এই রক্তঝরা রাতে,
             লিখছি বসে রক্তলেখা বড় ব্যথাতুর বুকেতে!
             বড় ব্যথাময় এই সুকরুণ কাহিনী,
            রচতে গেলেই কবিতাখানি
            আঁখি হতে অবিরল ঝরে পানি!
            গা ছম-ছম নিস্তব্ধ রাত্রিতে,
            কত ভাই,কত বোন, কত মাতা দিয়ে গেল
                   তাজা প্রাণ শত্রুর গুলিতে।


           হায়!হায়!উঠে রব তপ্ত ও গগনে,
          ছুড়িলরে শত গুলি পিশাচেরা ঘুমন্ত মগনে!
          কত কচি শিশুগুলি পিয়ে গেল কাঁচা খুন,
          মাতা নাই ডাকবার ' বাছা ওরে কথা শুন'!
          কামানের গুলিতে বুকখানি ঝাঁঝরা,
          ঐ দেখ এল হেথা এজিদেরো চেলারা।
     দাজ্জাল সনে পাতিলরে দোস্তি মুনাফেক দলেরা।


          চুষে খায় লাল-নীর রক্ত পিপাসু,
          দুশমনে বাঙালি বুকে হানে পরশু।
          মার্চের রাত্তিরে শুনি আজো হাহাকার,
         ক্রন্দন ধ্বনি বাজে পুত্রহীনার আর বিধবার!
    মাতা কয় 'বাছা ওঠ' ডাকাতেরা করছেরে ডাকাতি,
          মা'র বুকে হানিল জোরসে ও দু'লাথি!


          বাজে একা ধ্বনিটা শুন্য ও গগনে,
          বেটা আর বেঁচে নাই হেথা এই ভুবনে!
          গোলাবারুদ বর্ষণ ঘুমন্ত পুরীতে,
          জানোয়ার ধরে পিস্তল কার সে বুকেতে?
   মাতা প্রাতে কেঁদে কয় 'বাছাধন'আঁখি তব মেল না,
           অভিমানি ছেলেটি কথা তার শুনেনা!


           পিতা লয় কাঁধে তার পুত্রের লাশখান,
           শোকে ঝরে বারিধারা হতে ওই আসমান!  
           মাটি হল লালে লাল শহীদের লোহুতে,
           বুক ফাটা চিৎকার দেয় কে ওই সিয়াতে!
           দুশমন নাহি দেয় রাতটারে পোহাতে!


  পুত্রের লোহু লাশ কোলে নিয়ে কাঁদে কেরে শয্যায়?
         লাশদের স্তুপ পড়ে আছে ঘরটায়!
          ধিক!ধিক!শত ধিক!পশ্চিম পাকিস্তানি,
          কাপুরুষ ভীরু ওরা হিজড়া এ বাহিনী।
          কাঁদে ওরে হোথা আজো দুগ্ধ শিশুটি,
          শুকিয়ে মরুভূ কচি তার ছাতিটি!


    হিম্মত নাইরে আঘাত হানে ঘন সিয়া রাতিতে,
           বুকখানি পেতে দেয় ভাষাটারে বাঁচাতে।
        তোমাদের মত করে দিয়ে দেব তাজা প্রাণ,
           গগনচুম্বী হোক বাঙলা ভাষার মান।