আজ সেই দুসরা ফাগুন,
ঝরাপাতার মরমর মৈথুনে,
অস্তাচল রবির অন্তিম প্রভায় চোখ পড়েছিল তার চোখে,
কাঁজল আঁকা ডাগর বর্ণচোর সেই চোখদুটো।
কালের দীর্ঘশ্বাস চেপে যেন কিছু বলেছিল,
পড়া হয়নি সে অব্যক্ত ভাষা।
অতঃপর ব্যস্ততায় মেতে কেঁটে গেছে,
তিন
তিনটে বছর ,
কালের পরিক্রমায়।


আজ কতদিন পর সেই পুরানো পথের ,
নিঃসঙ্গ সঙ্গী।
বাসস্টপ থেকে নেমে পাহাড়িয়া লালমাটির পথধরে,
মাইলখানেক হাঁটতেই আমার অপ্সরা পল্লি।
হেঁটে চলেছি শ্লান্ত  এক অলস দুপুরে,
শিমুলের ডালে উদাসী কোকিল,
খাঁ খাঁ রোদ্দুরে ক্লান্ত পৃথ্বী।
আবেগের তন্তুগুলো প্যাঁচিয়ে যাচ্ছে সেদিনের স্মৃতি।
ক্ষণে ক্ষণে হৃদপ্রান্তে ধমকা ঝড়ো পবন,
একগুচ্ছ ঝরাপত্র উড়ে চলে বাউড়ি হাওয়ায়,
উদাস গগণ চুমে যাচ্ছে,
আবেগী কাদম্বিনী।


ক্লান্তির সাথে নিসখ্যতায় দুর্বার কদমে পা,
যেন ক্লান্তিহীন এক শঙ্খচিলের ডানা।
অদূরে আবছা আলোয়,সুদীঘল কুন্তল মৃদু পবনে উড়িয়ে,
কে যেন দাঁড়িয়ে !
আমার সম্মুখ সন্নিকটে।
অতঃপর ফিরে তাকাতেই সেই ডাগর চোখ দুটো !
কাঁচা হলুদমাখা সেই দুটি ঠোঁট।
একগুচ্ছ পুষ্পহাতে,
বেশ লাগছে।
চির পূর্ণতার অমিয় সিন্ধুতটে,
হৃদয় যেন গেয়ে উঠল
অচেনা সুরে।
একরাশ বিস্ময় আর দীর্ঘশ্বাসে শুধাল সে,
"ভাল আছেন তো "?
চাপা আবেগের রোমন্থনে,
আমি যেন এক নির্বাক নিশ্চল মোমের মূর্তি।
যেন কাঞ্চনজঘার বুক চিরে ছুটে চলল অব্যক্ত নদ।
ক্ষণপরে এক সুদর্শন যুবকের বাইকে চেপে,
মেয়েটি...


ডাগর ওই চোখদুটো তার,
যেন নিষ্পলক চেয়েছিল দৃষ্টি যতদূর,
তৃষ্ণার্ত চাপা আর্তনাদে আমিও বলেছিলাম,
"আমারও তো কিছু বলার ছিল"।


{2017 সালে "বিবর্ণ বসন্ত" কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।}