হে সুকান্ত,
হে ক্ষণিকের অতিথি,
একুশটি শীত তোমার জীবনে-
বিবর্ণ,বিশীর্ণ,পাতাই ঝরিয়েছ শুধু ।
বসন্তের জন্য প্রার্থনা জানিয়েও
কোনো বসন্ত আসেনি তোমার জীবনে ।
আশ্চর্য তুমি !
যে নবজাতকের জন্মলগ্নে
আদায় করেছ ছাড়পত্র এক
যার স্বাধিকার রক্ষায় শপথ নিয়েছ তুমি,
কি করে এত অল্প সময়েই
সে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করলে তুমি ?
             হে আজন্ম বিপ্লবী
তোমার বিপ্লববাণী ছড়িয়েছে
বাংলার গ্রামে-গঞ্জে,নগরে-প্র।ন্তরে ।
ধনীর বিলাস সামগ্রী
ক্ষুদ্র সিগারেটকে পরামর্শ দিয়েছ
একজোটে কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে
বিছানায় অথবা কাপড়ে ছিটকে পড়ার ।
কলমের ক্লান্তিহীন শ্রমের বিনিময়ে
যে লেখক উঠেছে খ্যাতির শীর্ষে
তার প্রতি অবিচারে,
সে কলমকে ধর্মঘটী হবার নির্মোকমুক্ত বাণী শুনিয়েছ।
নগণ্য ছোট্ট দেশলাই কাঠিকে বলেছ ঐক্যবদ্ধ হতে ।
পদভারে ক্ষত-বিক্ষত
যে সিঁড়ির সহায়তায়,
গর্বোদ্ধত অত্যাচারী উঠেছে উত্তণের মৈনাক মিনারে
তাদের পদস্খলনের কামনা করেছ তুমি ।
অভুক্ত একটি মোরগের দুঃখে
তোমার সহানুভূতিকে করেছ উৎসারিত ।
পথের উলঙ্গ শিশুটির জন্য
শীতের সূর্যের কাছে প্রার্থনা করেছ
আলো আর উত্তাপ ।
অথচ-
সেই তুমিই আজ,
নিজের ছাড়পত্র আদায় করে,
শীতের সাদা কফিনে জড়িয়ে
পৃথিবী থেকে চলে গেলে ।
ইতিহাস কি তোমার কাছে এইটুকুই চেয়েছিল ?
অথচ-
সব কিছু দেখে,সব কিছু জেনেও
নিপীড়িত বর্তমানের প্রাচীর ডিঙিয়ে
চলে গেলে তুমি অনন্তের সীমারেখায় ।
মহাকালের ইতিহাস যেদিন জানতে চাইবে,
সেদিন কি জবাব দেবে তাকে ?