[পশ্চিম বঙ্গ সরকারের 'কন্যাশ্রী' প্রকল্পের আওতায় অষ্টম থেকে
দ্বাদশ শ্রেণীর মেয়েদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার-প্রকল্পের জন্য রচিত]


হে নদী,আপন খেয়ালে বয়ে চলেছো উচ্ছল ঢেউ তুলে
দেখছে প্রকৃতি,দেখছে আকাশ মুগ্ধ দু চোখ মেলে
হঠাৎ করেই সম্মুখে দেখো অভূতপূর্ব এক বাঁক
যেন নতুন তারা মনের আকাশে উঠেছে এক ঝাঁক,
দু পাশের গাছেরা যেন আরো সবুজ আরো ফুলেফলে ঢাকা
আকাশের রঙও বদলে গেছে যেন,যেন অহরহ রামধনু আঁকা
যেন কোন এক যাদুকাঠির ছোঁয়ায় বদলে গেছে বিশ্ব
মনে হয় কে যেন শৈশব কেড়ে নিয়ে করে গেছে নিঃস্ব,
গুটি গুটি পায়ে তোমার আঙিনায় এ কার আগমন?
যেন অজানা অচেনা আগন্তুক, অথচ একান্ত আপন,
এতদিন ছিলে মাটির গাছ, এখন স্বচ্ছ জলের পদ্ম
নিতে তো হবেই মানিয়ে,নয়া পরিবেশ মিলেছে যে সদ্য,
পাঁপড়ি মেলে দিতে দিতে এখন প্রস্ফুটিত শতদল
অহরহ শুনে যাও গুঞ্জনধ্বনি,চারিদিকে ভ্রমরের দল,
কারো বা দুঃসাহসী মারণ কামনা,কারো বা বিষ হুলে
নিজেকে আচ্ছাদিত করো পাতায়,দুচোখ রেখো খুলে,


প্রতিটি নদী, প্রতিটি নারী পেরিয়ে এসেছে এই বাঁক
বয়ঃসন্ধিকে তাই সহজে নাও,সহজে দিন কেটে যাক,
যেমন করে পৃথিবী গ্রহণ করে আকাশের বৃষ্টি
পথ চলো দৃপ্ত গতিতে, চারিদিকে রাখো দৃষ্টি,
যদি তছনছ করে দিতে চায় প্লাবন,ভাসাতে চায় একূল ওকূল
ঠাণ্ডা মাথায় কুশলী হাতে গড়ে তোলো বাঁধ,হয় না যেন  ভুল,
কে বলে অবোলা কিশোরী?একবিংশের আলোকিত নারী তুমি,
কন্যা-ভগিনী-জায়া-জননীর মেলবন্ধনে ধন্য হয়েছে ভূমি,
পদ্মের কোমলতা আর দূর্গার কঠোরতা তোমাতে বেঁধেছে বাসা
তোমাকেই মেটাতে হবে এই পৃথিবীর যত্নে লালিত অর্ধেক আশা,
পথটা যদিও পিছল, তাই সাবধানে রেখো পা
শিক্ষা তোমার পাথেয় হবে,বাহন হবে চেতনা,
বিশ্বায়নের এই খোলা হাওয়ায় সতর্ক থেকো রাতে দিনে
'পশ্চিমী ফসল ফলে না এ  মাটিতে' এই কথা রেখো মনে,
আরো মনে রেখো,নেটের দুনিয়ায় তঞ্চক আছে ছেয়ে,
জাল আই ডিতে কুমতলবে ছেলেরাও সেজেছে মেয়ে
বন্ধুত্বের ডাকে হুটহাট দিয়ো না সাড়া
জালে ফেঁসে গেলে সহজে পাবে না ছাড়া,
বিপদের আঁচ পেলে অঙ্কুরেই করো বিনাশ,
তবেই রক্ষা পাবে সহজে,ঘটবে না সর্বনাশ,
ঘনিষ্ঠ হয়ো না অপাত্রে,সে ছবি তুলে রাখে ক্যামেরায়
পুতুলের মতো নাচাতে পারে,দেখাতে পারে ছবি ছড়ানোর ভয়,
সতর্ক পদক্ষেপই কমাতে পারে সাইবার অপরাধ,
শত প্রলোভন জয় যদি করো ব্যর্থ হবেই শতফাঁদ,
জীবন যখন বিপন্ন হবে,সংকোচের কি বা দাম,
সাহসী মেয়ের তকমা পেলে ঘুচে যাবে বদনাম।
----------
কলকাতা - ৭০০১২৫
৩১/০৭/২০১৪