এ দীঘির পাড়, হৃদয়ে আমার,
সিন্ধুতর ব্যথা আর স্মৃতির আঁধার,
আজও ভুলি নি, আজও খুলি নি,
স্বপ্নের ভ্রমজাল, আজও তুলি নি।


দেখতাম কত, নারী শত শত,
পড়ন্ত বিকেলে, বলাকার মত,
নাহিবার তরে, অঁঞ্চলি ভরে,
জল ছিঁটাতো কত, কুমারীরা যত।


অদূরেই মাঠ, শানবাঁধানো ঘাট,
সারি সারি কলসি সাজিয়ে ওরে,
রাখতো দীঘির ধারে ধারে,
আমি শুধুই চেয়ে চেয়ে দেখতা তারে।


সে দীঘির জল, রোদে টলমল,
শাপলার ফুল, ফুটে দুল দুল,
কিশোরী মন, হতো উচাটন,
দল বেঁধে ফুল তুলে,করতো বণ্টন।


কলসি ভরা জল,গায়ে ভেজা শাড়ি,
নূপুর পায়ে হেঁটে হেঁটে, চলে যেত বাড়ি,
উচাটন মন, ঘরে থাকেনা তখন,
এক কিশোরী, প্রেমে পরলো যখন।


মরি হায় হায়,বেঁচে থাকা দায়,
তৃষ্ণার্ত মন, আর নব যৌবন,
ব্যাকুলতার তান, আর বিধাতার দান,
রাশি রাশি স্বপ্নে, ভরে গেলো প্রাণ।


রোজ প্রভাতে,  কলসি লয়ে সাথে
দীঘির তটে বসে, আনমনে ওরে,
পড়াশুনা ফেলে,আসতাম চলে,
একটিবার দেখতে তারে।


হেরি সে চন্দ্রমুখ, ভরে যেত এ বুক,
বলতাম কত, রস কথা যত,
হৃদয়ে পেতাম সুখ,
তাই হল কাল,দেখলো গাঁয়ের মোড়ল,
বসলো পঞ্চায়েত, পিঠে পরলো শত বেত।


বাবার প্রহার আর অপমানের তরে,
সেই চন্দ্রমুখ, জ্বালিয়ে বিরহী ধোঁপ,
ডুবলো দিঘীর জলে, কলসি বেঁধে গলে!


আমি নিরুপায়, বাচাঁতে পারিনি তায়,
এ দীঘির জলে জলসমাধি তারে,
চির দিনের তরে।


আজও হেরি,এ দীঘির জলে সেই চন্দ্রমুখ,
বাঁধ ভাঙা অশ্রু এসে,ভাসায় দুটি চোখ।
আজও এ মন একাই রয়েছে,
সেই চন্দ্রমুখ বিহনে,
এ দীঘির জল শুকায় মোদের,
বিরহী  দহনে দহনে।


         ------০-----


রচনাকালঃ০৬/০২/২০১৩ ইং
হলুদিয়া
মধুপুর,টাংগাইল।