আয় রে ময়না, আয় রে শালিক,
       আয়, আয় রে, টিয়ে
কাল যে আমার,  ছোট্ট  পুতুল,
       সিতুমণির বিয়ে ।


রোজ সকালে ফুল তুলে,
     খোঁপাতে দিই বেঁধে,
আজ যে সিতুর গায়ে হলুদ,
      তাই তো সিতু কাঁদে।


সকাল হতেই ব্যস্ত আমি,
      সিতুকে শুধুই নিয়ে,
আজ যে সিতুর গায়ে হলুদ,
      কাল যে সিতুর বিয়ে ।


কাল যে সিতুর বিয়ে হবে,
     ভাবনায় চিন্তায় মরি,
স্কুলের সব পড়াগুলো,
      কেমন করে পড়ি।


কিছু হলুদ চুরি করে,
      দিলেম সিতুর গায়ে,
তাই দেখিল বাবা আমার,
      বকা খেল মায়।।


লজ্জায় মরি, চিন্তায় মরি,
    শাড়ি কোথায়  পাই,
চুপিচুপি বাবার পকেট,
     লুট করিলাম তাই।


দশটি টাকা পকেট হতে,
      নিলেম চুরি করি,
তাহা দিয়েই সিতুর জন্যে,
      কিনবো লাল শাড়ি !


ভাবতে ভাবতে স্কুলেরই,
      সময় হল তাই,
সিতুকে রেখে একা,
     কেমনে স্কুলে যাই।


ঘরের কোণেতে সিতুকে রেখে,
      স্কুলেতে  যাই,
সিতুর তরে পরান কাঁদে,
       ফিরে ফিরে চাই।


স্কুলেতে গিয়ে আমার,
     সময় না কাঁটে,
ভাবি বসে ছুটির ঘণ্টা,
    কখন বেজে ওঠে ।


অপেক্ষার প্রহর যেন,
     কাঁটেনা'ক  আর,
অবশেষে বলে ফেললাম,
     ছুটি দেন স্যার ।


সিতুর জন্যে লাল টুকটুকে,
      নিয়ে এক শাড়ি,
এক ঝলকে ছুটে ছুটে,
     চলে এলুম বাড়ি ।


এসে দেখি সিতুমণি,
    ঘরের কোণেই বসে,
আমার পানে চেয়ে চেয়ে,
    মুচকি মুচকি হাসে ।


পরদিন তার গায়ে আমি,
     পরালাম লাল শাড়ি,
বরযাত্রী আর ময়না টিয়ে,
     সবাই এল বাড়ি ।


খানা পিনা বিয়ে শেষে,
সিতু যাবে আপন দেশে.....,


কাগজের এক ডিঙি নৌকায়,
     বরযাত্রীরা চড়ে,
মাঝ নদীতে নৌকা ডুবে,
      সিতু গেল মরে ।


সিতু নামের সেই পুতুলটি,
      আজও মনেপড়ে,
সিতুর কথা মনে হলে ,
    আজও অশ্রুঝরে ।।
    
                        যবণিকা


রচনাকালঃ০৫/০৭/২০০৯ ইং