দৃশ্য :১
একদা কৃশকায় কিঙ্করী এক রাস্তা মোড়ে ছিলো
দাঁড়িয়ে, আমি হাত দিলাম বাড়িয়ে, দিলাম তাকে
একটি চকচকে কয়েন।
তিনি হেসে বললেন,  আহা! মানুষ এখন সত্য
ইতিহাস  জানতে পারছে বটে, তবে দিন দিন
বিল হাওরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, বাবা।
আমি তখন স্বর্ণ শৈশবে দেখি একঝাঁক উড়ন্ত বলাকা --
দৃশ্য: ২
সবজি দোকানিকে দিলাম একটি একশ টাকার নতুন নোট।
নোটটির দিকে তাকিয়ে  তিনি  বললেন, এদেশের মানুষ পিতার
মর্যাদা দিতে জানে না, তাই দিন দিন মসজিদের সাথে অসম
পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা --
আমি তখন প্রিয় দূরন্ত কৈশোরে বাবার স্কন্ধে
দেখি লাঙলের ছবি ---
দৃশ্য: ৩
মচমচে পাঁচশ টাকার নোট, আহা! ঈদ সেলামি,
ছোট্ট মেয়েটির চোখে ভাসে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু,
তার পুলকিত পুণ্য মুখমন্ডলে উড়ে স্বাধীনতার
লাল সবুজ পতাকা।
দৃশ্য: ৪
শপিংমলের সামনেই পড়ে আছে একটি হাজার
টাকার বেওয়ারিশ নোট:
মালিক উধাও, ফেরারিও হতে পারে!
নোটটি বাতাসে নড়ছে --
যেনো ইতিহাসও নড়ছে সোনালি রৌদ্র ছড়িয়ে ---
তখন একজন পাগল, পাগলই বটে,  দু'হাত বাড়িয়ে
নোটটি ধরে বাতাসে উঁচু করে:
দৌড়ে চিৎকার করে বলে, পাইছি তোমারে!
বিল হাওর নদী নালা মন্দির মসজিদ পরিবার
পরিকল্পনা সবখানেই তুমি আছো জড়িয়ে,  
আমারে দ্যাওনা দ্যাখা, সব শালা পরেছে নকল পাখা,
আমারে চেনো না, পেটে খিদে, আমি তো পাগল,
আমি নাচি তাধিন তাধিন --
এবার আমি পূর্ণ স্বাধীন।
দৃশ্য: ৫
তবে কী আমরা ইতিহাস থেকে দিন দিন হয়ে গেছি বিরক্ত বিমুখ!
লোভের আগুনে পুড়ে গেছে যেনো আমাদের পূর্ব পুরুষের সুখ?
ভুলে যাচ্ছি দিন দিন ইতিহাসের অমর কাব্য কথা
অজস্র ছদ্মবেশীর মাঝে
এখন শুধু শুনতে পাই নিবেদিতপ্রাণে মর্মব্যথা।