"অবোধ শিশুকে যেমন গর্ভধারিণী
বর্গীর ভয় দেখানো গান শুনিয়েই
পাড়ায় ঘুম, ঠিক তেমন করে আমি
কামের শার্দুলটাকে পাড়িয়েছি ঘুম
সৌজন্যের ভয় দেখানো গান শুনিয়ে;
দোহাই তোর, জাগাস না এভাবে তাকে,
কাঙাল আমি মানুষের ভালবাসার,
সম্মান খোয়াতে হলে বাঁচবো না আমি।"


"কে তোমাকে বলেছেগো খোয়াতে সম্মান?
আমাকে ভেবো না তুমি অন্যদের মতো,
তোমার কাছে মোর নেই কোনো প্রার্থনা,
তোমার দেখা পেলেই সার্থক জীবন,
শুনিয়ো দরাজ কণ্ঠে মধুর বচন,
নিশ্চিন্ত্য থাকো তুমি, চাই না আর কিছু।"


"বল্ না আমাকে, কেন হলি মোর ভক্ত?
মনসা করেছে কত চাতুরি-ছলনা
চাঁদ সদাগরের পুজা পাবার তরে,
দেবী চণ্ডীও কালকেতুর পুজা পেতে
স্বর্ণ-গোধিকার বেশে করেছে প্রয়াস।
বন্ধুরা বলে, বড় কঠিন কর্ম নাকি
সুন্দরী তরুণীর হৃদয় জয় করা,
কাঠ-খড় নাকি পোড়াতে হয় প্রচুর,
গাঁটের কড়িও খসাতে হয় দেদার,
আমি তো কিছুই করিনি এসব তোকে,
তবু কেন ভালবাসলি আমাকে তুই?"


'জানি না জানি না, জানতে চেও না তুমি,
জানি শুধু দিনে-রাতে মনের পর্দায়
ভেসে ওঠে কেবল তোমার ওই মুখ,
সূর্যের আলোয় একটু একটু করে
পাঁপড়ি মেলে ধরে সূর্যমুখী যেমন,
তোমার স্ংস্পর্শে তেমন ধীরে ধীরে
হয়েছি পাগলিনী, মজেছে পোড়া মন,
জানি গো জানি, তোমাকে পাবো না কখনো,
জল যদি নাও পায় চাতক, তবুও কি
'ফটিক জল' বলা থামাতে পারে বলো?"


থেমে যায় দিয়া, দু চোখে জলের ধারা,
ছোঁয়াচে রোগের মতো ওর ব্যথা বুঝি
দ্বিগুণ হয়ে জ্বলে ওঠে আমারো বুকে;
হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে টেনে নিই
বুকে ওকে, সহসা  যে দিয়ার হৃদয়
আমার হৃদয়ে মিশে এক হয়ে যায়!
গভীর চুম্বনে দিয়ার  বিম্ব-অধরে
আমূল ডুবে যায় আমার এ অধর,
ভাষায় যায় না বলা এ কেমন সুখ!
দুজনের অশ্রু ভাসায় দুজনের বুক।
                    (চলবে)