তুমি তো জানো না,
সেদিন তুমি আসোনি বলে,
কতগুলো অভিমানী পরমাণু পু্ঞ্জিভূত হয়েছিল অন্তরে।
শরতের স্নিগ্ধ বিকেলে
পদ্মার কোন এক নির্জন দ্বীপে,
ঘন ঘাসের বিস্তর অরণ্যে শুভ্র কাশফুল হয়ে দুলেছি
তুমি আসবে বলে।
কতো ঢেউ গুণেছি
ছোট্ট ডিঙি সাজিয়ে একলা এক দ্বীপের পাশে।
চারিদিকে অথই জলের কলরব,
ঢেউয়ের তালে ঝিলমিল বিকেলের স্নিগ্ধ কমলা কোমল রোদ
রুমাঞ্চিত মধুক্ষণ
কেটেছে  একলা একাই।
কাজলে আঁকা চোখ
অলক্তমাখা পদ
খোলা চুলে রক্তগোলাপ
লাল খয়েরি থ্রি-পিস
কপালে ছোট্ট টিঁপমেখে,
কাশফুলের শুভ্রতার ভিড়ে আমি যেন নিঃসঙ্গ এক রক্তজবা।
ভেবেছিলাম,শরতের এ মিঠে রোদ বৃথা যাবেনা
তুমি আসবেই।
অধীর প্রতীক্ষায় পদ্মার মৃদু ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটেছিল
বিরহী সেকেন্ড,
তুমি আসো নি।
অন্তিম দিনমণির রক্তিম প্রভায় আরও লাল হয়ে গিয়েছিলাম।
স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা ঘাসের জলে
ভিজে গিয়েছিল নিতম্বখানি।
বয়ে যাওয়া পদ্মার অন্তহীনস্রোত
যেন অসীম প্রতীক্ষার দুরন্ত থাবায় আহত আমি।
একরাশ বিরহী কচুরীপানায় ঘিরে ধরেছিল ভাবনাগুলো,
তবুও তুমি এলে না।
এ নির্জন কাশবনে মৌনতার বুকে ঢেলেছিলাম কামনার সুধা,
তুমি এসে পান করবে বলে।
সূর্যটি নেমে গেল পাটে,
তবুও অধীর ব্যাকুলতায়,
যদি তুমি এসেই যাও।
অহেতুক ব্যর্থ প্রলাপগুলো বিবর্ণ হয়ে এলো
তুমি এলেই না।
আমি চলে যাচ্ছি বন্ধু
হয়ত চিরতরে।
কোন এক অচেনা কুমার ময়ূরপঙ্খী নায়ে করে
নিয়ে যাবে কাল জেলেপাড়ার এ জাল ছিঁড়ে।
কভু যদি এ নির্জন পদ্মার পাড়ে
এ কাশবনে এসো,
অপলক দৃষ্টিতে একবার চেয়ে দেখো,
দেখবে হয়ত বসেই আছি  একলা আমি,
নয়তো পাবে দলিত দূর্বাঘাসে বিরহী নিতম্বের একরাশ গাঢ় ছাপ।


-সংশোধিত