জানো, 'তোমাকে নিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেবো'
এই বিপ্লবী সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছি কাল, যদিও
তোমার মোবাইল বার্তাটার মর্ম পুরোপুরি উদ্ধার
করতে পারিনি এখনো, তবু আমার আকুল-ভরা বুকের
উপর যেটা আছড়ে পড়েছিল সেটা যে তোমার দীর্ঘশ্বাস
বুঝতে অসুবিধে হয়নি একটুও,তখনই বিপ্লবী সিদ্ধান্তটা
নিয়ে ফেলেছি, বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছি মাস তিনেকের
তীর্থ-ভ্রমণে বার হতে চাই, ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়েছি
ব্যবসা-পত্তর, ্গিন্নিকে বলেছি দোয়া করতে যাতে
মহান তীর্থক্ষেত্রে মৃত্যু-বরণ করে জান্নাতের পথ
সুগম করতে পারি।


আজকের হাওয়া-বদলটাই আমাকে সাহস জুগিয়েছে,
সেদিনের মতো আজ আর কেউ নাক গলায় না কারো
বাক্তিগত ব্যাপারে, যদিও আমরা চাইলে সেদিনও
পালিয়ে যেতে পারতাম অনায়াসে, কিন্তু বিয়েতে ছিল
তোমার নিজেরই প্রবল আপত্তি, বলেছিলে, "চোখে পিঁচুটি
আর আলুথালু বেশ-ভূষায় রোজ সকালে যখন আমাকে
দেখবে তখন রাজকন্যে থেকে একেবারে বাঁদিকন্যে
হয়ে যাবো আমি, কিন্তু আমি চিরকাল রাজকন্যে হয়েই
থাকতে চাই তোমার চোখে।" তবু তোমার পাকা দেখার পর
তোমার বেহালা-শরীরে সুর তুলতে দিয়েছিলে প্রথম ও শেষ
বারের মতো। সে ছিল এক কৌতূহলী যুবকের আবেদন,
তারপর যতগুলো বেহালায় আঙুল চালিয়েছি মেলেনি
সেই সুর কখনো...


তবে কেবল সুরতৃষ্ণা মেটাতে তোমাকে চাইছি তা কিন্তু নয়,
সুর আলাদা হলেও তৃষ্ণা তো মেটেই যে কোন বেহালায়,
আমি আসলে দেখতে চাই তোমার সেই ধারণাটা সঠিক
ছিল কি না,তাই তোমাকে আটপৌরে রূপে দেখতে চাই
রোজ, দেখতে চাই এতদিনের মতো বাকি দিনগুলোতেও
আমার চোখে রাজকন্যে থাকো কি না।


যাই হোক, আমি তো বিপ্লবী সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেছি,
তুমিও কি পারবে এই বদলে যাওয়া হাওয়ায় ভর দিয়ে
সব পিছুটান কাটিয়ে বহুদূরে তোমার জন্যে অপেক্ষায়
থাকা আমার কাছে আসতে?


আকাশটা কিন্তু বেশ পরিস্কার, হাওয়া অফিসের কাছে
সাইক্লোনেরও  পূর্বাভাস নেই কোন ।