বয়সের ভারে ন্যূয্য শরীর
অবহেলা ক্ষণে ক্ষণে,
একাকী বসিয়া ঘরের দাওয়ায়
সোনালী অতীত মনে।
হৃদয় দোলানো কত কী যে আজ
হারিয়ে গেল চোখের সামনে থেকে।
স্মৃতির পাতায় তাই যে কাঁদায়
বারে বারে যায় পিছু ডেকে।


কোথায় হারিয়ে গেল লাঙল জোয়াল
হারিয়ে গেল মই ,
ধানের ক্ষেতের আঁচড়া কোথায়,
চাষীর মাথাল কৈ?


কোথায় গেল ভাটিয়ালি আর
পল্লী গানের কদর,
কোথায় গেল যাত্রা পালা
পুঁথি পাঠের আসর।


চরায় না এখন রাখাল ধেনু
বাজে না বাঁশের বাঁশি,
গাঁয়ের বধুরা জলকে চলে না
কাঁখে নিয়ে কলসি।


শত সখী সনে যায় না স্নানে
কূলনারী আর ঘাটে,
বৈদেশি আর আসে না এখন
মন মাঝির হাটে।


পাত কুয়া আর যায় না দেখা
টিউবওয়েল যায় যায়,
তড়িৎ মোটর চালায় সবাই
পানির অভাব নাই।


চার বেহারার পালকি নাইরে
শুনিনা হুন হুনা,
গরুর গাড়ি ঘোড়ার গাড়ি
দাদীর মুখে শুনা।


ঢেকির শব্দে ঘুম ভাঙ্গেনা
ঢ্যাঙ কুর কুর ধ্বনি,
হলুদ কুটার দলীয় গীতি
আর না এখন শুনি।


হৃদয় ছোঁয়া এসব স্মৃতির
মূল্য এখন নাই,
হারিয়ে যাচ্ছে ভালোবাসা
চরম যান্ত্রিকতায়।