যেন আজব কোন দেশের মানুষ ওরা,
নেই রেশনকার্ড অথবা নাগরিকপত্র,
পদক্ষেপও নির্ধারিত হয় রক্ষীর মর্জিমাফিক,
তারাই ঠিক করে দেয় মনেরও গতিপথ!
গা ঘেঁষাঘেঁষি দুই ছিটমহল করলা আর শিবপ্রসাদ,
অথচ যেন আলোকবর্ষ দূরের দুটি গ্রহ !
স্কুল-বাজারশূন্য এই দুই মরুর কাছেই
নয়ারহাট যেন মরুদ্যান, বিদ্যার খোঁজে আয়েষা
আর কাজের খোঁজে ইমানুল দুই মরুর দুই পাখি
উড়ে এসেছিল এই মরুদ্যানে, রক্ষীরা সদয় ছিল তখন।
প্রথম সাক্ষাতেই প্রেমের অথই সাগরে ভেসে যাওয়া,
তারপর যা হয়, অবধারিত বিয়ের প্রসঙ্গ,
যদি নাগরিক হতো ওরা, হয় তো বা বাধা আসতো
কারো না কারো অভিভাবকের পক্ষ থেকে,কিন্তু ওদের
অভিভাবকেরা জানে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতে পারা
জান্নাত হাতে পাওয়ার মতো।একই ছিটের মাঝে যোগ্য
পাত্র-পাত্রি মেলা ভার।সকলেই প্রায় একে-অপরের
ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, অথচ ছিটের বাইরে বিয়ে নাকি
বে-আইনি রক্ষীদের রুলবুকে।
তবু  দুই পক্ষই সম্মত হলো অনেক আশায় বুক
বেঁধে।বিয়ের দিন ঠিক হলো একুশে ফেব্রুয়ারী।
মুচকি হেসেছিল বুঝি ভাগ্যবিধাতা,দুই মরুরই
রক্ষীদল বদলে গেছে ততদিনে, বদলে গেছে
মানবিকতার মানদণ্ড, অচেনা রক্ষীর হুঙ্কার,
'এনকাউন্টার দিখলা দুঙ্গা'।
ইমানুল-আয়েশার প্রেম শহীদ হলো একুশে ফেব্রুয়ারী।