শরৎ বুঝি প্রেমের গুরু প্রেম-জ্বরেতে ভীষণ ভোগায়
প্রেম-প্রকাশে ভীতু যারা তাদের মনেও সাহস যোগায়।
বর্ষা বুঝি নদীর সাথে শূন্য মনও ভরিয়ে তোলে
লুকিয়ে রাখা প্রেমের ঝাঁপি বর্ষাশেষে তাই কি খোলে?
সোনারোদের পরশ পেয়ে মনটা যেন ঝকঝকে হয়
দুরুদুরু বুকের মাঝেও যায় যে কেটে হাজারো ভয়!
এবার তবে বলেই ফেলি জমিয়ে রাখা হাজার কথা
একটু হেসে তাকাও যখন দূর হয়ে যায় সকল ব্যথা।
তোমার মনে কি আছে তা আকাশবাতাস সবাই   জানে
আমিই কেবল দ্বিধায় থাকি বুঝি না তার আসল মানে।
দোহাই তোমার আর রেখো না দুঃসহ এই অন্ধকারে
শুনতে কি আর পাচ্ছো নাগো নাড়ছি কড়া বন্ধদ্বারে?
তাকিয়ে দেখো আকাশ কেমন হলুদরোদের প্রদীপ জ্বালে!
সাজায় বাসর শিউলি-পলাশ মনকাড়া ঐ শুভ্র-লালে।


ভরাদেহে ছুটছে নদী ডাকছে তাকে প্রেমিক সাগর
দোয়েল শ্যামা নাচেগানে জমিয়ে তোলে পুণ্য আসর
শিশিরভেজা কাশের সাথে প্রেমের আলাপ করছে বাতাস
সাদা মেঘের কোমল তনু আঁকড়ে বুকে হাসছে আকাশ।
যে হাসিটা ঝড় তুলেছে আমার বুকের গোপন কোণে
শত কাজের মাঝেও যে তা আলোর ঝিলিক জাগায় মনে।
সেই হাসিটার আসল মানে বলবে এবার আমায় খুলে?
শরতরানীর আদেশ মেনে রাগ-অভিমান যাও না ভুলে।


                -------------


*'ভরিয়ে' ও 'লুকিয়ে' স্বরবৃত্তে সাধারণত তিন মাত্রা হয়। কিন্তু এখানে দুই মাত্রা ধরা হয়েছে । 'য়' সম্বলিত এধরণের শব্দের মাত্রাগণনায় প্রয়োজনে  একটি মাত্রা কম গোণা যেতে পারে। খ্যাতিমান কবিরাও এটা করে থাকেন ।