞেয় জ্ঞানগমে, নির্গুণরূপে সকল গুণে।
তপো করি জগদগুরু শ্রীকৃষ্ণায় নম:।।
যশময়,ঐশ্বর্য্যময় শ্রী কৃষ্ণ করুণাসিন্ধু,
প্রেমময়, রসময় জগৎ হিতে জগতবন্ধু।
জগতের আনন্দযজ্ঞে  শ্রীকৃষ্ণের আগমন,
সার্থকতায় পূর্ণ হল, ধন্য মানবজীবন।
ঐশ্বর্য্যময়ের ঐশ্বর্য্য যিনি,
আনন্দযজ্ঞে  আনন্দ তিনি,
অন্তরাত্মা  আনন্দোৎসব  মহামঙ্গল আনন্দপূর্ণ।
রসালোকে রসোস্নাত রসামৃত নম: নম:।।
মথুরাতে, ধরিত্রিতে
দীনের কৃপা আরতিতে,
দু:খ হেরি সুখের সাথে,
আমার কৃষ্ণ দিবা রাতে।
অজ্ঞান সম অন্ধকার, রুদ্ধশ্বাস সম কারাগার,
কামনা পূর্ণ কংস আর পাপ সম অত্যাচার।
তমসো মা জ্যোতির্গময়:, ভজি কৃষ্ণ নম:।।
শ্বাশ্বত চিরন্তন প্রাণকৃষ্ণ জনার্ধন,
লীলার মাঝে বিস্তারিত জীবনের প্রয়োজন।
কারাগারে , মানবকূলে অন্ধকার বিদূরনে,                                                                                                                                                                                                                                    আলোর পথে ছিন্ন করে অজ্ঞানতার আবরনে।
যমুনাতে,নন্দালয়ে চিন্ময় লীলা প্রকটিত,
আমার কৃষ্ণ আনন্দপূর্ণ  পুরোষত্তম প্রকাশিত।
দ্বারকাতে পূর্ণ কৃষ্ণ, মথুরাতে পূর্ণতর,
বৃন্দাবন ধামে পূর্ণতম তিনি লীলাশ্বৈর্য্য সুবিস্তর।
দিব্যভাবের নিত্য লীলা  দেবালয়ে দেবসম,
জাগরনী  মঙ্গলবার্তা মঙ্গলময়ী প্রভু নম:।।
======================