বাসের জন্য অপেক্ষাতে,
বাস স্ট্যান্ডেতে দাড়িয়ে
হঠাৎ নজর চেনা কাউকে
খুঁজলো সে আগ বাড়িয়ে
আরে...  এতো শম্ভু...!
একছুটে গিয়ে ডাকলাম
পিছে জোরে জোরে হাকলাম।
অবশেষে সে ফিরলো এসে
বলল -কিরে!  তুই এখানে!
বলল -চল না চা খাই।
শম্ভু বলল- বলিস না আর
বাবা হাসপাতালে।
সেকি! কাকুর হলো টা কি?
বলল,সে হয়েছে নাকি কিডনি তে কি।
ও বলল -বল খবর তোর।
বললাম আমি,
গ্রাম ছেড়েছি বহুদিন, চলছে যে দিন বড় জোর।
হ্যা রে শম্ভু!  গ্রামের সব খবর কি ?
দল গুলো কাজ পেয়েছে কি?
আর ঐ খেলার মাঠ টা?
খেলে এখনও কচিকাচা?
ধনীর পুকুর শুকায় না বল?
কত ঝাপাঝাপি নিয়ে দলবল।
সুদীপ, প্রসেন, সাহেব, রতন
আব্দুল আর সোহেল ওরা কেমন.?
আচ্ছা ছাড়
তুই বল,  মালেক দাদার তাল গাছেতে তাল ধরেছে.?
আর ঐ মাসি? মাসির চায়ের দোকান এখনও আছে?
কত দিন হল গ্রাম ছেড়েছি!
বাপ- মা তো আর কেউ ছিলনা
বেশ করেছি।
বিয়ে -অবিয়ে হাডুডু খেলা এখনও হয়?
এখন তো সব বিয়েরই দলে
বিয়ে করেছে, কি করবে, খেলতে হয়।
আর ঐ কই এর বিলে?
জাল টানে?  শেষে জল সেঁচে
মাছ ধরতে দেয়?
নাকি আগের মতই পাকাল
জিয়ল সব তুলে নেয়?
এবার  বল...
বৃষ্টি হলে ধান ক্ষেতে এখনও
জলে ভীড় করে?
গায়ের কচিকাঁচা - বুড়ো
এখনও কি  জাল পেতে
মাছ ধরে?
কিরে চুপ কেন?
শম্ভু কই?
"খালি চেয়ার,  ঠান্ডা চায়ের কাপ"
একটু দূরে কান্নার আওয়াজ
হ্যাঁ তো কান্নার আওয়াজ!
যেন একাই বকছিলাম ।
দিনের বেলা চায়ের কাপে
একা স্বপ্ন বুনছিলাম।
দূরে লোক জমছে।
হাসপাতালের গেটে।
গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম
শম্ভু কে আমি দেখে।
শম্ভু কাঁদছে!
কিডনি আর সাথ দেয়নি
তাই নিঃশ্বাস ত্যাগ এর বাবার।
একটি ছেলে আমার মতন হলো দেখলাম আবার।
গ্রামের  সব বন্ধু হয়ত  এভাবেই সব কাটাচ্ছে দিন।
তারাও ভাবছে আমার মতই
কি ভাবে হারিয়েছি সুদিন।
সান্ত্বনা আর কি দেব?
ও কাঁদুক
কেঁদে মন হালকা হোক।
ব্যস্ত মানুষ,  ব্যস্ত জীবন
কে কার কখন খবর লই।
এভাবেই তো বাচাঁর লড়াই
জিতব বলে একলা হই।