‘‘প্রিয়তমা’’
           আমি দুর্ভাগা, জীবনের সকল চাওয়া পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে,
বাস্তবায়ন করবো ,তখনই কোথা থেকে কাল বৈশাখী ঝড় এসে সব উলট পালট করে দিল ।
কত অপেক্ষার পর একান্ত আপন করে পাব তোমায়,সেদিন তুমি নির্বাক হয়ে নীল বরফের মতো শক্ত হয়ে যাবে ।
আমার উষ্ণতায় ধীরে ধীরে গলে পরবে।
আমার সব স্বপ্ন , স্বপ্নই হয়ে রইলো ।
তোমার কথা ভুলবার নয়,তবু ভুলে থাকতে হয়।
যখনই তোমার কথা ভাবী ,এক অদৃশ্য শক্তি সঞ্চালিত হয় মনের গভীরে ।
প্রতিবাদী কণ্ঠ বেজে উঠে অস্পষ্ট ভাবে।
পৃথিবীর কেও না বুঝুক তুমি কেন আমাকে বুঝলে না !
আমার জন্য একটি দিন ও সময় নিতে পারলে না !
আমার কোনোদিন আনন্দ পত্র লেখার সৌভাগ্য হয়নি।
তোমাকে বিরহ পত্র লিখতে বসে আনন্দের স্মৃতি গুলো ভেসে উঠছে মনের গভীরে ।
তোমাকে খুঁজেছি সমুদ্রের নীল স্বচ্ছ পানিতে, সেখানে লাল নীল মাছেরা সারাক্ষণ তার বিচরণ করে বেড়ায় ।
আকাশের গাঢ় নীলে তোমাকে খুঁজেছি,ঐ নীল দিয়ে তোমাকে বহু বার এঁকেছি।
তুমি দেখা দাওনি ,তুমি ছুটে বেড়াতে ,সন্ধ্যা তাঁরার কাছে ।
তুমি মিটমিট করে জ্বলতে ,আমাকে জ্বালাতে ।
আমাকে জ্বালিয়ে তুমি কী সুখ পেতে জানিনা!
আমি তোমায় প্রভাতের আলোয় খুঁজেছি, শিশির ভেজা সরষে ফুলে তুমি ঘুরে বেড়াতে,
আমি দূর থেকে সরষে ফুলের ঝাঁঝালো গন্ধের মাঝে, তোমার গন্ধ পেতাম ।
আমার হৃদয়ের সব অনুভূতি তোমার জন্য জমা রেখেছি ।
আমার হৃদয় খানি শূন্য করে, তোমার জীবনের সাথে মিশে যেতে চেয়েছিলাম ।
তুমি কোন দিন ও আমার খোঁজ করোনি, কারো মারফত বা পত্রালাপে।
কতদিন তোমার  অপেক্ষায় হাহা কারে কাটিয়েছি ।
এই বুঝি তুমি আসবে !
তোমার সান্নিন্ধ পাবার জন্য ব্যাকুল মনে নদীর তীরে উদাস হাওয়ার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি ।
যুগ যুগ নির্বাসনে কাটিয়েছি ।
তোমার জন্য প্রতিটিদিনই প্রতিটি যুগ মনে হতো ।
তোমার জন্য ব্যার্থ করে দিয়েছি নিজের জীবন ।
তুমি বলতো ?
আমি কার কাছে মনের কথা বলবো !
কাকে দু’হাত মেলে আলিঙ্গন করব । হৃদয় খুলে দেখাবো !
কাকে জড়িয়ে ধরে দু’ফোটা চোখের জল ফেলে বলব,তুমি শুধু আমার ।
আমি কান পেতে থাকি ।বাতাসের সুরের কাছে।
এই সুরে মিশে আছে ,তোমার নিজস্ব কন্ঠস্বর ।
তোমায় আমার জীবনের ভালবাসা হীন কিছু কথা বলি।
ধৈর্য্যধরে কষ্ট করে শোন । আমি সংসার পতেছেলিাম ।
অনেক চেষ্টা করেছি ভালবাসতে ,পারিনি ।
সংসার করছি,এটাকে সংসার বলে না ।
মনে হয় সব কিছু ছেড়ে কোথাও চলে যেতে পারতাম।
এই নিঃস্ব জীবনটা, ছেলে বেলার ভালবাসা চায়,কে দিবে !
দিতে পারবে তুমি ? পারবে না !
তুমি আমার প্রতি একটু করুনাতো করতে পার ! তোমার পরশে বুকের এই মরুভূমি ভরে উঠুক সবুজ উদ্যানে ।
তেমন কিছু তোমার কাছে চাই না । মাসে অন্তত একটি পত্র দিও।
আমার এই ছোট্ট অনুরোধটুকু রাখতে ভুলো না কিন্তু ।
অরণ্যের মধ্যে তোমাকে দেখতে পাই ।মনের আনন্দে তোমার পিছু নেই ।
আবার পিছনে ফিরে আসি। তুমি তো এখন আর আমার নেই ।
তুমি অন্যের হয়ে গেছো । তোমার সুখ শুধু আমার কাম্য ।
তুমি সুখী কিনা আমি জানিনা । তুমি সুখী এটা ভেবে আমি সুখ পাই ।
তোমাকে নিয়ে ভাবতে আমার ভাল লাগে।
তোমাকে আর কোনোদিন পাবনা,এটা জেনেও ,তোমাকে পাবার আশা করতে আমার ভাল লাগে । যখন আকাশ থেকে ঝমঝম করে বৃষ্টি ঝরে, বৃষ্টির মধ্যে তোমাকে দেখতে পাই ।
সুনীল আকাশটাকে ঢেকে দিয়ে আমি ছাতা ধরি, তোমার মাথায় ।
তাও তুমি বুঝলে না ,তুমি শুধু আমার ।চলতে পথে প্রখর রোদে তোমায় দেখতে পাই ।
যদি বৃক্ষ হতাম ,তোমায় ছায়া দিতাম ।
বহুদিনের ইচ্ছে ছিল,পাল তোলা নৌকা করে শুধু আমি আর তুমি সবুজ দ্বীপে পৌঁছে তাঁরা ভরা আকাশের নীচে কাটিয়ে দিব কোনো একটি মুহূর্ত।
সেটা পূর্ণতা পায়নি কখনো।
বহু বার নদীতে পার হতে হয়েছে, সেখানে তুমি থাকতে না।
সে নদী শান্ত ছিলনা ।উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়তে হতো ।
বেলা গড়িয়ে পশ্চিম আকাশ কে লালের আবিরে রাঙ্গিয়ে কুয়াশার মধ্যে যখন রঙ্গীন সন্ধ্যা নামতো ,
সে সন্ধ্যায় তোমাদের বাড়ীতে আলো আধারের মাঝে ,ঝিরঝিরে বাতাসে বসে নারিকেল দিয়ে খেজুর  রসের পায়েসের স্বাদ ভোলার নয় ।
সে দিনের আড্ডা থেকে বের হয়ে অমাবস্যার রাতে মিটি মিটি তারার আলো ,জোনাকি পোকার ঝিঁ ঝিঁ ডাক, তোমার আড়াল থেকে উকি-ঝুকি  আমি এখনো ভুলতে পারি না ।
সেটা কি আমার দোষ ?উত্তর দিতে পারবে না জানি । সে দিনের কথা কি তোমার মনে আছে।বেয়ারা ঐ ঘূর্ণিঝড় তোমার চুল গুলো এলোমেলো ভাবে আঘাত করছিল আমায়।
আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল, বেপরোয়া চুল গুলো দু'হাত বুলিয়ে দিয়ে গন্ধ শুকি।
আমি পারিনি। কারণ তোমাকে স্পর্শ করা নিষেধ ছিল।
আমি কখনো তোমার নিষেধ অমান্য করনি।
তোমার দৃষ্টির জন্য কতো অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতাম।
তুমি কখনো তোমার দৃষ্টি দাওনি।একদিন তোমার চোখে একটি কুটো এসে পড়েছিল।
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, কুটোটা বের করে দিতে।সৃষ্টিকর্তাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়েছিলাম, এই টুকু সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
তুমি নীল বরফের মতো শীতল হয়ে গিয়েছিলে।
আমার বুকের হাহা কারে যেন তৃষ্ণনার জলকণা ঢেলে দিয়েছিলে।
এক মুহূর্তের মধ্যে জীবনটা ভালবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
তোমায় স্পর্শ করার অনুভূতি আমি ব্যাখ্যা করব কী করে।
এ যেন স্বর্গীয় কোন ভাল লাগা।
তা ব্যাখ্যা করা যায় না।
অনুভব করা যায়। তুমি যে আমার কি ছিলে তা নতুন পৃথিবীতে বলবো।
তোমার ডাক নাম টি ধরে চিৎকার করে ডাকবো।
তুমি র্দীঘ কারাবাস থেকে তুষারের নদী অতিক্রম করে আমার বুকে  ঝাপয়িে পরবে।
আলতো হাতে তোমায় তুলে নিয়ে শৈশবের মিষ্টি গন্ধে,আবেগময় হয়ে উঠবো আমরা দু'জন।
তোমাকে এক ঝলক দেখার জন্য কত না বকা খেয়েছি। চক্ষুলজ্জা ফেলে অপেক্ষায় নদীর কিনারায় বসে বসে নদীর ঢেউ গুনেছি।
কতদিন অপক্ষোর পর তোমার দেখো মিলেছে।তাও স্কুলে যাওয়ার পথে, বান্ধবীদের সাথে।
চোখের তৃষ্ণা মিটিতো ঠিকই।
বুকের ভিতর শূন্যতা থেকেই যেত।
এই শূন্যতার নাম কি ভালবাসা !
তোমায় নিয়ে কিছু লিখেছিলাম, তোমার হাতে দেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি,রেখে গেলাম, নিরালায় বসে পরে নিও।
দেখো এতে মাখানো আছে স্নেহের অনল। ভালবাসায় বিরহ মাখানো দু'টি কথা।
কাগজের টুকরো টা ছুড়ে ফেলে দিতে চাও দিও।
মমতা মাখানো ভালবাসার বিরহের কথাগুলো হৃদয়ে গেঁথে নিও। তোমার কি সেই স্কুলের মিসের কথা মনে আছে?
তোমাকে স্কুলে পৌঁছে দিতে গিয়ে কি বকায় না আমি খেলিয়েছিলাম।
আমি কিন্তু  কোনো কিছু মনে করি নি।আমি খুশি হয়েছিলাম।
আমার ভালবাসার জন্য যত দুর্যোগ আসুক তোমার সহায়তার সব দুর্যোগ কেটে উঠছিলাম।
এখনো মনে হয় যদি আরও একবার ফেলে আসা স্কুল জীবনে ফিরে যেতে পারতাম।
জীবনটা যদি স্কুল জীবনে থমকে যেত!
থাক সে সব কথা বলে লাভ কি ?
তুমি ছাদ ভাল বাসতে কিন্তু কোনদিন আমায় তোমাদের ছাদে যেতে বলনি।
তাতে কী?  আমি কখনো তোমাকে কনো অপ্রীতিকর অবস্থায় ফেলতে চাইনি।
আমি দূর থেকে তোমার ঘুরে বড়োনো দেখতাম।
একদিন পড়ন্ত বিকেলে একটি গোলাপ ছুড়ে মেরেছিলে।
এখনো পুরানো বইয়ের পাতার ফাঁকে রেখে দিয়েছি।
যখনই তোমার কথা মনে পরে,  ছুঁয়ে দেখি তোমার গন্ধ পাই।
আমার তোমার উপর বিশ্বাস ছিল।আমার ভালবাসা ধূলায় লুটাবেনা। কেন যে আমার ভালবাসা তোমার বিশ্বাস অর্জন করতে পারলো না!
তুমি একটি দিনও সময় নিতে পারল না।
আমার জীবনটা ওলট পালট করে দিলে।
ভাল থেকো । হয়তো আর এ জীবনে কনোদিন তোমাকে দেখতে পাবোনা।
অন্য জীবনের আসায় রইলাম।
তোমারই  হতভাগা  রনবীর।