থমথমে শীতার্ত ফাগুনের গভীর নিশীথে,
ঘন তিমিরে আষ্টেপৃষ্ঠে চারিপাশ
কোথাও নেই এক টুকরো আলোকচ্ছটা,
শুধু নীরব নিথর নিস্তব্ধতা।
কালের ইতিহাস বুকে চেপে,
যেন মায়ের কোলে নিষুপ্ত দুষ্টু শিশু এ দ্বীপ।
জোনাকির মিটিমিটি প্রদীপ, আর ঝিঁঝিঁ পোকার বুকফাঁটা আর্তনাত
ঘন ঝোঁপে নিশাচরের ব্যবচ্ছেদ।
গহিন এ বনের ধারে ছোট্ট এক কুঁটিরে
একলা আমি।
দখিনে তটনীর উম্মাদ কলরব, উত্তরে বিরান বালুচর ।
এ গভীর রাতে আমার টেবিলে নিভু নিভু মোমের বাতি,
এ দ্বীপের সমস্ত লোক সিথানে নক্ষত্র পেতে বিভোর তন্দ্রায়।
গহিন বনে শুকনো পাতার মরমরে  আওয়াজ।
সহসা বাতায়নের পাশে শুভ্র পোষাকে,                
কারা যেন দাড়িয়ে !
মনে হয় যেন হাত  বাড়িয়ে ডাকছে আমায়।
ওরা কারা ?
তবে কি,
ওরা বাহান্নের তেজদীপ্ত অমর সৈনিকেরা ?
নাকি একাত্তরের দূর্মর প্রাণ,
হিম হয়ে আসে আপাদমস্তক।
দেখি ওদের মস্তক ফাঁটা স্কাল আজও টেনে হিঁচড়ে নেয়,
বুভূক্ষু নিশাচর।
ওরা যেন স্বাধীনভূমে আজও পরাধীন।
কারা যেন বাংলা ভাষাকে চিবিয়ে খাচ্ছে দেখে,
তাই বুঝি এসেছিল ওরা মিছিলে মিছিলে স্লোগানে  স্লোগা।  
মাগো,  ঘুম ভেঙে দেখো,
ওরা এসেছে,
এই তো আমার স্বাধীন কবিতার ভাষায়,
ওরা এসেছে প্রোজ্জ্বল শহীদ মিনার হয়ে,
ওরা এসেছে লাল সবুজ পতাকা হয়ে,
ওরা এসেছে,
ওরা আসবে বারবার,
গভীর নিশীথে প্রদীপ জ্বলা জোনাকি হয়ে।


রচনাকালঃ১২ /০২/২০১৩ ইং