ও মাঝি ভাই, ও মাঝি ভাই,  একটু শুন না,
আমারে নি লইয়া যাইবা উজানতলীর গাঁ ।
শুনেছি সেথায়  একলা  বসে কাঁদে আমার মা,
আমারে নি লইয়া যাইবা উজানতলীর গাঁ।


একটি ছোটবোন আর  দুটি ছোট ভাই,
নদীর তীরে খেলতাম খেলা সুখের অন্ত নাই ।
হঠাৎ করে শনির দৃষ্টি  পড়ল এ সংসারে,
আদরের ধন মা জননী মোদের গেল ছেড়ে ।


সাদা কাফন জড়িয়ে গায়ে নায়র গেল মায়,
চার বেহারায় নিয়ে গেল উজানতলীর গাঁয় ।
সেই অবধি মা জননী আসেনা আর  ফিরে,
আমার সনে অভিমানে রয়েছে বুঝি দূরে ।
কেঁদেছি কতই অঝর ধারায় ধরে সবার পায়,
আমারে নি লইয়া যাইবা উজানতলীর গাঁয় ।


খরস্রোতা এই যে নদী সাতাঁর  জানি না,
ওই পাড়েতে আছে রে ভাই উউজানতলীর গাঁ ।
আদর করে দুধভাত কেউ তুলে দেয়না মুখে,
তুমি এসে আচ্ছা করে বকে দিও বাপকে।
মাগো তুমি কোথায় আছো কোন অজানার দেশে,
আমরাও যাব তোমার সাথে নিয়ে যাওনা এসে ।
নানুর বাড়ি যেতে যখন যেতাম চড়ে কোলে,
কতই মান করেছো মাগো মোদের গেছো ভুলে।
লাল শাড়িটি জড়িয়ে ধরে ছোট্ট ভাইটি কাঁদে,
ওদিকে বাবার নতুন বধূ নতুন ঘর বাঁধে ।


ভাবলাম সেই মা জননী কতই আদর করবে,
তোমার মত আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরবে ।
ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে ঘুমপাড়িয়ে দিবে,
ব্যথা পেলে জল মুছিয়ে কোলে তুলে নিবে ।
হায়রে কপাল শুনবে কি হাল বলছি তবে শুনো,
বিনে দোষে  এত কষ্ট বিধি দিল কেন ?
সাঁতার ছলে ডুবিয়ে মারল ছোট ভাইটিরে,
বাবার কাছে নালিশ দিয়ে দোষী করলো মোরে ।


বাপে আমার রাগে ক্ষোভে অগ্নিশর্মা হয়ে,
বিনে দোষে বনবাসে রাখলো ভাটির গাঁয়ে ।
সেই অবধি কষ্টে কাঁদি ভাটির পাড়ে বসে,
মিনয় করি বারেক ফিরে লয়ে যাওনা এসে ।
মায়ের কাছে বলব খুলে কষ্টের কথাগুলি,
কপালেতে চুমো দিলেই সবই যাব ভুলি ।
ও মাঝি ভাই দোহাই লাগে  ধরি তোমার পায়,
একবার শুধুই লইয়া যাওনা উজানতলীর গাঁয় ।

              


রচনাকালঃ২১ /০৫/২০১০  ইং"