আজও শৈশবের সেই জীর্ণ স্মৃতিগুলো,
অনাবিল প্রশান্তিতে, উড়িয়ে যায় ধূলো ।
হৃদয়ে মোচড় কাঁটে, শুনিলে সেই নামটি,
লাল মাটিয়ার স্বর্গপুরী, হলুদিয়া গ্রামটি ।"


খানিক দূরেই ক্ষীণস্রোতে, বয়ে চলেছে বংশাই,
অরূপ রূপে ঘেরা গ্রামটি, তুলনা যে কোথাও নাই ।
আসিলে তোমায়, নানা পুষ্প বরণ করে নেবে,
মধুরসের আনারসে, তৃপ্ত করে দিবে ।


অবারিত মাঠে পাবে, সবুজের সমারোহ,
ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়, অনাবিল আবহ ।
পাহাড়িয়া এ গ্রামে পাবে, বাহাড়িয়া ফল,
তাল নারিকেল পেঁপেঁ কলা, জিবে আসবে জল।


এ গ্রামের ঘন বৃক্ষ দোলে, খেলে মুক্ত বাতাস,
মুক্ত মনের মানুষগুলো করে বসবাস ।
উদাস দুপুরে খাঁ খাঁ রোদ্দুরে, বটবৃক্ষের ছাঁয়া,
মিশুক মনের মানুষ দিবে, আতিথিয়ের মায়া ।


সবুজ মাঠে রাখাল বাজাবে, উদাসী বাঁশের বাঁশি,
কলসি ভরা জলের মাঝে, নয়া বধূর হাসি।
নীরব দুপুরে শুনবে  তুমি, ঘুঘু পাখির ডাক,
শুভ্র মেঘের শুভ্রডানায়, উড়বে বকের ঝাঁক ।


ভোর বেলাতে জমবে শিশির, দূর্বাঘাসের প'রে,
হয়ত দোয়েল শিস দিবে, মিষ্টি মধুর সুরে।
সারি সারি তাল গাছ, রাস্তার দু' ধারে,
মেটো পথে গরুর গাড়ি, পড়বে নজরে ।


সন্ধ্যা হলেই বাঁশের ঝাড়ে, পাখির কলরব,
রাত্রি এলেই বাউলা গানে, গ্রামটি দেখবে সরব।
কুঁড়েঘরে মিটিমিটি জ্বলবে, ছোট্ট মাটির প্রদীপ,
দূর হতে মনে হয় যেন, নক্ষত্রের দ্বীপ ।


মসজিদ হতে ভেসে আসবে, আযানের সুর,
অনাবিল প্রশান্তিতে, আসবে আবার ভোর।
অকৃত্রিম মানুষগুলো, খেলবে কাদাজলে,
ছয় ঋতুর শতরূপ, দেখবে তুমি এলে।


এখানেই কেঁটেছে মোর, দুরন্ত মধুর শৈশব,
কালের স্রোতে গোঁমড়ে কাঁদে হারানো বৈভব,
যতদূরেই থাকি, শুনি শত কোলাহল,
গ্রামটির কথা মনে হলেই, চোখে আসে জল ।


               -----০-----


রচনাকালঃ ১০/০৮/২০১৪ ইং