খুন-জখম কান্না-আর্তনাদ এ সব কে এখন  
তেল-সাবানের মতো সহজেই গায়ে মেখে  
রক্তের ঝর্ণায় স্নান করছে সন্ত্রাস ।
অনৈতিকতার আঙুল ধরে শহর থেকে মফস্বল
বুনো শূকরের মতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে
একদল দাঁতাল ক্ষমতা । অত্যাচারের দাঁড়ায়
চেপা হয়ে টিকটিকির কাটা লেজর মতন
ছটফট করছে অধিকার। শিষ্টাচারের কবর খুঁড়ে
নীল সাম্রাজ্য গড়ছে শ্লীলতাহানি ।  
বোমা-বারুদ-বুলেটের মিছিলে পদপিষ্ট
আজ যেন মানবিকতার শরীর।    


হে বন্ধু, এখনো কি হয়নি সময় ?  
এখনো কি হয়নি সময়― চেতনার ধাতব পিণ্ডে
দায়িত্ববোধের হাতুড়ি পিটিয়ে
জড়তার জং ছাড়িয়ে
সমতার দাবি নিয়ে জেগে উঠতে?
সিংহের মতো কেশর ফুলিয়ে
অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে ? কিংবা
তালগাছের মতো মেরুদণ্ড সোজা করে
মেঘের মতো গলা উঁচিয়ে বলতে -  
আমাদেরও প্রাপ্য অধিকার চাই
বাঁচার মাটি চাই  
দু-টুকরো রুটি চাই
একমুঠো রোদ চাই  
আপন জন্মভূমির মাথায় শান্তির মুকুট চাই ।

হে বন্ধু, এখনো কি লাল চোখের ওম দেখে  
কুনোব্যাঙের মতো মুখ লুকিয়ে থাকবে  
ভীরুতার কোঠরে ? উদ্ধত ফণার কাছে কি
বারে বারে সপে দেবে আত্মসমর্পণের মাথা ?  
পেতে কি দেবে অসহায়ত্বের বশ্যতা মেনে
দাম্ভিকতার পায়ের নিচে তোমার বুক ? কিংবা
আত্ম-কেন্দ্রিকতার হাঁড়িকাঠে কি বারে বারে বলি দেবে-
আপন সত্ত্বার?
আপন বোধের ?
আপন প্রতিবাদের ?
না: !!  


ঘন কালো অন্ধকারের সুড়ঙ্গ কেটে বেরিয়ে আসা
ক্ষিপ্র উল্কা পিণ্ডের মতো এসো আজ ছুটে যাই
ব্যভিচারের সব বলয় ভেঙ্গে অনৈতিকতার অরণ্য
পুড়িয়ে দিতে, জ্বালিয়ে ছাই করে দিতে।  
দুর্নীতির ঘাঁটি, ষড়যন্ত্রের বৈঠক ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে।
এসো বিদ্যুতের মতো ঝলসে উঠে
আকাশের পিঠে দেদীপ্যমানতায় লিখে দিই―
এ মাটি আমাদেরও  
এ জল আমাদেরও  
এ স্বদেশ আমাদেরও ।


এসো বন্ধু, এসো জোয়ারের মতো ফুলে;  
পিছুটানের নোঙর তুলে
পাড়ি দিই লড়াইয়ের মোহনায় সাহসিকতায়।    
বটগাছের মতো দৃঢ় শপথ নিয়ে
জীবন থেকে জীবনের বুকে চারিয়ে দিই
গণজাগরণের শিকড় ।
ছড়িয়ে দিই বিপ্লবের ডাল-পালা। আর পরস্পর
পরস্পরের কাঁধে হাত রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে
দাঁড়াই পাইলিং-এর খুঁটির মতো  সোজা ।  
রোধ করি- অবক্ষয়ের অতল গর্ভে
হারিয়ে যেতে থাকা সু-সভ্যতার ভাঙন ।  
রচনা করি- গোলাপ ফোটা উঠোন ।
পায়রা ওড়া ভোর ।
পলাশ রাঙা বসন্ত ।
প্রতিষ্ঠা করি - সুস্থ স্বদেশ ভূমি ।


        ******