সালমান মাহফুজ-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে সালমান মাহফুজ-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:2782cc4c-711d-4403-b8f7-50c47540831c;id=11322024-03-28T22:34:12Zhttps://www.bangla-kobita.com/salman/bukpokete-tinti-lebupata/বুকপকেটে তিনটি লেবুপাতা 2024-03-24T20:17:12-04:002024-03-26T13:45:41-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>১.<br />বৃষ্টিরাতের উষ্ণ ভালোবাসাবাসি <br />শেষে ঝলমলে সকালের স্নিগ্ধ হাসি—<br />যেন বৃষ্টির মতন আকাশ হতে ঝরছে <br />ফোঁটা ফোঁটা রোদ; যেন বৃষ্টির মতন <br />হৃৎপিণ্ড হতে ঝরছে অবিরাম প্রেম;<br />সেই মুহূর্তে, ঠিক সেই মুহূর্তে<br />আমি পকেট থেকে বের করি সিগারেটের <br />সোনালি প্যাকেট আর একটা কালো গ্যাসলাইটার!</p>
<br /><p>আমি মূলত দুঃখ পোড়ানোর জন্য সিগারেট খাই <br />আমি মূলত আনন্দে আত্মহারা হয়ে <br />সিগারেটের মস্তকে আগুন ধরাই; আমি মূলত<br />তার দেয়া বিষাক্ত ছলনাময়ী স্পর্শগুলি ভুলবার জন্যে<br />সিগারেটের ফিল্টারে দুই ঠোঁট ছেপে ধরি—<br />আমি কখনো আশা করি না, আমাকে ঊর্ধ্বাকাশ<br />হতে এসে তুলে নিবে কোনো নীলপরি<br />আমার ভালোবাসার প্রবল বৃষ্টিতে<br />কখনো ঝরবে ঝিকিমিকি ঝরি! </p>
<br /><p>২.<br />পুড়ে যাবার পরিবর্তে আমি মূলত জ্বলছি—<br />আমার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে মন চায়<br />সমস্ত সামাজিক খড়কুটো, আমার হাত পুনরায় <br />মুষ্টিবদ্ধ হচ্ছে, একটা প্রবল আঘাতের জন্য <br />আমি নিজেকে প্রস্তুত করছি— আমি ভেঙে ফেলব <br />ক্রন্দন অথবা রক্ত-স্পন্দনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা<br />সমস্ত ছদ্মবেশী আত্মীয়তার বন্ধন! <br />ঠিক একদিন এক নিমেষেই আমি ধসিয়ে দিব <br />তোমাদের মিথ্যা আস্ফালন আর অযথা সব <br />আত্মকেন্দ্রিক দম্ভ; প্রিয়তমার গভীর চুম্বনে <br />সিক্ত হয়ে সেই কবেই আমি ছিঁড়ে ফেলেছি <br />সমস্ত শক্ত সামাজিক শেকল; আমার শুধু চাই<br />একটুখানি প্রণয়ের স্নিগ্ধ জল, আমি প্রবল <br />পদাঘাতে উড়িয়ে দিতে চাই, সব অহেতুক জঞ্জাল!</p>
<br /><p>৩.<br />অর্থের ঝনঝনানিতে নাচতে নাচতে<br />তোমরা খুঁজে নাও পৃথিবীতেই <br />স্বর্গবাসের নিশ্চয়তা;<br />গোটা একটা জীবন বাঁচতে বাঁচতে <br />আমি যদি আর একটুও না পাই <br />সুখের হদিস; কেউ যদি আমারে এই মুহূর্তে <br />অফার করে একটুখানি বিষ—<br />প্রচণ্ড তৃষ্ণায় নির্দ্বিধায় আমি গিলে ফেলব সবটুকু;<br />মায়াবিনী হাতের যাদুময়ী প্রেমময়ী স্পর্শ <br />আমাকে থামাতে পারবে কিনা, আমি জানি না! <br />তবে ইতোমধ্যে আমি জেনে গেছি—<br />নারকীয় জীবন মৃত্যুর চেয়ে কম কিংবা বেশি <br />ভালো কিংবা মন্দ নয়; আমি জেনে গেছি—<br />মানুষ নিজেকে ভাঙতে না পারলে <br />ভেঙেচূরে পুনরায় গড়তে না পারলে <br />জীবন হয়ে যায় নির্জীব, প্রাণ হয়ে যায় নির্বিষ <br />প্রেম হয়ে যায় রসহীন কিংবা নিমিষেই বিলীন ! </p>
<br /><p>অন্যের অনুদানে আমি এতকাল বেঁচে বেঁচে <br />আত্মসম্মানের বিসর্জনে পেয়েছি প্রবল <br />ঘৃণা অবশেষে; তোমাকে ভালোবেসে <br />আমি বিশুদ্ধ হতে না পারলেও <br />যাই নি অন্তত ক্ষয়ে, জাহান্নামের ভয়ে <br />আমি মসজিদে ছদ্মবেশী মুনাফিকের সাথে<br />একই কাতারে দাঁড়াতে চাই না বলে ওরা আমাকে<br />করেছিল তীব্র অপমান— তবু আমি জীবনের <br />দিকে ফিরে মস্তককে করেছি নীচু, উঠে দাঁড়ায়েছি<br />শক্ত পায়ে, ঘুরে দাঁড়িয়েছি আকাঙ্ক্ষার তাড়নায়—<br />হাত বাড়িয়েছি একটু সহানুভূতির আশায়;<br />ভালোবাসার উত্তাল সমুদ্রে হয়েছি ভাসমান—<br />মৃত্যুনদীর পাড়ে বসে আমি সদা গেয়ে গেছি<br />জীবনের জয়গান; তবু ওরা চিনল না আমাকে<br />বুঝল না আমার অনুভূতির তর্জমা, প্রিয়তমা! </p>
<br /><p>শুধু তুমি চিনেছিলে, বুঝেছিলে কিনা, জানি না—<br />তবু আমি নগ্ন করেছি আমার শরীরকে তোমার <br />কাতর দৃষ্টিতে, আমি সৃষ্টিতে সৃষ্টিতে মূলত বলে যাচ্ছি<br />মৃত্যুর ভয়াল থাবাতেও, হত্যার কুচক্রী ফাঁদেও <br />আমি প্রধানত ভালোবেসেছি তোমাকে<br />আমি ভালোবাসতে চেয়েছি শেষ পর্যন্ত আমাকে! </p>
<br /><p>গারদের অন্ধকার প্রকোষ্ঠের সেই দিনগুলিতে <br />আমি প্রতিটা মুহূর্তে নিজেকে ভেবেছি প্রচণ্ড স্বাধীন<br />মস্তিষ্কে প্রতিনিয়ত বিষাদগ্রস্ত বিদ্যুৎ খেলে গেলেও<br />আমি তোমাকে ভুলতে পারি নি, ভুলতে পারি নি আমাকে;<br />ভোরের বাগিছায় ফুল হয়ে ফুটবার প্রবল আকাঙ্ক্ষায়<br />আমি আজো আছি অনড়; সিগারেট ছুঁড়ে ফেলে <br />বৃক্ষের বন্ধন থেকে ছিন্ন করে বুকপকেটে <br />রেখে দিই তিনটি লেবুপাতা, একদিন আমার বুকে <br />তোমার সতেজ ভালোবাসার সুগন্ধি ছড়াবে বলে! <br />তোমাদের প্রবল প্রত্যাখ্যান, অহেতুক অভিমান <br />আর তীব্র অবহেলা সত্ত্বেও আমি আজও<br />ডুবে যাই নি চোরাবালিতে, কেউ তো আসে নি <br />আমাকে আপন করে নিতে সেই দিনগুলিতে! <br />তবু আমি বুকে কষ্ট চেপে ভেসে যাই নি নষ্টজলে...<br />আমি আজো আছি বেঁচে— তোমাকে ভালোবাসি বলে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/songhi-hao-ei-nissongho-choitrer-dupure/সঙ্গী হও এই নিঃসঙ্গ চৈত্রের দুপুরে2024-03-21T19:11:06-04:002024-03-22T02:36:15-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>লাল টুকটুকে স্বপ্নটা আমার চোখে <br />একেবারেই ফিকে হয়ে যায় নি আজো—<br />সত্যি বলতে, আমি তেমন কোনো <br />সম্ভাবনাও দেখি না; আমি বুকের ভেতরে<br />এতকাল ধরে, এত এত কাল ধরে<br />বিদ্রোহের লাল আগুন পুষেছি, প্রেমিকার <br />উষ্ণ বুকের জমাট প্রেম প্রত্যাখ্যান করে <br />আমি তো অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও<br />তোমাদের সঙ্গে মিছিলে হেঁটেছি, নির্ঘুম <br />অসংখ্য রজনী আমি কাটিয়েছি<br />বিশ্বাসের সুতোয় গাঁথা আমার মায়ের অতিপ্রিয়<br />মেরুন রঙের কাঁথায় মাথা মুড়ে<br />তোমাদের ভিড়ে নিজেকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে; <br />আমার নিজস্ব 'আমি'কে কখনো বলা হয় নি— আজ <br />অনেক পথ ঘুরে আমি চিনেছি তোমাকে<br />ভালোবেসেছি আমাকে <br />সুতরাং তুমি বিস্তৃত হও সীমাহীন হৃদয়াকাশজুড়ে<br />আর থেকো না অতিদূরে, নিকটবর্তী হও <br />থেকে যাও, সঙ্গী হও এই নিঃসঙ্গ চৈত্রের দুপুরে! </p>
<br /><p>তোমাকে নিয়ে ভাবলে, তাকে নিয়ে ভাবলে, এমনকি<br />আমার অতিগোপন আপন লাল স্বপ্নটাকে নিয়ে ভাবলে<br />কী এমন গহন নূপুরের বাজনা বাজে কানে!<br />তাই তো আমি ভালোবাসা পেলে সরে যাই না <br />অভিমানে; তাই তো অবেলায় অবহেলার ভারে<br />নুয়ে পড়ার পরও মিশে গেছি<br />নিজেকে তোমাদের 'একজন' ভেবে<br />বিষণ্ণ বিচিত্র মুখের ভিড়ে; নিজের শিরে<br />মুকুট দেখার বদলে আমি তো হাসি দেখতে চেয়েছি<br />তোমার মুখে, তোমাদের মুখে <br />আমার মুখে, আমাদের মুখে <br />প্রণয়ের গভীর গোপন সুখে <br />আমি চিরকালের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিই নি;<br />শুধু ওই লাল টুকটুকে স্বপ্নের ঘোরতর নেশায়<br />আমি চোখ লাল করে মেঘলা দিনে তোমাদের রাস্তায় <br />হেঁটে বেড়িয়েছি কত— অগণিত বার হয়েছি <br />হাসির পাত্র; আমার পতনের আলাপে কারা যেন <br />অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছিল উৎসবমুখর অট্টালিকায়!<br />তবু জীবনবৃক্ষ হতে ঝরে যাই নি শেকড়ের <br />কিংবা শিখরের তীব্রতম প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও; আমি <br />ভেঙে পড়ি নি শত সহস্র অপমানে— শুধু তুমি <br />পাশে ছিলে বলে, শুধু তোমার প্রেমের জ্বরে <br />আমি সংক্রমিত হয়েছিলাম বলে<br />খুব নরম স্বরে তুমি আমার 'নাম' ধরে <br />ডেকেছিলে বলে— আমি পৃথিবীর উপরে<br />'প্রেমিক' পরিচয় নিয়ে আজও আছি বেঁচে! <br />আজ বলো, কে তোমাকে 'পরিচয়হীন লাশ' ভেবে <br />ভাসিয়ে দিয়েছে বানের স্রোতে; কে তোমার ঠোঁটে <br />অনেক— অনেক অপেক্ষার পরে বৃষ্টি নামাল;<br />কে তোমার চিবুকের তিলে মুগ্ধ হয়ে <br />দৃষ্টি থামাল; কে তোমাকে প্রথম ভেজালো<br />ফুলের বৃষ্টিতে; কার অনুভবে <br />তুমি তীব্রতম শীতের রাতেও পেয়েছিলে <br />প্রখরতম দিনের উত্তাপে মোড়া সোনালি উষ্ণতা!</p>
<br /><p>স্বপ্নসমুদ্রের উত্তাল পাড়ভাঙা তীরে<br />আমাদের ভালোবাসার তরী <br />ভিড়তে দেখে কারুরই যে গাত্র <br />জ্বলে নি, আমি সে কথা বলব না; <br />আমি বলব না— আমি কোনো সুমহান প্রেমিক <br />আমি বলব না— আমার চুম্বনের তীব্রতায়<br />তোমার শরীরে শুরু হয় সর্বনাশী ভূমিকম্প! <br />আমি বলব না— তোমার সঙ্গে আমার আলিঙ্গনে <br />কেঁপে উঠে দশদিক; আমি আর জানতে চাইব না—<br />আমার মতন তোমাকে কে কবে কখন <br />ভালোবেসেছিল?<br />শুধু বলি— তুমি আর থেকো না অমন অবুঝ <br />শুধু বলি— তুমি হও আদিগন্ত বিস্তৃত সবুজ<br />শুধু বলি— বধূর বন্ধনে চিরকাল আমাকে <br />বেঁধে না রেখে কখনো সখনো বন্ধু হও <br />বলি আর না-বলি এটাই সত্যি—<br />তুমি কেবলই আমার নও; <br />আমি নই শুধুই তোমার—<br />গভীরতম ভালোবাসাবাসি সত্ত্বেও <br />পৃথিবীতে আজও প্রত্যেকে প্রত্যেকের নিজের;<br />কিংবা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের একার!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/to-doyel/দোয়েল, তোমাকে2024-03-17T08:58:16-04:002024-03-17T08:58:16-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি সেদিন তোমাকে বলেছিলাম—<br />পৃথিবীর কোনোকিছুই চিরকাল<br />কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির <br />দাঁড়িয়ে থাকে না!<br />মানুষ, মানুষের স্বপ্ন, অনুভূতি, এমনকি পবিত্রতম প্রেম—<br />কোনোকিছুই না! </p>
<br /><p>যতই ভালোবাসার অনুভবে মাতোয়ারা হোক <br />পৃথিবীর কেউ-ই স্পর্শহীন চিরদিন<br />কারুর জন্যই অপেক্ষা করে না! <br />পার্বতীও অপেক্ষা করে নি <br />দেবদাসের জন্য! <br />দেবদাসও কি অপেক্ষা করেছিল<br />পার্বতীর জন্যে? তা হলে— দেবদাসের <br />জীবন 'চন্দ্রমুখী'র অভিমুখী না হয়ে <br />পার্বতীর বাসরের অন্ধকার চিতায় <br />মৃত্যুর মতন জ্বলতো! কিংবা <br />পার্বতীর বিয়ের রাতেই দেবদাস <br />মদের পরিবর্তে মুখে নিত হেমলক! </p>
<br /><p>তুমি 'কবুল' বলার পর আমি নিজেকে ভাবি নি <br />ব্রিটিশরাজ অষ্টম এডওয়ার্ড!<br />যদিও আমার কোনো সাম্রাজ্য হারানোর <br />ভয় নেই, আমার শুধুই ছিল <br />তোমাকে একান্ত করে পাবার সংশয়! <br />আমার মাথায় কোনো মুকুট না থাকলেও <br />নির্ঘুম দুচোখজুড়ে জ্বলছিল একটাই স্বপ্ন—<br />কবে তোমাকে করে নিব জয়!<br />তোমার নিবিড় স্পর্শ পাবার পর<br />মিটে গেছে আমার 'গৌতম বুদ্ধ' হওয়ার সাধ—<br />পূর্ণিমার আগুনে পৃথিবী জ্বলেপুড়ে <br />ছারখার হয়ে গেলেও আমি ছাড়ব না ঘর;<br />আমাকে বাহুডোরে বেঁধে নিলে<br />আমি টেনে নিব তোমাকে ম্যাগনেটিক মায়ায়;<br />আমাকে প্রেম দিলে, আমি ফুল দিব! </p>
<br /><p>তোমাকে ভালোবাসার পর আমি তীব্র শীতের রাতে <br />একটা ধূসর বিড়ালছানার যন্ত্রণার কথা ভেবে<br />রাতভর ঘুমাতে পারি নি!<br />তোমাকে ভালোবাসার পর আমি বুক পকেটে <br />গোলাপ নিয়ে বিস্কুট খাইয়ে দিয়েছি <br />পথের কুকুরকে! <br />তোমাকে ভালোবাসার পর <br />আমি ক্ষমা করে দিয়েছি তাদের—<br />যারা শুধু দেখতে চেয়েছিল <br />তাদের স্বর্গীয় সুখের সংসারের পাশে <br />দাউ দাউ আগুনে জ্বলছে তোমার আমার দাম্পত্য! <br />কিন্তু হায়! আমাদের প্রেমের আগুনের উত্তাপে <br />ওরা আজ কেন হিংসায় জ্বলেপুড়ে অঙ্গার হচ্ছে! <br />তোমাকে ভালোবাসার পর স্বার্থপর মনে হয় <br />আমার সমস্ত প্রাক্তনকে! <br />তোমাকে ভালোবাসার পর আমি চিনতে শুরু করেছি <br />মুখের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুখোশুগুলি!<br />আর কতবার বলব, তোমাকে ভালোবাসার পর <br />তুমি ‘দোয়েল' থেকে হয়ে গেছো কবির প্রাণের কাছে<br />এমনকি, দালানের থাইকাঁচে ঠোঁকর মারা<br />বিষ্টিদিনে মিষ্টি স্বরের বুলবুলি! </p>
<br /><p>বুলবুলির মতন তোমার অতিসুন্দর চুলের ঝুঁটিতে <br />কখনো যদি রাণীর মুকুট না-ও ওঠে;<br />যদি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম সিংহাসনও <br />আমার কপালে কখনো না জোটে;<br />যদি নাও ফোটে আর চুম্বনের পুষ্প <br />আমাদের প্রেমসিক্ত ঠোঁটে—<br />তবুও অমর না হলেও অন্তত সহজে <br />মারবে না তোমার আমার এই প্রেম; <br />তবু জীবনভর চতুর্পাশে আপন কোলাহলে চলবে <br />তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবার<br />অতিপ্রাচীন ডিভাইডেড গেম! </p>
<br /><p>তোমাকে ছোঁবার পর আমার ছুঁতে ইচ্ছে করে না<br />বিগত জীবনের নোংরা কালিগুলি <br />তোমাকে পাঠ শুরু করার পর<br />বড় বিচ্ছিরি লাগে বাজারের চাকরির গাইডগুলি <br />তোমার নামে 'কবুল' বলার পর <br />আমি শরীর থেকে মুছে ফেলেছি সব ছলনাময়ী ছোঁয়া!<br />তোমার ঠোঁটে চুম্বনের পর অন্যরকম লাগে <br />কমলালেবুর কোঁয়া; তোমাকে প্রতিশ্রুতি দেবার পর <br />আর রঙহীন বাতাসে ছড়াতে ইচ্ছে করে না <br />সিগারেটদগ্ধ বিষাক্ত ধোঁয়া; আমার হৃদয়ের <br />গভীরে তোমার তীব্রতম প্রেমের বাজনা বেজে<br />ওঠার পরপরই আমি নিভিয়ে দিয়েছি <br />শেষতম সিগারেট; ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি <br />সতর্কীকরণের বার্তাখচিত সোনালি প্যাকেট;<br />প্রিয়তমা, তোমার চিবুকের কসম আমি আর<br />সিগারেট ছোঁব না; তোমার বাবার যক্ষ্মা হওয়ার ট্রমা <br />আমি তোমার জীবনে দ্বিতীয়বার আনব না! <br />তোমাকে চুমু খাওয়ার পর আমার নিজস্ব আকাশ থেকে <br />ঝরছে ঝলমলে বৃষ্টি— নূপুরের বাজনার মতো;<br />তোমাকে পাবার পর পাখির পালকের মতো <br />খসে গেছে শত শত না-পাওয়া বেদনার ক্ষত! </p>
<br /><p>কার না মন চায়, স্ত্রীর মতো ভালোবাসা পেতে <br />নিবিড় বন্ধনে বাঁধাহীন ভালোবাসতে<br />বৃষ্টির রাতে ভালোবাসার গভীর ধ্যানে মগ্ন হতে<br />আকাশের ক্রন্দনে পরস্পরকে একই বিছানায় টানতে<br />একটু আধটু খুনসুঁটি কিংবা হাসতে কবিরও মন চায়—<br />কবিরও ইচ্ছে করে তোমাকে 'বউ' বলে ডাকতে;<br />কবিরও ইচ্ছে করে সংসারে প্রেমের পদ্ম ফুটাতে<br />তীব্রতম দীনতায় ব্যর্থতায় তারও ইচ্ছে করে <br />তোমাকে সন্তানের 'জননী' বানাতে; শুধু<br />প্রেমিকাদের আঘাতে আঘাতে<br />ব্যর্থ প্রেমের পঙক্তিমালা সাজাতে সাজাতে<br />তাদের জীবন কেটে যাবে; হুট করে অকালে<br />মরে যাবে— এই আইডিয়ার পশ্চাৎদেশে লাথি মেরে <br />আমি শূন্য পকেটে দাঁড়িয়েছি তোমার সম্মুখে <br />তোমাকে পেতে হাত পেতেছি যার তার দ্বারে<br />অর্থ আর দীনতার দোদুল্যমানতায়<br />আমাকে কেউ পারে নি আটকাতে;<br />কথা দাও, তুমি পথ চলবে আমৃত্যু আমার সাথে;<br />এভাবেই আস্থা রাখবে <br />এই অক্ষরের মালা গাঁথায় দক্ষ হাতে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/schizophrenic-lover/সিজোফ্রেনিক প্রেমিক2024-03-14T09:32:58-04:002024-03-15T06:07:41-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমার ভেতরে একজন ব্যর্থ বিপ্লবী <br />অনেক অনেক দিন আগে আত্মহত্যা করেছিল—<br />আমি সেই আত্মহত্যাকারীর ব্যর্থ মৃত অতৃপ্ত <br />আত্মা শরীরে বয়ে নিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিলে<br />সমাবেশে নৈরাশ্যের নেশাচক্রে <br />তবুও ফেরি করেছিলাম কিছু লাল স্বপ্ন<br />আরও কিছুদিন! </p>
<br /><p>যদিও জেনেছিলাম, আমি রবো চিরদিন<br />তোমার অপেক্ষায় প্রেমহীন— বৃষ্টিহীন;<br />তবুও অন্ধ নিঃস্ব ভিখারীর মতন হাত পেতেছিলাম;<br />আজ অবধি তুমি ছাড়া কেউ তো আমারে<br />ডাকে নি একান্ত মুহূর্ত কাটাবে বলে <br />কোনো গোপন অভিসারে! <br />আমার আধো ঘুমের ভেতরে কে যেন নাম ধরে<br />ডাকে বারে বারে— সে কি তুমি? নাকি ঘোরের ভেতরে <br />জাগ্রত স্বপ্নের ডালে ঘুর ঘুর করা কোনো ডাহুক?<br />নাকি ভয়ানক সব দুঃস্বপ্নের চাদরে মোড়া সেই অসুখ?</p>
<br /><p>জেনে রেখো, প্রিয়কণ্ঠী প্রিয়তমা আমার <br />আমি ভালোবাসতে পারি না আর তোমারে! <br />আমি ভালোবাসতে পারি না আর আমারে! <br />আমি ভালোবাসতে পারি না এমনকি, তারে!</p>
<br /><p>যে নারী পাখির রূপ ধারণ করে সারা আকাশজুড়ে চরে<br />আমার চারদেয়ালের নিঃসঙ্গ ইটের ঘরে <br />চেয়েছিল একটা একান্ত নিজস্ব নিরাপদ আশ্রয়!<br />আগুনে পুড়ে পুড়ে যার কৃষ্ণ পালক হয়েছিল স্বর্ণময়!<br />আমি নিঃসঙ্কোচে জিজ্ঞেস করি আমারে—<br />আঁখিতে আগুন মেখে তুমি কি সত্যিই ভালোবেসেছিলে <br />কিংবা একান্ত নিজের করে পেতে চেয়েছিলে তারে?<br />আমি জানি না! </p>
<br /><p>আমি জানি না, তোমার আঁখিতে <br />যে মেঘগুচ্ছ জমে আছে<br />তা আজ কার বিরহের তরে <br />তুমুল বৃষ্টি হয়ে ঝরে?<br />কার বাগিছায় সে বৃষ্টিজল ফুলে ফুলে <br />ব্যাপক বিপুল রোমাঞ্চ ছড়ায়?<br />বৃষ্টির দীর্ঘশ্বাসের সাথে বেরিয়ে আসা সেই জলকণা<br />মুক্তোর মতন ঝলমলিয়ে ফুটে আছে <br />কার ভালোবাসার ঘাসে? <br />আমি জানি না, তুমি 'চাঁদ' হয়ে জ্বলো আজ<br />কার আকাশে, কার বাতাসে তুমি ডানা মেলে ভাসো?<br />আমি আজ আর জানি না, তুমি কারে <br />ভালোবাসো?<br />আমার আর ভাল্লাগে না, সত্যি সত্যিই<br />আমি আর ভাবতে চাই না তোমারে ! </p>
<br /><p>তোমার হাত ছুঁয়ে পথ চলতে আমার আর ইচ্ছে হয় না<br />যার আকাশে খুশি উড়ে যেতে পারো <br />হে আমার হৃদয়ের নীড়ে অনবরত <br />ডাকাডাকিতে অস্থির ছটফটরত প্রাণপাখি ময়না—<br />তোমার ক্রমাগত একটা অপ্রিয় গান বারবার <br />অবিরাম বেজে চলার মতন <br />বিরক্তি আর ক্লান্তিকর ডাকাডাকি <br />আমার প্রাণে আর সয় না! <br />তোমাকে ভালোবাসতে আমার ইচ্ছে হয় না, পাখি! <br />শুধু তুমি না, পৃথিবীর কোনো নির্দিষ্ট একক <br />কাউকে কোনোকিছুকেই আমার আর <br />এক মুহূর্তের জন্য সহ্য হয় না—<br />যদিও আমি আজও বড় নিঃসঙ্গ এবং একাকী! </p>
<br /><p>আমার শুধু সন্দেহ হয়, তুমি কি সত্যিই আমার নয়?<br />আমার শুধু সন্দেহ জাগে, শাহবাগে <br />যারা দু'চারটা প্ল্যাকার্ড পোস্টার হাতে চিৎকারে চিৎকারে <br />আকাশ ফাটায়, শোষিত লাঞ্চিত বঞ্চিত নিপীড়িত <br />মানুষের অন্তরে কি তাদের আওয়াজ আদৌ পৌঁছায়?<br />তারা কি দাসত্বের কারাগার অর্থাৎ <br />ব্যক্তিমালিকানাধীন সমস্ত সম্পদ আর সম্পত্তির <br />চিরতরে উচ্ছেদ চায়? তারা কি ফুলে ফুলে <br />প্রজাপতিদের অবাধ বিচরণে আস্থা রাখে? <br />জীবনের বাঁকে বাঁকে যতসব স্বপ্ন ঝরা পাতার মতন <br />পড়ে আছে, স্বার্থপর বিষধর নগরের ফুটপাতে <br />যত নগ্ন রুগ্ন মৃত অর্ধমৃত অসহায় প্রাণ পড়ে আছে—<br />তারা কি সবার একটা থাকার মতন নিরাপদ বাসস্থান<br />বাঁচার মতন একটা নির্ভাবনার জীবন<br />কিংবা মৃতের 'চিহ্ন' হিসাবে একটা নির্দিষ্ট গোরস্থান<br />অথবা শান্তিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের জন্য প্রস্থান <br />তারা সত্যিকার অর্থেই চায়?<br />তারা কি সমাজতন্ত্রের জলোচ্ছ্বাস জাগাতে চায়<br />ধনতান্ত্রিক দূষিত সামদ্রিক তটে?<br />আমার কেবলই সন্দেহের উদ্রেক ঘটে!</p>
<br /><p>তবু আমি মৃত শরীরে জীবন্ত আত্মা ধারণ করে <br />অদৃশ্য অস্তিত্বহীনতায় মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে <br />বিপ্লবের অলীক স্বপ্নের ব্যারামে তাদের সাথে <br />হাতে হাত রেখে রাজপথে দাঁড়িয়ে যাই;<br />আজও মস্তিষ্কের প্রতিটা কোষে লাল নীল <br />স্পন্দনে জ্বলছে ভাঙচূরের নেশা; <br />নিঃশব্দ জনহীন জঙ্গলে তোমার আলিঙ্গন <br />এবং চুম্বন পেতে ইচ্ছে হলেও আমি ইদানীং <br />খুব খুব ভয় পাই বিষধর সর্পদংশন! <br />তোমাকে চিরিতরে হারিয়ে ফেলার আশংকা বুকে চেপে <br />আমার পুনর্বার মিশে যেতে চাই বারুদগ্ধ অগ্নিময়ী <br />স্লোগানে ছত্রভঙ্গ পিকিটিং-এ, রাজকীয় চেয়ারে<br />বসে রাজসভার 'ক্রীতদাস' হওয়ার বাসনাটা <br />মূলত জেগেছিল তোমাকে, হে আমার চিরপ্রেমিকা<br />জীবনের বন্ধনে আবদ্ধ জীবনসঙ্গিনী, হরিণী <br />আঁখিবিশিষ্ট রমণী, আমার প্রিয়তমা সহধর্মিণী—<br />তোমাকে, শুধু তোমাকে পাবার আকাঙ্ক্ষায়! <br />আজ আর তোমাকে পেতেও আমার ইচ্ছা হয় না; <br />আজ আর ছুঁতে ইচ্ছে করে না তোমার অতিসুন্দর থুতনি<br />ছুঁতে ইচ্ছে করে না তোমার চিবুকের ছোট্ট তিলটি<br />আজ আর আমার দিতে ইচ্ছে করে না আমার গভীরে<br />টগবগিয়ে ছুটে চলা দুরন্ত প্লবগ প্রেম! <br />তোমার জন্যে আমার দাঁড়াতে ইচ্ছে করে না<br />তোমার অপক্ষাতে ওয়েটিংরুম লাগে খুব বোরিং <br />তোমাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করলে হয়ে যায় ব্যাপক স্মোকিং<br />তোমাকে স্বপ্নে দেখার ভয়ে আজ আর আমার <br />ঘুমাতেও ইচ্ছে করে না! </p>
<br /><p>রাজপ্রসাদের সমস্ত রাজকীয় চেয়ারের স্বপ্নে লাথি মেরে <br />আমি সর্বহারাদের গেরিলাযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে চাই <br />পারমাণবিক যুদ্ধের প্রাকমুহূর্তে আমি আমার <br />সেই প্রেমিকাকে ফেরত চাই, যে স্বেচ্ছায় টেনে নিয়েছিল <br />আমার বেদনাবিদ্ধ বিরহদগ্ধ কান্নাসিক্ত হাত<br />তার হাতের অনামিকায় কোনো পরপুরুষের দেয়া<br />সোনার আংটি ছিল কিনা, আমি মনে করতে পারছি না পরপুরুষের স্ত্রীকে ভালোবাসা পরকীয়া কিনা, আমি <br />তাও জানতে চাচ্ছি না, আমি শুধু জানি—<br />সে চেয়েছিল আমাকে <br />তীব্রতম তৃষ্ণার্ত দিনগুলিতে, আমি শুধু জানি<br />তীব্র ভালোবাসা সত্ত্বেও আমি তাকে চাই নি নিতে <br />আমার অতিব্যক্তিগত একান্ত বিছানাতে<br />শুধু চেয়েছিলাম যে-কোনো রাস্তায় অথবা ফুটপাথে<br />একবার, শুধু আর একটিবার <br />আমাদের মুখোমুখি দেখা হয়ে যাক;<br />সে অচেনার মত হনহনিয়ে চলে গেলেও<br />আমাকে সে চুপচাপ আড়চোখে দেখে নিয়ে <br />কিছু না বলে অপেক্ষার শেষ ট্রেনে উঠে গেলেও<br />আমি শুধু তাকে ফের তীব্রভাবে দেখতে চাই—<br />তাকে পুনর্বার দেখার আগে আমার চোখের আলো <br />চিরতরে নিভে গেলে— আমার অতৃপ্ত আত্মা<br />পৃথিবীর সর্ববিনাশী মুহূর্তে তার চিরচেনা<br />মুখচ্ছবির দিকে রবে তাকিয়ে! </p>
<br /><p>আমার আর কতবার মনে হবে, সত্যিই <br />আমি বেঁচে নেই! আরবকতবার মনে হবে— <br />আমার চতুর্পাশে পাহারা দিচ্ছে একঝাঁক শকুন<br />আমি মরে গলে, পঁচে গেলে ওরা খুবলে খাবে<br />আমার শরীর, যে শরীর তোমাকে 'কবুল' <br />বলার পরও পায় নি চরমতম সুখ! <br />যে শরীরে আজও ভালোবেসে কেউ <br />ছিটাই নি দু-একটা বকুল! <br />যে শরীর আলিঙ্গন চাইতে প্রিয়তমার কাছে<br />পেয়েছে কেবলই অবজ্ঞা, যে শরীর <br />কদিন পর মিশে যাবে মৃত্তিকার সাথে <br />পোঁকামাকড় খেয়ে যাবে কিছুদিন পর <br />তোমার আমার পরস্পরের স্পর্শগুলি, আর অন্তহীন <br />ভালোবাসাবাসি! </p>
<br /><p>আমার বারংবার মনে হয়, তুমি আমার নও<br />আমি আর কোনোদিনও চাই না, তুমি আমার হও<br />যে প্রাণ ছুঁয়ে বলেছিল, 'ভালোবাসি'— সে কি তুমি নও? <br />নাকি তোমার মতন দেখতে অন্য কেউ? <br />নাকি বৃষ্টিস্রোতের ছদ্মবেশে ঝিকিমিকি রৌদ্রের ঢেউ?<br />আমার আবার মনে হয়—<br />আমি কি সত্যিই আছি আজো বেঁচে?<br />তুমি কি সত্যিই ছিলে একাকী নৈঃশব্দের ভেতর<br />একটা অপ্রকাশিত চিৎকার হয়ে?<br />অরণ্যের নীল অন্ধকারে ঝলমলে আলো হাতে <br />মোহনীয় ৩ জন রমণীর সাথে <br />আমার কি কিছু হয়েছিল কোনোদিনও? <br />তৃতীয় মহাযুদ্ধের পরবর্তীকালীন পৃথিবীতে <br />পুনর্জন্ম হবে কি সমাজতন্ত্রের? <br />আমি কি আবার একটা উষ্ণ প্রেমময় আলিঙ্গন পাব? <br />মেঘে মেঘে জ্বলে ওঠার মতন বৈদ্যুতিক ভালোবাসা <br />পাব কি আমি কখনো প্রিয়তমা রমণীর সঙ্গমে? <br />আমি জানি না! </p>
<br /><p>আমি মানি না, কবির ঠোঁটে চিরদিন <br />চুম্বনের বদলে শুধুই পুড়বে সিগারেট <br />আমি মানি না, প্রেমিকের মগজে কেবল বারুদ জমবে<br />অপ্রেমিকের টাকার ঝনঝনাতি প্রেমিকারা হেলে দুলে<br />পার্কে ঘুরবে, মদের বারে নেশার ঘোরে নাচবে <br />কাগুজে নোটের গন্ধ শুঁকে আমাদের প্রেমিকারা <br />শুয়ে পড়বে যার তার বিছানায়! <br />আমি মানি না, অন্ধরা প্রিয়তমার প্রিয়মুখ<br />কোনোদিনও আঁখির আলোয় দেখতে পাবে না! <br />আমি মানি না, নিঃস্ব মানুষ বিশ্বপ্রেমিক হতে পারবে না! <br />পরস্ত্রী কখনো কবির স্ত্রী কিংবা প্রেমিকা হতে পারবে না— তা আমি মানি নি কখনো, মানি না আজও<br />মানব না কোনোদিনও !</p>
<br /><p>আমি মানি না, প্রেম শুধু শারিরীক <br />কিংবা ভালোবাসা শুধু মানসিক<br />আমি মানি না, মানবজন্ম ঐশ্বরিক <br />কিংবা শুধুই প্রাকৃতিক! <br />আমি মানি না, কোনো নারী কিংবা পুরুষ <br />কারুরই একান্ত ব্যক্তিগত<br />আমি মানি না, দুনিয়ার কেউ-ই হুবহু কারো মতো<br />আমি মানি না, পুরুষমাত্রই প্রেমিক<br />কিংবা সব অপরাধীই পাশবিক!<br />আমি মানি না, ভালোবাসার আগুনে <br />চিরতরে দাউ দাউ করবে কেউ! <br />আমি মানি না, ভালোবাসার ফাগুনে <br />নরনারীর হৃদসাগরের তীরে আচড়ে পড়বে<br />চিরকালীন প্রশান্তিময় সুনীল ঢেউ! <br />আমি কখনো স্বীকার করি না, ফুলের বৃষ্টিতে<br />চিরকাল ধরে কেবল ভালোবাসার রৌদ্রই ঝরে!<br />আমি জানি না, কেন ভালোবেসে কোমল চন্দ্রমল্লিকা প্রিয়তমার কানে গুঁজে দিলে ফেরত পেতে হবে<br />বেদনার জ্বলন্ত উত্তপ্ত নীল শিক!</p>
<br /><p>আমি শুধু জানি— <br />আমি কিছুটা পারিবারিক<br />বাকীটা অসামাজিক! <br />আমি স্বীকার করি—<br />আমি কিছুটা বৈপ্লবিক <br />বাকিটা ব্যক্তিকেন্দ্রিক! <br />আমি মানি কিংবা না-মানি—<br />আমি কিছুটা সিজোফ্রেনিক<br />বাকীটা প্রেমিক!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love-7/ভালোবাসার আত্মজীবনী— ৭2024-03-12T05:21:11-04:002024-03-15T06:08:21-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>৭.<br />আমি তো সদা সর্বদা ভেবেছিলাম, আমার ভালোবাসার তীর তোমার লক্ষ্যে অব্যর্থ! অথচ তুমি বুঝিয়ে দিলে, বেদনার নীলে রঙিন প্রেমে এ জীবন যাবে একদিন থেমে! একদিন অশ্রভেজা আঁখিতে নামবে দারুন খরা কিংবা মরুবৃষ্টি। একদিন বুকের খরস্রোতা নদী উপচে বইবে মহাপ্লাবন, তাতে নিঃস্ব হয়ে ঊর্ধ্বাকাশে নিবদ্ধ হবে আমার শূন্য দৃষ্টি! মহাকালের ঝঞ্ঝায় ঝরে যাবে আমার সকল সৃষ্টি! </p>
<br /><p>আমার সুনীল আকাঙ্ক্ষার তীর তোমার সুকঠিন প্রাচীর ভেদ করতে পারি নি বলে তুমি কি জয়োল্লাস করেছিলে কখনো? আমি যেদিন জেনেছি ভালোবাসার ছদ্মবেশে আমার সঙ্গে তুমি চালাচ্ছো ছায়াযুদ্ধ— সেদিন, ঠিক সেই মুহূর্তে আমি আত্মসমর্পণ করেছি তোমার পদতলে আমার পৌরষকে রেখে। আমার ভালোবসার স্বাদ তুমি কি কখনো দেখেছিলে ছেঁকে?</p>
<br /><p>আমি আর কতবার বলব, হে প্রেমময়ী নারী, আমি নই কোনো প্রেম-শিকারী! আমি শুধুই এক অতি সাধারণ কপর্দকহীন প্রেমিক। যে ভালোবাসতে পারে নাই কখনো তোমারে যুক্তিতে বুদ্ধিতে! আমি সেই প্রেমিক, যে তোমাকে নিদারুন গ্রীষ্মে দুফোঁটা শীতল বৃষ্টি পারে নি দিতে! যে তোমার বুকে জাগাতে পারে নি সোনালি আগুনঝরা কৃষ্ণাচূড়াময় রক্তিম ফাগুন সুতীব্র শীতে! </p>
<br /><p>তুমি বলেছিলে, আমার কবিতা সুনীল গাঙ্গুলির চেয়েও বেশি রোমান্টিক! এটা শুনে আমি তোমার বুকের তলদেশে খুঁজতে যাই নি, বয়ে যাচ্ছে কিনা অনাদিকাল থেকে কোনো 'হিমযুগ'! আমি আজন্ম জেনে আসছি, আমার কপালে সয় না অতিসুখ! আমাদের বড় ভাবীর রূপে বিমুগ্ধ অন্ধ হয়ে তুমি বলেছিলে, ওনাকে লাগে 'মডেল' 'মডেল'। তুমি কি জানো, মডেলের মত দেখতে নারীরাই সাধরণত হয় অতিমাত্রায় আঁতেল! তুমি কি জানো হে ছলনাময়ী নারী, তুমি পদতলে মাড়িয়ে বীরদর্পে চলে গেছো জেনেও আমি আজো তোমাকে ভাবি না হত্যাকারী!</p>
<br /><p>তুমি মেঘনার ওপারের আলো নও আজ আর! শুধু ব্যর্থ নয়— মৃত হয়ে গেছে প্রিয় 'ভালোবাসা' তোমার আমার! তোমার বুকের পিপাসায় আমি ফিরব না, আমি ফিরব না আবার, আমি ফিরব না দ্বিতীয়বার, আমি ফিরব না পুনর্বার, আমি ফিরব না কখনো কোনোদিনও আর! </p>
<br /><p>(সমাপ্ত)</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love-6/ভালোবাসার আত্মজীবনী— ৬2024-03-11T00:54:45-04:002024-03-11T00:54:45-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>৬.<br />নদীটার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমার চক্ষে জেগেছিল আলোর পিপাসা! তোমার দুঃখে ডুবে যেতে যেতে যখন জলের আকাশে অবশেষে নিঃশেষিত হাবুডুবু এক নির্জন নিঃসঙ্গ দ্বীপ আমি, নদীটা আমাকে পাঠিয়েছিল কিছু ঢেউ– আলোর নেশায় উন্মত্ত আমার প্রাণে লাগে নি সে ঢেউয়ের ছোঁয়া, তোমাকে ছোঁয়ার আত্মগ্লানিতে অনেক পুড়েছি আমি, ব্যর্থ ক্রোধে আমি ক্রমাগত আকাশের দিকে ছুঁড়েছি সোনালি ফুলের ধোঁয়া, তীব্র প্রতিশোধেও আমি হই নি বেশ্যাপাড়ার খদ্দের! টাকা দিয়ে প্রেম কিনে চাহিদা পূরণের ইচ্ছা আমার কোনোদিনও ছিল না! তুমি তো 'ভালোবাসি' বলেছিলে আমাকে, তুমি তো আমার দৃষ্টিতে উন্মুক্ত করেছিলে তোমার দেহভূমি— তবু কেন সেই ভূমিতে আমাকে চাষাবাদের অধিকার দাও নাই তুমি! আমিও তো শত সহস্র শব্দে নৈঃশব্দ্যে তোমাকে 'ভালোবাসি' বলেছিলাম— তবে কেন তুমি তোমার পাহাড়ি ঝর্নায় আমাকে ভেজাও নি কোনোকালে! তুমি হয়ত জেনে খুশিই হবে– তুমি চলে যাবার পর আজ অবধি অসংখ্য জ্বলন্ত মৃত সিগারেট ব্যতিত কেউ ছোঁয় নি আমার অধর! </p>
<br /><p>একই আকাশের তলে আমরা তো পেয়েছিলাম পরস্পরকে চিরকাল না হোক কিছুকাল আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখার মতন প্রণয়– তবু কেন তোমার এত ভয়, এত এত সংশয়– কেন বুকে জড়িয়েও ভাসিয়ে দিলে আমাকে প্রত্যাখ্যানের ঘোলাটে স্রোতে? কেন আমার কাতর স্পর্শেও তোমার গোপন নীল পদ্মে ফুটে নি কোনো পাপড়ি ?</p>
<br /><p>বৃষ্টিকালীন দুপুরে তোমার যে প্রেমিক খুব আদরে তোমাকে জড়িয়ে ধরেছিল একই ছাতার তলে! তাকেও কি তুমি প্রত্যাখ্যানের ছেঁড়া কাগুজে ফুল উপহার দিয়েছিলে আমার মতন? ভালোবেসে অবশেষে তাকেও কি তুমি মিশিয়ে দিলে নোনাজলে? কী এমন সুখ পাও তুমি প্রেমিকের রক্তিম হৃদয় বেদনার নীলে রাঙিয়ে! আমার সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে তোমার যে শুভাকাঙ্ক্ষী তোমাকে মোবাইল সেট উপহার দিয়েছিল, সে কি শুভাকাঙ্ক্ষীর ছদ্মবেশে কোনো সুগারড্যাডি ছিল? সে কি নিয়েছিল তোমাকে, সে কি নিয়েছিলে সিজোফ্রেনিক প্রেমিকের প্রেমিকাকে, সে কি নিয়েছিল একজন চব্বিশ বছর বয়সী টগবগে তরুণ উদীয়মান কবির প্রেমাস্পদকে– তখনো পর্যন্ত সবচাইতে মূল্যবান সম্পদকে— ব্যক্তিগত বিছানায়? আমি আবারও বলি— সুগারড্যাডিরা ব্যক্তিগত বিছানায় যাদের ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, কবিরা চিরকালই তাদের মনের বেদিতে রেখে পূজা করে! তবে তুমি জেনে রাখো— তুমি যারই ব্যক্তিগত বিছানার সঙ্গী হবে জীবনভর— তাকেই ঘৃণা করবে এই বিক্ষোভের আগুনে জ্বলন্ত ক্ষুধার্ত বঞ্চিত হৃদয়! তোমাকেও তার চেয়ে কম নয়! </p>
<br /><p>না, নেই কোনো ভয়— আমি কখনোই তোমাকে জিজ্ঞেস করব না এসবের কিছুই। </p>
<br /><p>শুধু জিজ্ঞেস করি, তুমি কি এখনো কানে ফুল গুঁজে হাসো ভোরবেলার রোদের মতন? তুমি কি এখনো চুলে মাখো জুঁই ফুলের সৌরভে সুবাসিত তেল? তুমি কি এখনো সর্বাঙ্গে মাখো সুগন্ধি সাবান? কতকাল আমি পাই না সেই সাবানের ঘ্রাণ! তুমি কি এখনো বুকের স্তবদ্ধতায় জড়িয়ে আছো আমার নিকোটিন পোড়া ঠোঁটে ফুটে ওঠা প্রেমময় আদুরে চুম্বকীয় চুমুগুলো? এখন কি সন্ধ্যা নামতেই তুমি হও হাওয়ার স্পন্দনে মোমের আলোর মতন তন্দ্রায় ঢুলু ঢুলু? </p>
<br /><p>তোমার প্রেমের নেশায় নয়— প্রত্যাখ্যান আর বঞ্চনার ভয়াল থাবায় আমি তলিয়ে গেছি আঁধারে! পুনর্বার উঠে দাঁড়বার প্রত্যয়ে আমি হয়েছি কেবলই মাতাল! মৎস্যশিকারীর মতন তোমাকে পাবার তাড়ায় আমি জলের দেশে ছদ্মবেশে পাতি নি কোনো জাল! আমি শুধু চেয়েছি তোমার স্মৃতির উঠোনে কিছু স্পন্দনরত জোনাকি উড়ে বেড়াক— তোমার স্বপ্নের নীলিমায় উড়ন্ত ঘুড়ির মতো। আমি শুধু চেয়েছি তুমি মায়াবী স্পর্শে মুছে দাও আমার সবগুলো বিগত গোপন ক্ষত! আমি শুধু চেয়েছি তুমি একান্তই আমার হও— আমি কি জানতাম, তুমি শুধু আমার ব্যক্তিগত 'তুমি' নও! আমি যেমন আজ আর তোমার ব্যক্তিগত 'আমি' নই...</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/valobasar-attmojiboni-5/ভালোবাসার আত্মজীবনী—৫2024-03-10T06:43:43-04:002024-03-10T06:43:43-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>৫.<br />চন্দ্রিমাকে হারানোর সন্ধ্যায় আকাশের সমস্ত নক্ষত্রেরা জ্বলে ওঠার বদলে কেঁদেছিল খুব! সেই সন্ধ্যায়, সেই ঝুম বৃষ্টির বিচ্ছেদে আচ্ছাদিত সন্ধ্যায়– আমার পরনে ছিল সেই নীল গেঞ্জিটা! হৃদয়ের রক্তক্ষরণে নাকি বেদনার নীল হয়ে যায় রক্তিম? অথচ আমি কেন রুপোলি বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়েও রাঙাতে পারি নি হৃদয়টাকে? আমি তো তোমার মত চাইলেই ভালোবাসতে পারি না যাকে তাকে। সত্যি বলতে, এখন এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমি ভুলতে পারি নি চন্দ্রিমাকে, ভুলতে পারি নি অতি ব্যক্তিগত নদীটাকে, আমি সত্যিই আজও ভুলতে পারি নি তোমাকে! আমি ভুলতে পারি নি সেই ভয়ানক বিষধর স্মৃতিটাকে! </p>
<br /><p>ভলোবাসায় ভরপুর একটা বৃষ্টিভেজা দুপুর আমিও তো চেয়েছিলাম তোমার পদতলে মাথা পেতে। তুমি সেদিনের সেই দৃশ্যে শুধু দেখেছিলে একটা আত্মমর্যাদাহীন ব্যক্তির নতশির! তুমি সেই নতশিরের তলে খুঁজে দেখো নি কোনো চিরবঞ্চিত প্রেমিকের কান্নার আগুনে দগ্ধ রক্তিম মুখচ্ছবি! আমি তোমার জন্য বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ছিলাম আমার অতিপ্রিয় জীবনটাকে পর্যন্ত! তুমি হয়ত আজ জানো, ভালোবাসার জন্য আমি বিসর্জন দিতে পারি সবই!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/aj-ekjon-kobir-biye/আজ একজন কবির বিয়ে 2024-03-08T08:58:59-05:002024-03-15T06:09:09-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কবিকে ভালোবাসতে অনেক শরম লাগে<br />কবিকে বেদনা দিতে হয়তো খুব আরাম লাগে<br />কবিকে প্রত্যাখ্যান করতে প্রত্যেকেরই দ্বিধা নেই<br />কবির কাব্যে নারীর সঙ্গে ফুলের উপমা সেই!<br />কিন্তু কবিকে বিয়ে করতে কপালে চিন্তার ভাঁজ!<br />কবির জন্য বউ সাজতে লাগে খুব খুব লাজ! <br />কবিকে বিষাক্ত শূলে চড়িয়ে করো ব্যথিত নীল<br />কবির বাসররাত নিয়ে 'কবিতা' লাগে অশ্লীল!<br />কবিদের কি রক্ত-মাংসের শরীর থাকতে নেই? <br />কবিরা কি প্রেমরস আজন্ম ঢালবে পাতাতেই?</p>
<br /><p>ফুলের সঙ্গে মিলিত হবার সুখ কবির জন্য <br />চাঁদের পাহাড় জয় করার মতো; কবিরা বন্য! <br />পকেট ফাঁকা এবং পরিপাটি নই আমি প্রিয়া—<br />তুমি প্রিয়তম নারী, তাই নারীদিবসে করছি বিয়া!<br />সোনার গয়না দিতে পারিনি বলে দুঃখ পেও না<br />কিছু ফুলের গয়না আর সাথে একটা আয়না <br />কিনতে যাব বাজারে, শুধু তুমিই হৃদমাঝারে!<br />আজ ইচ্ছে না করলে ডাক দিও আসছে আষাঢ়ে<br /> বৃষ্টিভেজা ফুল দিব, প্রেম দিব চাও যতবার! <br />অতীতের সব দ্বার রুদ্ধ, তুমি শুধুই আমার!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love-4/ভালোবাসার আত্মজীবনী—৪2024-03-06T20:06:45-05:002024-03-07T06:52:07-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>৪.<br />রাত্রিকালীন পৃথিবীতে নদীর জলে কেমন এক উজ্জ্বল চাঁদের প্রতিমা জ্বল জ্বল করে! আমার হৃদয়ের পাঁচতলা ভবন সেই নদীর ঢেউয়ে কেমন যেন ভেঙে পড়ে! হতাশার ঘন কৃষ্ণ আঁধারে দুচোখে আলোর পিপাসা কেন জেগেছিল সেদিন, আমি জানতে পারি নি আজ অবধি। তুমি যদি সত্যিই হও আলোয় ভরা নদী, তুমি যদি সত্যিই হও জ্যোৎস্নার জননী, তুমি যদি সত্যিই হও মেঘের আড়ালে চিরপ্রেমিকার মতো প্রতীক্ষারত চাঁদ— তবে কেন আমি তোমার জন্য বিসর্জন দিয়েছি আকাশ কিংবা পাহাড় ছোঁয়ার সাধ? কেন আমি উড়ে উড়ে হাওয়ার তরঙ্গে ভেসে বেড়ানোর বদলে কেবল পাতালের অন্ধকারেই তলিয়ে গেলাম? তুমি কি কখনো জানতে চেয়েছিলে, কেন আমি হঠাৎ হয়ে গেলাম বদ্ধ উন্মাদ! </p>
<br /><p>এসব না জানলেও খুব বেশি ক্ষতি নেই আর! ভালোবাসা ভিক্ষা চাইতে গিয়েই আমি আটাশ দিন একই জামা গায়ে ঘুরে বেড়িয়েছি পথে প্রান্তরে! তবুও তো একটু প্রেম জাগল না তোমার অন্তরে। চাঁদনিরাতে একফোঁটা জ্যোৎস্নাও ঝরে পড়ল না তোমার আলোকিত মুখ থেকে। মাতৃগর্ভে ঘুমন্ত শিশুর মতো নিস্তব্ধ আঁধারে তুমি শুয়ে ছিলে বেঁকে! জানলার ওপাশে দুহাত মেলে একটা নির্বাক মূর্তি অবাক চোখে তোমাকে তো চেয়েছিল! </p>
<br /><p>কামনার জলজ ঢেউয়ে ভাসাতে না পারো বেদনরা অশ্রুতে ডোবাতে তো পারতে তুমি তারে— চিরতরে! এক আকাশ না হোক, তোমার মেঘাচ্ছান্ন শীতল হৃদয়াকাশ থেকে নামা এক পশলা বৃষ্টিরও কি যোগ্য সে ছিল না? কিনে মিছে মিছে তার জন্য আজ আর করো তুমি শোক? আলোক হসপিটালে তার রক্তে যেদিন ধরা পড়ল উচ্চমাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইড, সেদিন তো তুমি দৃষ্টিসীমার ভিতরেই ছিলে? সেদিনই তো তুমি তারে পারতে থামাতে। হাতে হাত রেখে না হোক, চোখে চোখ রেখে না হোক, এমনকি, মুখোমুখি না হোক— ফোনকলে তো বলতে পারতে– "অনেক হয়েছে আর না, আজ থেকে তুমি আর কোনোদিনও সিগারেট ছোঁবে না! আসছে শীতে তোমার ওষ্ঠ ছোঁবে আমার অধর! আসছে শীতে পঙক্তিতে পঙক্তিতে তুমি পাঠিও প্রেমের পদ্য! শীতের শেষে ভালোবেসে তুমি পাঠিও একটা বাসন্তী শাড়ি! শীতের শেষে আসছে ফাল্গুনে তুমি বিয়ের প্রস্তাব পাঠিও আমার বাড়ি! আসছে ফাল্গুনে তোমার ঠোঁটের আগুনে জ্বলবে দুটি অতি আশ্চর্য মেঘফুল। আসছে ফাল্গুনে শরীরী আগুনে তোমাকে পোড়াব খুব! " তুমি এসবের কিছুই বলো নি। আমার ফোনকল তোমার ব্ল্যাকলিস্টে নিঃশব্দে চিৎকার করতে করতে চিরতরের জন্যই গেল থেমে! আমি তোমাকে নিয়ে কিছুটা কনফিউজড হলেও তোমার ইচ্ছেমেঘের সব পাহাড়ই আমার চেনা। আজও আমি জানি না, কী তোমার স্থায়ী ঠিকানা? শুধু জানি, আজ তোমার কন্টাক্টলিস্টে আমি শুধুই একটা নাম্বার অথবা নাম!</p>
<br /><p>অতঃপর তুমি যতবারই ফিরেছো, ততবারই আমি জানিয়েছি তোমাকে প্রণাম! কিন্তু দুজনেই পেয়েছিলাম, তৃতীয় আরেকজনের দগ্ধ হৃদয়ের গন্ধ! তবুও তো ভালোবাসতে চেয়েছিলাম পুনর্বার। তবুও তো প্রত্যাখানের অপমান বুকে চেপে তোমার দিকে বাড়িয়েছি হাত। আজও আমি পাঁজর খুলে কাউকে দেখাই নি তোমার দেওয়া অজস্র গভীর গোপন আঘাত! তুমি তো জানো, আমি ভালোবাসার জন্য হয়ে যাই কতটা অন্ধ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love-3/ভালোবাসার আত্মজীবনী—৩2024-03-06T07:33:26-05:002024-03-06T07:35:35-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>৩.<br />নদীতে লঞ্চ ছাড়ার ঘন্টি বেজে উঠল এইমাত্র। এই ঘাট ছেড়ে লঞ্চ বয়ে যাবে অন্যঘাটে! জলের স্রোতে ভাসতে ভাসতে সে ছুটছে একটা ব্যর্থ বিষাক্ত নগরের সীমান্তে! নদীদূষণের বিরুদ্ধে আজকাল আমি প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়াই না। বরং তার মুমূর্ষু নিঃশ্বাসের শ্বাসকষ্ট নিয়ে বুড়িগঙ্গার দোয়াতকালি দিয়ে আমি সাজাই ট্রাজিক অক্ষরমালা!</p>
<br /><p>রূপবতী চাঁদকে জলবতী নদীর বুকে জ্বলতে দেখে আমি ঝাঁপ দিয়েছি, এটা সত্য! নদীর বুকে যে চাঁদের মরীচিকা জ্বলে, পূর্ণিমারাতে আকাশ হতে যে জ্যোৎস্না গলে গলে ঝরে পড়ে নদীজলে, আমি তার কিছুই একান্ত নিজের করে পেতে চাই নি! আমি চন্দ্রিমার আঘাতে চূর্ণ হয়ে একজন পরিপূর্ণ কবিই হতে চেয়েছি চিরকাল, আমি স্নিগ্ধ রুপোলি জ্যোৎস্নার বিপরীতে দাঁড় করাতে চেয়েছি বিদ্রোহের লাল আগুনকে। আমি নদীপ্রেমের ছদ্মবেশে কেবল তুমি 'নারী'–কেই ভালোবাসতে চেয়েছি! সোনালি ডানার চিলের পরিবর্তে আমি ধূসর ডানার চিলই দেখেছি চিরদিন! আমি চিল হতে চাই নি, আকাশজুড়ে ঘুরে ঘুরে অবশেষে নদীর হৃৎপিণ্ডে ঠোকর মেরে পেতে চাই নি নোনতা মাংসের স্বাদ!</p>
<br /><p>হে নদী, আমি পেতে চাই নি তোমাকে ক্ষুধায়, আমি পেতে চাই নি তোমাকে তপ্ত শূন্য মরুর পিপাসায়! আমি হতে চাই নি তোমার 'বাসর' নামক কবরের শয্যাসঙ্গী। কনকনে শীতের জড়োসড়ো কম্পনরত নিশিতে আমি কোনোদিনও চাই নি তোমার আগুনভরা বুকের দুগ্ধবতী উষ্ণতা! আমি শুধু চেয়েছি বৃষ্টিতে বৃষ্টিতে তুমি হও পূর্ণবতী! আমি জানতে চাই নি, তুমি কতটা সতী? আমি শুধু চেয়েছি রক্ত-মাংসের শরীর তোমার শরীরে নিয়ে না হলেও হৃদয়ে জমে থাকা মেঘবতী জলের ছোঁয়ায় কিংবা কান্নায় হও তুমি গর্ভবতী! লাল ওড়নায় ঢাকা তোমার পাথুরে বুকে ঘন হয়ে ওঠা পিপাসা টের পেয়েছি বলেই আমি গোলাপের পরিবর্তে তোমার হাতে তুলে দিয়েছি এক পেয়ালা গরম চা! তুমি মার্কেটভ্যালু দেখে ভালোবাসো শুনে আমি একটু আশ্চর্য হলেও তোমাকে একটা জুসের বোতলও দিয়েছি! আমি তোমাকে নিয়ে এক-দুটো খুচরা কবিতাও তো লিখেছি, হে নদীর নামে নামাঙ্কিত 'নারী'। আমার হৃদয়ের নদীতে ঢেউ খেলতে খেলতে তোমার লম্বা লম্বা যে চুলগুলি অতি সুন্দর নিতম্বে এসে থামলো, তাতে দু'একটা হলদে ফুল আমারও গুঁজে দিতে ইচ্ছে হয়েছিল কখনো কখনো! নদীর নামে তোমার নাম হলেও আমি তো তোমাকে 'নারী' হিসাবেই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম চিরকাল! 'সালমান মাহফুজ' এর বদলে আমি যদি 'সালমান খান' হতাম, আমি হয়তো তোমাকে পেতাম! নদীর পরিবর্তে নূপুরের সাথে তোমার তুলনা দিলে তুমি হয়ত আমার প্রতিটা প্রেমের কবিতা-ই পড়তে। প্রখর রৌদ্রের দুপুরের পরিবর্তে একটা শান্ত স্নিগ্ধ ক্লান্ত বিকেলে তোমার সাথে আমার দেখা হলে হয়তো আজও তুমি আমাকেই ভালোবাসতে! </p>
<br /><p>আমিও বেশি কিছু চাই না আজ আর! আমি চাই, তুমি অতিশীঘ্রই টঙ্গী থেকে তিতাসের তীরে ফিরে যাও। শুধু নামে নয়, সত্যিকার অর্থেই তুমি একটা জলবতী নদী হও। কবির অবিরাম অক্ষরের বৃষ্টিতে তুমি কানায় কানায় পূর্ণ হও। কবির মগজে জ্বালিয়ে দাও জলের আগুন, যাতে মুছে যাবে সমস্ত আদিম পাপ, আর তুমি হবে পুণ্যবতী!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love-2/ভালোবাসার আত্মজীবনী—২2024-03-05T12:10:42-05:002024-03-05T17:39:17-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>২.<br />আমারও অতি ব্যক্তিগত একটা গোপন নদী ছিল! গোপন কি কখনো আপন হয়? আমি জানি না। আমি জানি না, সেই নদীটা কি কখনো বুঝতে পেরেছিল আমার অনুভূতির ভাষা। আমি জানি না, জলের কাছ থেকে নদী কখনো ছুটি নেয় কিনা! আকাশের ঠিকানায় নীল অক্ষরে নদী কোনো চিঠি লিখে কিনা! আমি শুধু জানি, নদীটা একটা গোপন দুঃখের কড়া উত্তাপে শুকিয়ে গিয়েছিল! সূর্যের সোনালি উষ্ণ চুম্বনে সে নদী থেকে হয়ে গেল সর্পিল মরুপথ! </p>
<br /><p>আমি তো তাকে কোনো দুঃখ দিতে চাই নি! আমি তো চাই নি, কান্নার জল বুকে নিয়ে সে বয়ে যাক নৈরাশ্যের নীল জলে গর্জনরত সমুদ্রের দিকে! আমি শুধু চেয়েছি শীতের রাঙা সকালে ইউক্যালিপটাসের ছায়ায় দাঁড়িয়ে শরীরী মায়ায় একবারের জন্য হলেও তাকে 'নারী' হিসাবে পেতে। সন্ধ্যের অন্ধকারে তার প্রতি এক মুহুর্তের একটা আলিঙ্গন আমি আমার অধিকার বলে বিবেচনা করি আজও। তার পিপাসার্ত চোখে সাইবেরিয়ার শীতার্ত পাখিগুলো আজও ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ায় কিনা, আমি জানি না। আমার কথা তার আর আজ মনে আছে কিনা? তাও জানি না। একটা পাশাপাশি পথ ধরে হাঁটার মতো সন্ধ্যা সে তো আমাকে দিয়েছিল! ভীষণ রোদের উত্তাপে সে আমার মাথার উপর ছাতা না হলেও ছায়া তো হয়েছিল এক দুপুরে! লাল চায়ের কাপ হাতে ক্লান্তি চোখে নিয়েও সে তো হেসেছিল সতেজ সকালের রোদের মতো। চায়ের কাপে লাল গোলাপের পাঁপড়ির মতো ঠোঁট মেলে চুমুক দেওয়ার মুহূর্তে আমি চুম্বনের বৃষ্টিতে তাকে ভেজানোর আকাঙ্ক্ষা কি পাপ ছিল? <br />নারীর নরম গালে কিংবা নদীর কোমল জলে যদি রোদ ঝিঁকিমিকি ঢেউ খেলে, সেখানে কবির আকাঙ্ক্ষা, এমনকি অধিকার জন্মানোটাও অন্যায় বলে বিবেচনা করি নি কোনোকালে! </p>
<br /><p>কবির কল্পিত চোখে নদী হয়ে যায় নারী, নারী হয়ে যায় নদী! কিন্তু আমার বন্ধ চোখের অন্ধ গলিতে তুমি চিরকালীন রোদের ঢেউ... </p>
<br /><p>তোমার নিজস্ব পাখা উড়িয়ে হেলেদুলে চলার ভঙ্গিতে আমি চাই নি কোনোকালে বাঁধা দিতে! তোমার স্বপ্নে হয়ত ছিল, দাসত্বের ফুলে সজ্জিত একটা বিছানা কিংবা রাজকীয় চেয়ার, এবং সেই বিছানায় একটা মোটাতাজা ক্ষুধার্ত পশুই কেবল তুমি চাও নি, চেয়েছো তারও অধিক, চেয়েছো শয্যাসঙ্গীর পাশাপাশি তার মাথাতে থাকুক একটা মুকুট, পরিবার-পরিকল্পনায় হোক সে বিশেষ পারদর্শী। তুমি মা হতে চাও নি বলে যে টুপিপরা যুবক তোমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছিল– তার সঙ্গে ফের তোমার দেখা হলে বলিও– কবি বলে গেছেন— "নদীর গর্ভে মানুষ জন্মায় না, বিলীন হয়ে যায়! নদীর ঢেউয়ে মানুষের যে স্বপ্নগুলো ভাঙে, অপেক্ষা শেষে ওপারের চরে ঠিকই স্বপ্নগুলো পুনরায় জন্মায়–যারা অপেক্ষা করতে জানে না, তারা নদীকে ভালোবাসতে পারে না।"</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/autobiography-of-love/ভালোবাসার আত্মজীবনী—১2024-03-02T23:46:19-05:002024-03-25T19:37:15-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>১.<br />আমি কেন জন্মাইছি, তা আমি আজও জানতে পারি নাই। দুনিয়ার প্রতিটা প্রাণীর মতো আমিও জন্মাইছি মাতৃগর্ভের অন্ধকারে! ভূমিষ্ঠ হওয়ার মুহূর্তে আমি বাইরের পৃথিবীতে প্রথমেই কি অন্ধকার দেখিছিলাম? তা আজ আর আমার মায়েরও স্মরণে নাই। </p>
<br /><p>জীবনভর পৃথিবীর বাতাসে আমি জীবিত থাকার মতো হয়তো যথেষ্ট অক্সিজেন পেয়েছি! কিন্তু বেঁচে থাকার মতো একটু অক্সিজেনও আমি পেয়েছি কিনা, আমি জানি না। <br />ইদানিং আমার মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে! অন্ধকার বিছানায় বিষাদগ্রস্ত ক্লান্তিতে জেগে থাকি! পৃথিবীতে শুধু একটা মানুষই এই ক্লান্তি টের পায়– তিনি আমার আম্মা! </p>
<br /><p>ওনার এই ক্লান্তি দূর করবার ক্ষমতা আজ আর নেই, তাই উনিও নিরুপায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন! আমি মুখ ফিরিয়ে নিলে উনি আঁচলে মুখ মোচেন! ইদানিং ওনার কান্না দেখলে আমার চোখ হতে আর অশ্রু গড়ায় না! আমার চোখে আগুন জ্বলে উঠে! এই আগুন যে পৃথিবীর সবচেয়ে হিমশীতল আগুন, তা আমি না বুঝলেও আম্মা ঠিকই বুঝেন। এই আগুন এতটাই অক্ষম যে, এই আগুনে আম্মা হাত রাখলে চোখ দুটি হয়ে যায় অবিরাম ঝর্ণাধারা! </p>
<br /><p>ছোটবেলায় আম্মাই তো আমার কল্পনায় একটা স্বর্গের আল্পনা এঁকেছিলেন! সেই স্বর্গে আমি কেন তোমাকেই পেতে চেয়েছি, হে আমার ব্যর্থ প্রেমের প্রথম এবং প্রধান প্রতিনিধি! <br />ভালোবেসে মনে মনে গোপনেও তো আমি তোমাকে চাইতে পারতাম! কিন্তু আমি তোমাকে চেয়েছি প্রকাশ্যে। তুমি অন্যের বধূ বলেই কি তুমি আমার বন্ধু হয়ে থাকতে চেয়েছিলে শুধু? নাকি শরীরে সোনার গয়নার মতো তুমি মস্তিষ্কেও জড়িয়ে নিছো সামাজিক শেকল! যে সমাজ সকালে তুমি মারা গেলে বিকালে মাটির আবরণে ঢেকে তোমার লাশ পদতলে পিষ্ট করতে করতে তোমার মৃত চোখে অবশিষ্ট আলোটুকুও কেড়ে নেয়, তুমি সেই সমাজের ভয়ে আমাকে প্রত্যাখ্যান করলে? যে সমাজ আমি নামাজ পড়তে গেলেও সন্দেহের চোখে দেখে, আমি সেই সমাজ কোনোকালেই গুনি নাই!<br />জাহাঙ্গীরনগরের চিরসবুজ ক্যাম্পাসে আমি কবি হইতে যাই নাই, কবিত্বকে বিসর্জন দিয়ে আমি ওখানে ৪ বছর সমাজ-পরিবর্তনের রাজনীতিটাই করতে চেয়েছি । অথচ রাজপথে পাশাপাশি হাঁটার মুহূর্তে আমার কমরেডরা আমাকে সন্দেহই করেছে শুধু! তবুও আমি স্লোগান দিয়েছি, 'কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না!' অন্তরে ঠিকই তোমার মুখচ্ছবিটা ফুটে উঠেছিল! হৃদয়ে যে কণ্ঠস্বর থাকে, তা থেকে উচ্চারিত হয়েছিল–'কেউ পাবে, কেউ পাবে না– তা হবে না, তা হবে না!' আমি তো তোমাকে সত্যিই পাই নি, চন্দ্রিমা! তুমি কি জানো, আজ পর্যন্ত আমি কাউকেই পাই নি! একযুগ পার হল– তোমাকে ভালোবেসেছিলাম! ভালোবাসতে ভালোবাসতে হয়তো আমার এক জনম কাটবে, অবশেষে একদিন কি তুমি আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসবে?</p>
<br /><p>না, আমার আর কোনো প্রতীক্ষা নেই! কারুর জন্যই আজ আর প্রতীক্ষা নেই! না জীবনের জন্য, না মরণের জন্য। না আমার জন্য, না তোমার জন্য। অভিমান ভাঙাতে ভাঙাতে আমার দৃষ্টিতে বয়ে গেল এক সমুদ্র নোনাজল! না, সেই জলের উপর আজও আমি দেখি নি কোনো হংসী। সেই সমুদ্রপারে আজ আর কেউ বাজায় না বিরহের বংশী! অভিমান ভাঙাতে ভাঙাতে আজ আমি নিজেই ভেঙে গেছি, চন্দ্রিমা! </p>
<br /><p>তোমার কি মনে পড়ে? সন্ধ্যারাতের চাঁদের আলোয় ফোনকলের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে তোমার চোখে নামতো অমবস্যার ঘোরতর অন্ধকার! শরতের রাতের আকাশে তুমি জ্বলছিলে অন্য কারুর আকাশের চাঁদ হয়ে! আমার নিজস্ব আকাশ ছিল না সেদিন, তাই মাটির পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে দু'হাত বাড়িয়ে আমি শুধু দুমোঠো জ্যোৎস্না ভিক্ষা চেয়েছিলাম! একটা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট অথবা বুকে একটা পকেট না থাকার জন্য তুমি জ্যোৎস্নার পরিবর্তে দিলে একমুঠো বৃষ্টি! তবুও আমি আমার প্রেম ভাসিয়ে দিই নি কাঁদাজলে! চাঁদপুরে লঞ্চে দাঁড়িয়ে তোমাকে মনে পড়ে যাবার ভয়ে আমি রাতের আকাশের দিকে আজও তাকাই না। শুধু নদীজলে দেখি চাঁদের প্রতিবিম্ব! আমি তো কোনো নবি নই, আমি জানি না কোনো বিশেষ মোজেজা! তবে তুমি কার নির্দেশে আজ ত্রিখণ্ডিত হলে! আমিও তো তখন পর্যন্ত তোমার ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। সেই ঈশ্বর তো আমাকে প্রেমিক-পুরুষ হিসাবেই প্রতিদিন নব নব রূপে সৃষ্টি করছিল? তবে কোন ঈশ্বরের ইশারায় তুমি মা হতে জাপান চলে গেলে? টোকিও বিমানবন্দরে নেমে তোমার কি একবারও আমার কথা মনে পড়ে নাই?<br />কবির কল্পিত আকাশের চন্দ্র নয়, তুমি চিরকালই 'মা' হতে চাইছো, চন্দ্রিমা! এটা বুঝার পর তোমাকে নিয়ে লিখা কবিতাভর্তি ডায়েরিটা ঘরের পাশের নোংরা ডোবায় ফেলে দিয়েছি। তোমাকে উপহার দিব বলে কাঞ্চনপুর দরগার শরীফ ওরস থেকে আমি যে মাটির পুতুলটা কিনেছিলাম, পিঠব্যাগে সেটি নিয়ে আমি পথে পথে অলিতে গলিতে অগণিত ঘুরে বেড়িয়েছি! যেদিন আমি জানতে পারলাম, তোমার পুতুলের মত একটা মেয়ে হয়েছে, আমি চারতলা থেকে সেই 'মাটির পুতুল' ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি কংক্রিটের পৃথিবীতে! </p>
<br /><p>চন্দ্রিমা, চাঁদের সাথে তোমার উপমা যায় না। কারণ আজ আমি জানি, কোনোদিনই তোমার নিজস্ব কোনো আকাশ ছিল না! আজও নেই! ফুলের পরিবর্তে তুমি চিরদিনই ভালোবেসেছো সোনার দুল! অপ্রিয় হলেও সত্য, ঘনচুলের লম্বা চুলের কিশোর কবির পরিবর্তে তুমি যে-কোনো নারীর মতন বেছে নিলে দামী মুকুট পরা টাক মাথার টাকাওয়ালা বর! চন্দ্রিমা, তোমার পারভাঙা নদীর ওপারে আজও জাগে নাই চর! জীবনে আরও নারী এলেও আজও আমার গড়ে উঠে নাই একটা একান্ত ব্যক্তিগত ঘর! চন্দ্রিমা, তুমি ফুলও নও, ভুলও নও। তুমি একটা 'মাটির পুতুল'। তোমাকে ব্যক্তিগত বিছানায় নেওয়ার ইচ্ছা আমার কোনো কালই ছিল না! আর কে না জানে, সুগারড্যাডিরা যাদেরকে ব্যক্তিগত বিছানায় নিয়ে ব্যবহার করে ছেড়ে দেয়, কবিরাই তাদের মনের বেদিতে রেখে 'দেবী' হিসাবে পূজা করে! কিছুদিনের জন্যে হলেও তাদের অমর করে রাখে অক্ষরের জাদুতে! আমি তোমাকে অমর করতে আসে নি, মারতেও আসে নি! আমি তোমার জীবনে শুধু এসেছিলাম তোমাকে মুক্ত করতে। আমি আজও চাই, তুমি সোনার শিকলগুলো খুলে ফেলো আমার কবিতা পড়তে পড়তে! </p>
<br /><p>তুমি বলেছিলে, 'আর কেউ না পড়লেও আমি তোমার কবিতা পড়ব।' হৃদয়ের অন্দর ভেঙে তুমি টোকিও বিমান-বন্দরে উড়াল মারার পর আজ পর্যন্ত আমি প্রায় দেড়শ কবিতা লিখিছি, তুমি যে তারপর দেড়টা কবিতাও পড়ো নাই! তা আমি হলফ করে বলে দিতে পারি। শুধু তুমি কেন? বাংলাসাহিত্যে সম্ভবত আমার কবিতার পাঠক দেড় ডজনও হবে না। তবু কেন যে লিখি এসব ছাইপাঁশ, জানি না! হয়তো কোনো একদিন তোমার পুতুলের মতো মেয়েটি পড়বে বলেই । তোমার মেয়ে যদি বাংলাভাষা রপ্ত করতে না পারে, যদি জাপানে তোমার মৃত্যুর আগে তৃতীয়বারের মতন পারমাণবিক বোমাবর্ষণও হয়, আমি জানি তবুও তোমার চিরনিদ্রায় শায়িত হবার মুহূর্তে ঠিকই তোমার কানে বেজে উঠবে আমার লেখা কবিতার শেষ লাইন!</p>
<br /><p>নিজের প্রিয়তমার পাশবালিশে যে মহৎ পুরুষই শুয়ে থাক! সে হয়ে যায় পৃথিবীর সবচেয়ে পাশবিক শত্রু! বার্ট্রান্ড রাসেলের 'ম্যারিজ এন্ড মোর্যালস' পড়বার আগেই আমি তা জেনে গেছি! সেই দিনগুলোতে আমার যে কী যন্ত্রণা হত, তার সিকিভাগও কি তুমি অনুভব করেছিলে, চন্দ্রিমা?</p>
<br /><p>আমি জানি, আজ আর তুমি কারুরই বধূ নও, কারুর বন্ধুও নও, নও কবির কল্পিত স্বর্গসঙ্গী কিংবা প্রিয়তমা, আজ তুমি শুধুই মা! জেনে রেখো, আজও এই ব্যথিত আত্মা করি নি তোমাকে ক্ষমা। নিজের সতীত্ব রক্ষার ছলে তুমিই তো আমাকে দিয়েছিলে কবিত্ব!</p>
<br /><p>আমি শুনেছি, তোমার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহর টোকিও। অথচ আমার আজও মনতলা বাজারে গেলে তোমার কথা মনে পড়ে। 'চাঁদপুর' বলতে আজও আমি তোমাকেই বুঝি, চন্দ্রিমা! চাঁদপুরের হাওয়া বুকে লাগলে আমার খুব ধূমপান করতে ইচ্ছে করে! </p>
<br /><p>তুমি কি জানো, নদীর জলে চাঁদের প্রতিমা দেখতে দেখতে, তোমার প্রতারিত প্রতিমূর্তি দেখতে দেখতে আমি একদিন নদীটাকেই ভালোবাসতে শুরু করেছি। লঞ্চ মেঘনা পার হয়ে গেলে নদীর পরিবর্তে আমি দেখি একটা প্রশস্ত অন্তহীন জলপথ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/janlar-opashe-surjomukhi-hashe/জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে 2024-02-29T11:55:16-05:002024-03-03T07:28:43-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এই সকালেই ফুটফুটে সূর্যের আলো <br />শরীরে মেখে তুমি মুছে ফেলেছো রাত্রির সুগন্ধি <br />কে যেন বলেছিল কোথায় কবে <br />তুমি চিরকালই রবে সূর্যবন্দি— <br />অথচ আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি<br />রাত্রিশেষে তুমি শুধুই আমার হবে! <br />অমানিশার ঘোরতর অন্ধকার কেটে গেলে<br />তুমি শিরশিরে শিশিরের স্পন্দনে<br />হবে ঝলমলে সকাল;<br />আমি তোমার টলমলে ঠোঁটের স্পর্শে হব<br />চিরপ্রেমিক, এলোকেশী বাতাসে হব চিরমাতাল!</p>
<br /><p>তোমার স্পন্দনরত রক্তিম হৃদয় যেদিন ছুঁয়েছিল<br />আমার সর্বগ্রাসী ক্ষুধার তীব্রতা <br />তোমার অবিনাশী চোখ দুটি <br />যেদিন হয়েছিল পাহাড়ী ঝর্না— যেদিন <br />সূর্যের কাতর স্পর্শে তোমার মনের উঠোনে <br />উঠেছিল এক আকাশ গনগনে রোদ—<br />অনবরত আলোর বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল অন্ধত্ব!<br />শিরায় উপশিরায় দুলে উঠেছিল উষ্ণ রক্ত! <br />সূর্যের একফালি সোনালি ছোঁয়া পেতেই <br />তুমি রজনীগন্ধ্যা থেকে হয়ে গেলে সন্ধ্যাপ্রেমী সূর্যমুখী!</p>
<br /><p>কে বলে তুমি চিরকালব্যাপী রবে দুঃখী?<br />আমি তো দেখি, তুমি অনবরত ঝলমলিয়ে হাসছো<br />হাসতে হাসতে তুমি আকাশের গায়ে <br />টুকরো টুকরো সাদা মেঘের মতো ভাসছো—<br />হয়তো মেঘের ঘোমটা নয়তো সুনীল পর্দা <br />সরিয়ে দেখি, জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে। </p>
<br /><p>জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে<br />মেঘের ওপাশে হাসছো তুমি <br />জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে <br />বৃষ্টির ওপাশে হাসছে মরুভূমি!</p>
<br /><p>জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে<br />ঘাসে ঘাসে প্রজাপতিগুচ্ছ<br />যেন তোমার নানা রঙের স্বপ্নগুলি <br />জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে<br />নিজের অজান্তেই কখন যেন<br />তুমি দোয়েল থেকে হয়ে গেলে বুলবুলি!</p>
<br /><p>জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে <br />কবির চোখেমুখে লেগেছে জলরঙ<br />জানলার ওপাশে সূর্যমুখী হাসে<br />কবির পাশে আজ থেকে যাও তুমি বরং<br />জানলার ওপাশে বৃষ্টি নামছে <br />খুলে দাও তোমার বন্ধনরত চুলের বেণী!<br />জানলার ওপাশে কী এক ভয়ানক অসুখ নামছে <br />কিটসের মত ট্রাজিক প্রেমিক আমি নই, তুমিও নও 'ফ্যানি'!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/opekkhar-sesh-shokal-valobasar-prothom-ratri/অপেক্ষার শেষ সকাল, ভালোবাসার প্রথম রাত্রি2024-02-26T18:49:51-05:002024-03-06T04:29:25-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>ফুরিয়ে গেছে সময়, ভাঙতে হবে না তোমার হৃদয়ের দেয়াল— তাতে জমে থাকা স্যাঁতসেঁতে শ্যাওলার মতন ঘষে ঘষে তুলে ফেলো সকল ভয়! যদি কিছু রঙ জমেও যায় এই অল্প কটা দিনে— লাল, নীল, গোলাপী কিংবা সবুজ, তাও তুলে ফেলতে পারো তুমি— নিকষ কৃষ্ণ আঁধারে আমি তো তোমার শিয়রের পাশে জ্বালতে চেয়েছি এক টুকরো সোনালি আলো, লজ্জার অবগুণ্ঠন সরিয়ে তোমার জ্বলজ্বলে শ্যামল মুখচ্ছবি দেখে আমি তো তোমাকে জনম জনমের তরে ভালোবাসতেই চেয়েছি শুধু... থরথরে শীতে ভয়ানক ভীষণ জ্বরে ক্লান্তির বদলে আমি দিতে চেয়েছি স্বর্গীয় ও'ম! অথচ তুমি ভুলে গেলে— ভুলে গেলে ফুলে ফুলে মিলন হতে কখনো কখনো প্রয়োজন হয় একটা পাখি কিংবা পতঙ্গের; আঁখিতে আঁখিতে প্রেম হলেই দৈহিক বাগিছায় ফোটে না কোনো নতুন কুসুম— যেমন ভালোবাসার প্রথম রাতে কিংবা অপেক্ষার শেষ সকালে পৃথিবীর কোনো প্রেমিকরই চোখে নামে নাই ঘুম— কোনোকালে!</p>
<br /><p>তোমাকে না দেখলেও আমার ফিল জাগে, তোমাকে হারিয়ে ফেলার আশংকাতে অথবা পাবার নিবিড় আকাঙ্ক্ষাতে আমার অনুভবে থ্রিল জাগে! এর নামই কি প্রণয়? আমি জানি না!<br />আমি জানি না, তোমার কেন এত ভয়! কেন এত এত সংশয়! শিরশিরে ফাগুনের হাওয়ায় শিহরনের স্পন্দনে একটুও কি কাঁপে না তোমার হৃদয়? তোমার চোখের তীরে কোনোদিনও কি লাগে নি সমুদ্রের সুনীল ঢেউ... তোমাকে কি আমার আগে ভালোবাসে নি কেউ?</p>
<br /><p>ফিল না জাগলে তুমি বেদনায় বেদনায় আরও নীল হও! নীলচে রাতে তোমার আকাশে চাঁদ না উঠলেও আমি চাই, তোমার চোখেমুখে চিরকালই লেগে থাক ঈদ!<br />তুমি পাশে ছিলে বলেই আমি ভেঙে পড়ি নি তীব্রতম ঝড়ে, বিষম দুঃখে আমি চোখে মাখতে যাই নি শীতের শিশির খুব ভোরে? তবুও কেন আজ আমার চোখে শুধু অবিরল বৃষ্টি ঝরে? বুক হতে এত এত হৃদয়ক্ষরণের রক্ত ঝরে?</p>
<br /><p>আমি তো দেখিয়েছি, তোমাকে ভালোবাসার পরে আমার বুকে জন্মাইছে কিছু ঘাস খুব সবুজ! অথচ তুমি এত এত অবুঝ— তাতে ঘাসফুল না দেখে মন খারাপ হয়েছিল তোমার! আমি আর বলব কতবার— তোমাকে ভালোবাসার পরে আমি দেখতে পাই তোমার বুকের আড়াল— তাতে দেখতে পাই একটা আয়না, আয়নায় শুধু ফুলের গয়নায় সজ্জিত একটা পাখির বাসা— আর তো কিছু দেখা যায় না! সত্যি বলতে, তোমার পালকখচিত বুকের আয়নায়, আমি নিজেকেও দেখতে পাই না আর, আমি কতবার বলব, আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই চাই না! কিছুই না! <br />ভালোবাসার শেষ সকাল ফুরিয়ে যাচ্ছে, তবু আমার অপেক্ষা শেষ হয় না! ভালোবাসার প্রথম রাত্রি আসছে, তবুও তুমি কার ফেরার প্রতীক্ষায় বসে আছো?</p>
<br /><p>'ভালোবাসি' জানবার পাশাপাশি এটাও জেনে রেখো হে প্রাণপ্রিয় প্রিয়তমা— ভালোবাবাসাবাসিতে ভুল হলে নেই কোনো ক্ষমা! <br />একবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আমি এই একজীবনে কারুর কাছেই যাই নি দ্বিতীয়বার! এমনকি, একবার বঞ্চিত করেছে জানলে, আমি খোদার কাছেও হাত পাতি না দ্বিতীয়বার! প্রত্যেকেই জানে, অধিক ভালোবাসার ঢেউয়ে ভেঙে যায় ধৈর্যের বাঁধ— অপেক্ষা করতে করতে, উপেক্ষা সইতে সইতে মিটে যায় আমার ভালোবাসার সাধ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/meye-tumi/মেয়ে তুমি2024-02-25T18:15:32-05:002024-02-25T18:15:32-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মেয়ে তুমি ছিলে খুব ঘুমকাতুরে <br />মেয়ে তুমি বাপ-মায়ের বড় আদুরে</p>
<br /><p>বেশি কিছু চাই নাই তো আমি, মেয়ে<br />চেয়েছি তোমারে একটু দেখি চেয়ে <br />চেয়েছি তোমারে দিতে কিছু কুসুম<br />চেয়েছি তোমার চোখে নামুক ঘুম<br />একটা দুইটা পুষ্প গুঁজে চুলে <br />তুমি বৃষ্টি দেখবে জানলা খুলে</p>
<br /><p>চেয়েছি তুমিই হও প্রাণের বধু <br />হৃদয়ে না মাখো কী বলে যদু-মধু<br />হৃদয়ে জাগাও প্রেমের নীল ঢেউ<br />এভাবে কি আর ভালোবাসবে কেউ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/jibonk-valobashi-jibonk-valobeshechi/জীবনকে ভালোবাসি, জীবনকে ভালোবেসেছি2024-02-24T19:36:08-05:002024-03-01T08:05:03-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>১.<br />মৃত্যুনদীর পাড়ে বসে জীবনবৃত্তান্তের<br />বদলে আমি কবিতা লিখছি বলে<br />কারা যেন কানাকানি করছে–<br />আমি নাকি জীবনকে ভালোবাসি না! <br />একটা ফুলকে ছোঁবার অধিকার ছিনিয়ে নিতে<br />আমি ঘুষি বসিয়েছি মহুয়াতলার ছায়াতলে<br />সমতল লাল ইটের পিঁড়িতে–<br />আমি তো চাই নি তোমাকে প্রকাশ্যে চুমু দিতে;<br />তবু তুমি বললে–<br />'সবার আগে নিজেকে ভালোবাসো <br />তারপর হাত ধরতে এসো।'</p>
<br /><p>আমি তো জানি, স্বার্থপররাই সবার আগে <br />নিজেকে ভালোবাসে! <br />নিজের জীবনকে পুড়িয়ে যারা কবিতা লেখে<br />তারা কীভাবে জীবনবৃত্তান্তের মত এত<br />ফালতু রসহীন লেখা লেখে?<br />তুমি বরং নীল কাজল পরে ফের আসো<br />মহুয়াতলার ছায়াতলে, তোমাকে পরিয়ে দিব<br />পাতার আংটি! তোমার পরিবারের হাতে <br />কখনো পৌঁছাবে না কোনো কবির <br />জীবনবৃত্তান্ত! </p>
<br /><p>২.<br />আমি পারমাণবিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক<br />কোনো প্রবন্ধ না লিখে প্রেমের কবিতা লিখি<br />বলেই আমি পেয়েছি পাখির প্রেম <br />আমি পেয়েছি ফুলের ছোঁয়া, শুকনো পাতার শরীরে <br />আগুন না জ্বাললেও ভীষণ শীতে পাই <br />নীল ধোঁয়ার উষ্ণতা! রোদের উত্তাপে <br />যখন ভিজতে থাকি শহরের পথে পথে <br />তখন গ্রামীণ কিছু দখিনা হাওয়া খামে করে <br />পাঠিয়ে দেয় ডাগর আঁখি-বিশিষ্ট মেয়েটি! </p>
<br /><p>তুমি হয়তো ভাবতেই পারছো না আজকাল <br />আমার জন্যেও কেউ পথ চেয়ে বসে থাকে—<br />বিষাক্ত নিকোটিনে রক্তিম ফুসফুসটাকে<br />পোড়াতে পোড়াতে আমি তো এতকাল <br />তোমার প্রতীক্ষাতেই ছিলাম! <br />যে বালিকাটি বাইশ বছর ধরে বুকের অন্ধকারে<br />আমার জন্যে জমিয়ে রেখেছে একরাশ রজনীগন্ধা<br />আর এক আকাশ সুনীল বর্ণিল মখমল কোমল আলো–<br />তাকে উপেক্ষা করার সাধ্য স্বয়ং ঈশ্বরেরও নেই! </p>
<br /><p>৩.<br />তুমি হয়ত জানো না—<br />আজকাল আমি আমার জীবনকে খুব ভালোবাসি<br />সত্যি বলতে, আমি চিরকালই ভালোবেসেছি জীবনকে<br />জীবনকে ভালোবেসেছি বলেই<br />মৃত্যুর সঙ্গে উদ্দাম নৃত্যকালীন সময়ে শুয়ে শুয়ে <br />আমি উষ্ণ আবেগের প্রেমের কবিতা লিখেছি...<br />জীবনকে ভালোবেসেছি বলেই <br />আমি তোমার সঙ্গে বইমেলা যাওয়ার পরিবর্তে<br />সর্বদা যেতে চেয়েছি বৃন্দাবনে! <br />জীবনকে ভালোবেসেছি বলেই<br />সিজোফ্রেনিয়া–কে বাম হাতের মুঠোয় আটকে <br />ডান হাতে পুড়িয়েছি অজস্র সোনালি ফুল...</p>
<br /><p>জীবনকে ভালোবাসি বলেই<br />নিজেকে ভালোবাসি বলেই<br />আমি তোমাকে ভালোবাসি না আর<br />জীবনকে ভালোবাসি বলেই<br />সমস্ত না-পাওয়া আর বিষাদগুলো <br />হৃদয়ের খাঁচায় করেছি বন্দি<br />জীবনকে ভালোবাসি বলেই <br />ভোরের দোয়েলের সঙ্গে গড়ে উঠেছে <br />আমার আত্মার সন্ধি... শুধু দরকার <br />ফুলে ভুলে মিশে একাকার একটা ছোট্ট সংসার;<br />জীবনকে ভালোবাসি বলেই <br />আমি জীবনের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ <br />প্রতিষ্ঠা করি নি আজ অবধি!<br />জীবনকে ভালোবাসি বলেই <br />মৃত্যুর প্রতি আমার আর কোনো ক্ষোভ নেই<br />নেই কোনো প্রতীক্ষাও! <br />জীবনকে ভালোবাসি বলেই <br />আমি ঘৃণা করি কপর্দকহীন বেঁচে থাকা! </p>
<br /><p>জীবনকে ভালোবাসি বলেই <br />জীবনকে ভালোবেসেছি বলেই <br />আমি ফিরে যাব না আর কখনো তোমাদের কাছে...<br />নিজের সঙ্গে নিজে বাঁচব একাই<br />কবরের অন্ধকারে কঙ্কালগুলো যেভাবে বাঁচে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/iswar-ami-tomra-ebong-amader-prithibi/ঈশ্বর, আমি, তোমরা এবং আমাদের পৃথিবী 2024-02-23T20:17:36-05:002024-02-24T19:19:55-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>শুধু তোমাদের নিকটে নয়— <br />আমি খুব ভালো করেই জানি, ঈশ্বরের নিকটেও <br />আমি এক অতি অপ্রিয় দূরতম অনাসৃষ্টি! <br />যে শুধু অন্যের অন্নধ্বংসের নিমিত্তে <br />পৃথিবীর পৃষ্ঠে আজও একটা ছোট্ট আশা<br />কিংবা দুরাশা— একটা স্বপ্ন কিংবা দুঃস্বপ্ন <br />মাথায় নিয়ে এ-দুয়ারে ও-দুয়ারে<br />ক্রমাগত কড়া নেড়ে যাচ্ছে!</p>
<br /><p>তোমরা যারা মোমের মস্তকে নিভু নিভু <br />একটা ক্ষুদ্র আলোকখণ্ড ভেবে<br />আমাকে নিভিয়ে দিতে চাও<br />যারা মনে করো, আমার একমাত্র বাসস্থান<br />মেন্টাল হসপিটালের চরম অন্ধকার গারদ;<br />যারা এখনো ভাবো ফানুশ হিসাবে আমাকে <br />হেসে খেলে উড়িয়ে দিতে পারো যে কারো আকাশে<br />কিংবা এক নিমিষেই মিশিয়ে দিতে পারো <br />দৃশ্যহীন অনুভবহীন নিঃশব্দ বাতাসে...<br />যারা আমার প্রেমের কবিতাগুলোকে অস্বীকার করে <br />বলতে চাও, স্রেফ পাগলের প্রলাপ—<br />যারা আমার ঠোঁটে সিগারেট জ্বলতে দেখে<br />কোনো আশংকা নয়— মনে মনে সত্যিই চাও <br />অতিশীঘ্রই আমার শরীরে জন্মাক ক্যান্সারসেল! <br />চরম অর্থকষ্টে বাঁচার আকুতি নিয়ে <br />আমি ভাগ বসাই তোমাদের ভবিষ্যত স্বর্গবাসের<br />সঞ্চিত পুঁজি অর্থাৎ জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে<br />তোমরা যারা চাও না, আমার মৃত্যু হোক প্রিয়তমার <br />অনুকম্পার কম্পনে কম্পনরত হাতের জলপানে! <br />যারা অবচেতনে কিংবা মনে মনে আশা করো—<br />অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমাকে আবিষ্কার করবে <br />তোমাদের অতি শখের স্বর্গীয় ফ্ল্যাটের সিলিংফ্যানে! <br />প্রিয়তমার উপহার কবিতার ডায়েরিটার <br />শেষ পাতায় একটা সুইসাইডনোট দেখার <br />জন্য অতি উৎসাহে উদগ্রীব হয়ে আছো! </p>
<br /><p>তোমরাই বলো, তোমাদের সন্দেহ করা কি ডিল্যুশন?<br />আমি যদি বলি, ইলন মাস্কের মুখের দিকে তাকালে<br />আমি স্বর্গের অধিপতি মহাপ্রভুর চেহারা দেখি <br />আমি যদি বলি, নীতা আম্বানির অন্তর্বাসে <br />তোমাদের অতিপ্রিয় ঈশ্বরের বসবাস—<br />তবে কি এটাকে হ্যালুসিনেশন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করবে?<br />আমি যদি ফের প্রত্যেকের ওড়ার মতন <br />একটা আকাশ চাই স্বাধীন মুক্ত বাঁধাহীন, আমি যদি ফের<br />কোনো শীতে দাবি করি, ব্যক্তিমালিকানাধীন <br />সম্পত্তির উচ্ছেদ, আমি ফের যদি পৃথিবীতে সমাজতন্ত্রের<br />৭০০ বছরব্যাপী স্থায়িত্ব চাই, আমি যদি টাকার সন্ধানে জার্মানিগামী প্লেনে ওড়ে যাবার স্বপ্নে বিভোর কমরেডকে<br />'বামপন্থী' হিসাবে সন্দেহ করি, আমি যদি নেদারল্যান্ডসে <br />বসে বসে আমাকে লুটেরা প্রতারক হিসাবে সন্দেহকারী<br />পরম আত্মীয়া নারীকেই চিহ্নিত করি আমার হত্যাকারী <br />হিসাবে; তোমরা কি মেনে নিবে? <br />নাকি সবগুলিকেই সিজোফ্রেনিক সিম্পটম হিসাবে <br />চিহ্নিত করে আমার চিরবঞ্চিত লাঞ্চিত অপমানিত <br />আত্মাটাকেও পর্যন্ত পুরে দিবে মৃত হৃৎপিণ্ডের মতন <br />নিস্পন্দ নিস্তেজ জমাট রক্তের কালিতে অংকিত<br />চার প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট অন্ধকার পাগলাগারদে?</p>
<br /><p>না, আমি সহজে মারা যাচ্ছি না— আমি বদলে <br />ফেলেছি আমার ঈশ্বর সংক্রান্ত ধারণা <br />তোমরা আর চাপাতির আঘাতেও ছিন্ন করতে<br />পারবে না আমার উত্থিত মস্তককে!<br />অতি গোপনে স্বীকার করি, আমি খুব খুব <br />ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে; তুমিই বলো—<br />আমি কেন তোমাকে পাবার পরেও <br />মৃত্যুর মহাসমুদ্রে দিব ডুব?<br />আমার আম্মা এখনো পৃথিবীর অম্লজান <br />হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিরাতে ঘুমাতে যান। <br />আমি কোনোদিনও চাই না, তার প্রিয়তম সন্তানের <br />মৃত্যুসংবাদে তার ঘুম ভাঙুক! </p>
<br /><p>আমার ভাইয়া আমাকে ফের একটা <br />ফনিক্স সাইকেল কিনে দিবে বলেছেন—<br />সেই সাইকেলে চড়ে কখনো স্বপ্নে, কখনো দিবাস্বপ্নে<br />কিংবা কখনো বা সত্যিই সত্যিই ফিরে যাব<br />কৈশোরকালীন ভোরের স্কুলে, ফুলে ফুলে <br />আমি সাজাব স্বপ্নের ক্লাসরুম, টিফিনের <br />ক্ষুধায় আমি দিব খুব গভীর একটা ঘুম! <br />প্রিয়তমার ফোনে আমার ঘুম ভাঙবে <br />আম্মার ফোনে আমি ফের কৈশোরকালীন <br />সন্ধ্যার মতন ফিরে আসব বাড়ি, তোমার জন্য ফুল আনব<br />আম্মার জন্য সুতি শাড়ি! আব্বার জন্য ইনসুলিন আর<br />চা-তে ভিজিয়ে খাওয়ার মতন চিনি-ছাড়া টোস্ট<br />আব্বা অপারেশনের পর পত্রিকার অক্ষরগুলি<br />চোখে চশমা নিলেও অস্পষ্ট দেখেন, নইলে <br />প্রতিদিনই একটা পত্রিকা নিতাম! <br />খুব সম্ভব হলে, জীবনকে পিছাতে পিছাতে <br />সাইকেলের প্যাডেল চাপতে চাপতে সাদা শার্ট পরে<br />আমি আমার কৈশোরকালীন স্কুলেই ফিরে যেতাম!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/basanta/বসন্ত2024-02-22T19:35:21-05:002024-02-22T22:11:30-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>অবশেষে আমার জীবনেও বসন্ত এলো। <br />অথচ আজও আমার চোখের নীড়ে <br />হলদে শাড়িপরা পাখিটা এলো না ফিরে! <br />আজও বুকের আগুনে জাগে নাই কোনো<br />সুশীতল হাওয়ায় সিক্ত উদাসী ফাগুন–<br />শুধু সন্ধ্যা হলে মগজের প্রাচীন অন্ধকারে<br />একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে দেয় কেউ! <br />চিরনিঃসঙ্গ চাঁদটার দিকে পৃথিবী কি কোনোদিনও <br />পাঠিয়েছিল গুহামানবের মগজ হতে উৎসারিত<br />আদিম অন্ধকারের ঢেউ?<br />আমি জানি না! </p>
<br /><p>আমি জানি, বসন্ত এলে <br />অতি ধুরন্ধর কপট রাজনীতিকও <br />হয়ে ওঠে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমিক! <br />বলিভিয়ার জঙ্গলে চে গেভারার স্মরণে<br />ফোটে কিছু বিপ্লবের সুবাস ছড়ানো <br />শোকগ্রস্ত মুক্তির ফুল! <br />মুজিব-ফিদেল ওপারের পৃথিবীতে পরামর্শ করে <br />৭৩ বারের মত সিগারেট ছাড়েন! <br />আমি জানি, বসন্ত এলে <br />পৃথিবীর সব ঘড়ির কাঁটা মনে মনে<br />ফিরে যায় পৌরাণিক প্রেমের নগরীতে! <br />হেলেনের বুকে দোলা দেয় নিষিদ্ধ মাতাল <br />পাতাল কাঁপানো আদিম কামনার হাওয়া–<br />অ্যাকিলিসও বর্শা ছুঁড়ে ফেলে ধরতে চায় <br />ট্রয়ের সবচেয়ে দুঃখী বিধ্বস্ত কিশোরীটির হাত! </p>
<br /><p>বসন্ত এলে <br />ময়লা কাগজ ছুঁড়ে ফেলে <br />পথের পাগলও খোঁজে দু-একটি ফুল! <br />প্রিয়জনের প্রত্যাশায় বসে থাকা <br />গ্রামীণ নববধূটিও খুলে ফেলে সোনার দুল<br />মনে মনে চায়, কেউ তাকে দিক কিছু বকুল কিংবা শিমুল! </p>
<br /><p>বসন্ত এলে<br />সব পাখিই হতে চায় কোকিল<br />কৃষ্ণচূড়া হতে চায় নীল <br />সোনালিমা হতে চায় শ্যামলিমা<br />'সুরঞ্জনা' হতে চায় 'বনলতা'<br />'বরুণা' হতে চায় 'নীরা'! </p>
<br /><p>বসন্ত এলে<br />আমি হতে চাই বরফযুদ্ধ শেষে সোনালি আগুন<br />তুমি কি হতে চাও আমার প্রাথমিকা অথবা অগ্নিশিখা?<br />বসন্ত এলে<br />আমি হতে চাই 'জয় গোস্বামী'<br />তুমি কি হতে চাও 'মেঘবালিকা'?</p>
<br /><p>জীবনে আর কোনোদিন বসন্ত না এলেও<br />আমি কবিই হতে চাই শুধু<br />তুমি কি হবে কবিবধূ? <br />রাজপথে বছরের পর আগুন জ্বালিয়েও <br />আমরা শুধু ভেঙেই গেছি–<br />বাম হাতের অনামিকায় পরস্পরকে আংটি পরিয়ে <br />এই ফাগুনেই কি তবে আমরা হব দ্বিগুণ?</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/ebar-ektu-ghumao/এবার একটু ঘুমাও2024-02-22T09:34:12-05:002024-02-22T17:20:38-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>যন্ত্রণার যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হতে <br />আমি এসে দাঁড়িয়েছি তোমার দুয়ারে–<br />আমার রিক্ত হাত দুটি ধরো। <br />শিশিরে সিক্ত দুটি কদমফুল নিয়ে <br />আমি নত হয়েছি, আমার তোমার <br />দুজনের গোপন দুঃখ <br />মোচনের প্রতিজ্ঞা নিয়ে <br />আমি উঠে দাঁড়িয়েছি শতবার!<br />তুমি আমার চোখে রাখো চোখ–<br />কেন মিছে মিছে মাটির ব্যাংকের কয়েনের মত <br />জমাচ্ছো খুচরা বিরহ<br />এত এত ক্লান্তির পরে এত এত শোক! </p>
<br /><p>তুমি যদি কোলবালিশের মত প্রতিরাতের ঘুমে <br />জড়িয়ে থাকো বিগত জীবনের অপ্রাপ্তির ক্ষত<br />তবে কেমন করে স্বপ্নের বাগানে ফুটবে <br />প্রশান্তির গোলাপ?<br />কেমন করে খুব ভোরে অঝোরে নামবে<br />নীলিমার শোকার্ত বুক চিরে সোনালি বৃষ্টি<br />মেঘলা আকাশের গোপন ক্ষতে লাগবে<br />একটুখানি রোদের ছোঁয়া!<br />আমার বস্তাপঁচা পদ্য তোমার ভালো না লাগলে<br />তুমি আবোল-তাবোল, ঠাকুমার ঝুলি<br />কিংবা আরব্যরজনীর রূপকথা পড়বে<br />তবুও তুমি আমার প্রাণের গহীনে আসো!<br />শিয়রের পাশে বসে জ্বর পরিমাপের ছলে হলেও<br />একটুখানি ভালোবাসো!</p>
<br /><p>গ্রামার আমার খুব বিদগুটে লাগে<br />গাণিতিক সূত্র কিংবা সামাজিক নিয়ম<br />আমি চিরকালই ব্যক্তিগত ড্রয়ারে তালাবদ্ধ<br />করে রেখেছি, রাষ্ট্রীয় জঞ্জাল পরিস্কারের জন্য <br />আমি কবিতার ছন্দ-মাত্রা-লয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রপ্ত করি নি <br />আমি শুধু চেয়েছি সংক্রমিত হোক আনন্দ!<br />আমি শুধু চেয়েছি, তোমার উড়বার মত<br />একটা ব্যক্তিগত আকাশ হোক <br />শান্তিতে ঘুমানোর মত একটা একান্ত আশ্রয়! <br />আমি ভাঙতে এসেছি তোমার সব অবসাদ, সকল ভয়<br />তুমি সূর্যমুখীর মতো না পারো–<br />সূর্যের চুম্বনে শিশিরভেজা ঘাসফুলের মত <br />একটুখানি হাসো<br />লজ্জবতীর মত গুটিয়ে গিয়ে হলেও <br />ওড়নায় মুখ ঢেকে প্লিজ একটুখানি হাসো।<br />খুব না হলেও <br />তুমি আমাকে একটুখানি ভালোবাসো।</p>
<br /><p>ভালোবেসে ভালো না লাগলে<br />তুমি ব্যর্থ করে দিয়ে চলে যাও <br />অনেক হল কবিতা, এবার একটু ঘুমাও!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/keu-nei-tar-moto/কেউ নেই তার মত2024-02-21T08:18:12-05:002024-02-21T17:56:16-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তোমরা যারা ভাবো, হাত বাড়ালেই <br />পাওয়া যায় তারে <br />না চাইলেও সে ধরা দেয় জালে। </p>
<br /><p>তোমরা যারা ভাবো, পাখির মতন <br />একটা জীবন কিংবা সংসার <br />তার প্রাপ্য নয়–<br />বড়জোর পিপীলিকার মতন<br />নিজের ওজনের চেয়ে ৫০ গুণ ভারী<br />জীবনের বোঝা টানতে টানতে <br />সে পিষ্ট হোক যার তার পদতলে! <br />কিংবা <br />কেবল মরিবার তরেই তার পিঠে পাখা উঠুক। </p>
<br /><p>তোমরা হয়ত জানো না– <br />সে চলে যাওয়ার পর<br />ভোরের সূর্য রোজ<br />লুকিয়ে থাকে কুয়াশায়! <br />সে চলে যাওয়ার পর<br />একখন্ড মেঘ বৃষ্টি হয়ে <br />ঝরে পড়েছিল <br />আমার করুণ ব্যথিত চোখে! </p>
<br /><br />তোমরা হয়ত জানো না–<br />তার গোপন অশ্রুর স্রোতে <br />ভেসে গেছে একটা হৃদয়ে<br />জমে থাকা কতশত জঞ্জাল <br />আর অহেতুক যাতনায় সৃষ্ট ক্ষত!</p>
<br /><p>তোমরা হয়ত জানো না–<br />একজন কবি ত্রিশ বসন্ত পার করে <br />তেইশ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে <br />আজও পায় নাই তারে! <br />আলো নিভে গেলেও<br />এই হৃদয়ে সে সদা জাগ্রত<br />সত্যিই, কেউ নেই তার মত।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/to-kusum/কুসুম, তুমি তো জানো2024-02-12T20:38:06-05:002024-02-12T20:38:06-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কুসুম, আমি তোমাকে একুশে বইমেলায় <br />এবার নিয়ে যাব বলেছিলাম–<br />এটা শোনার পর তোমার মুখ হয়ে গেছিল<br />বৃষ্টিভেজা ফুলের উপর এক চিলতে রোদ! <br />কুসুম, তুমি কি জানো–<br />'অমর একুশে বইমেলা' হয়ত প্রযুক্তির দূষণে<br />আগামী একুশ বছরের মধ্যে মরে যাবে! <br />অমর সমস্ত কাব্যগ্রন্থ হয়ে যাবে <br />ঝালমুড়ির ঠোঙা!<br />কবিতা অপেক্ষা ঝালমুড়ি অধিকতর সুস্বাদু <br />এবং কম মরণশীল, এটা জেনেই <br />আমি কবিতার কাছে এসেছি, অমরত্বের জন্য<br />আমি কোনোদিনও কবিতা লিখি নি! </p>
<br /><p>কুসুম, এবার বইমেলায় গেলে <br />আমি প্রথমেই তোমাকে কিনে দিব<br />মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পুতুল নাচের ইতিকথা'<br />এটা পড়ার পর তোমার ভুল ভাঙবে–<br />তুমি এতদিন যাকে 'শশী ডাক্তার' ভেবেছিলে<br />সে আসলে 'কুমুদ'! <br />এবং তুমিও যে আসলে 'কুসুম' নও...<br />কুসুম, বইমেলায় গিয়ে মূলত আমরা ঝালমুড়ি খাব! <br />শাহবাগ থেকে এক কেজি আপেল আর <br />কয়েকটা বাসি গোলাপ কিনে <br />ধূলির সমুদ্র সাঁতরে সাঁতরে <br />ফিরে যাব হিংসার কাঁদাজলে ডুবন্ত <br />অতি সুখের স্বর্গীয় সংসারে–<br />যেখানে একটা সতেজ গোলাপের পাঁপড়ি ছোঁবার <br />অপেক্ষায় কাঁপছে একজোড়া কাতর হাত! </p>
<br /><p>কুসুম, তুমি বলেছিলে, তুমি ভালোবাসো নীল সমুদ্র<br />তুমি কি জানো, বিষাক্ত বোমা বর্জ্য<br />গর্ভে ধারণ করতে করতে<br />পৃথিবীর প্রায় সব সমুদ্রেই একদিন ধূসর হয়ে যাবে! <br />তবুও আমি চাইব, সমুদ্রপারেই যেন <br />তৈরী হয় আমাদের স্বপ্নের নিকেতন! <br />ধূলির সমুদ্রে সাঁতরে মরার চেয়ে <br />দূষিত জলের সমুদ্রে ডুবে মরা ১০১ গুণ আনন্দের!</p>
<br /><p>কুসুম, তুমি কি জানো–<br />সমস্ত ক্ষয়ের শেষেই আমি তোমাকে চেয়েছি! <br />সমস্ত ভয়ের জাল ছিন্ন করেই ধরতে চেয়েছি<br />তোমার বেদনাবিদ্ধ দুটি হাত! <br />সবাই জানে, ভালোবাসা না পেয়েই <br />আমি ঝরে গেছি বহুকাল আগে<br />ভয়ানক কোন এক ঝড়ে! <br />কুসুম, তুমি তো জানো–<br />ভালোবাসতে ভালোবাসতেই <br />আমি সরে গেছি সমস্ত বৃক্ষের ছায়া থেকে! <br />ভালোবাসতে ভালোবাসতেই <br />কোন এক শীতের ভোরে আমি 'পাগল' হয়ে গেছি! <br />ভালোবাসতে ভালোবাসতেই<br />ঠিক একদিন আমি মারা যাব<br />তোমার উরুতে মাথা রেখে...</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/mummy-you-are-a-rose/আম্মা, আপনি একটা লাল গোলাপ 2024-02-11T06:06:23-05:002024-02-21T03:06:27-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আম্মা, আমি চাকরির প্রথম বেতন পেলে <br />আপনাকে একটা আয়না কিনে দিব–<br />ওই আয়নায় আপনার মুখের বদলে দেখা যাবে<br />আপনার পার করে আসা জীবনের প্রতিবিম্ব! </p>
<br /><p>আপনার পাহাড় ডিঙানোর ইতিহাস <br />আজ আপনিও ভুলে গেছেন আম্মা! <br />আপনি হয়ত ভুলে গেছেন একটা আম <br />কুড়িয়ে আনার অপরাধে কে <br />অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়েছিল আপনাকে–<br />আপনি চোখের পানি মুছতে মুছতে <br />আমাকে সে আম খেতে দিয়েছিলেন;<br />আমি খাই নি, আম্মা! <br />ছুঁড়ে মেরেছি উত্তরের আকাশে–<br />নিউটনের সূত্রকে বিভ্রান্তিতে রেখে<br />সেই আম আজও পৃথিবীর মাটিতে<br />ফেরত আসে নি! <br />হয়ত আপনার কল্পিত বেহেশতে চলে গেছে ;<br />আপনিই তো বলেছিলেন–<br />বেহেশতে কোনো ব্যক্তিমালিকানা নেই! <br />আমিও তো একই কথা বলেছি আম্মা! <br />বলেছি, পৃথিবীটাকে বেহেশত বানাতে হবে<br /> তার জন্য সবার আগে উচ্ছেদ করতে হবে <br />বিদ্যমান ব্যক্তিমালিকানা। </p>
<br /><p>আপনার কল্পিত বেহেশতকে <br />আমি পৃথিবীতে বাস্তব হিসাবে পেতে চেয়েছি–<br />শুধু এইটুকু, হ্যাঁ, শুধু এইটুকুর জন্য<br />ওরা আপনাকে কানে কানে বলে গেল–<br />'আপনার ছেলে নাস্তিক হয়ে গেছে!'<br />এটা শুনে আপনার চোখ দিয়ে কত জল <br />গড়িয়েছে আমি জানি না, কিন্তু আজও <br />আমি পৃথিবীর সব জমিতে <br />সব মানুষের সমান অধিকার চাই <br />পৃথিবীর সব বৃক্ষে সব পাখিদের<br />সমান অধিকার চাই <br />সমস্ত ফুলে সব প্রজাপতিদের সমান অধিকার...</p>
<br /><p>আম্মা, আমি জানি–<br />আপনি চিরকালই কুমিরকে<br />'জলপরী' ভেবে ভুল করেন–<br />তাই আমি আপনার সাথে <br />যাই নি বহুদূরের নদীতে;<br />তাই আমি ভালোবেসেছি পাশের ঘরের<br />জানলায় চুপচাপ বসে থাকা দোয়েলকে;<br />ও আকাশ-উঁচু ফ্ল্যাটবাড়ি চায় না<br />চায় উড়বার মত একটা মুক্ত আকাশ<br />ও চায় না ২০ ভরি সোনার গয়না <br />ও চায় ময়ূরের পালক খচিত <br />শুধু একটা 'সোনালী কাবিন'! <br />ও চুপচাপ দোয়েল থেকে হতে চায়<br />একজন কবির প্রাণের ময়না–<br />'বউ কথা কও' এটা শোনার প্রতিক্ষায় <br />গত ৬ বছরে তার বুক থেকে খসে গেছ<br />অসংখ্য পালক;<br />ও চায় ফুলের সাথে প্রজাপতির মত হলেও <br />একটা সংসার ! <br />ওরও তো আপনার মতো জননী হতে ইচ্ছে করে। </p>
<br /><p>আম্মা, আপনি একটা লাল গোলাপ–<br />আপনি ক্ষমা করুন ইডিপাসের পাপ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/a-poem-about-flowers-and-birds/ফুল এবং পাখি বিষয়ক একটি কবিতা2024-01-20T17:36:15-05:002024-01-21T04:35:24-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>একটা ফুল প্রজাপতির প্রতিক্ষায় বসে থাকতে থাকতে<br />অবশেষে একদিন পাখি হয়ে গেল–<br />তার পাঁপড়িগুলো হয়ে গেল পালক<br />তার অপেক্ষার যন্ত্রণা হয়ে গেল ডানা–<br />সে উড়ে যায়, বেদনার নীল ঠোঁটে করে <br />সে লীন হয়ে যায় নীলিমায়! </p>
<br /><p>কেউ বলল, সে আকাশে মেঘ হয়ে গেছে <br />কেউ বলল, ভেসে গেছে বৃষ্টির ঘোলাটে জলে–<br />আমি বললাম, সে ফুল হওয়ার আনন্দে <br />অন্ধ হয়ে গেল, সে বুঝে নাই–<br />সব পুরুষ যেমন প্রেমিক নয় <br />সব পতঙ্গও প্রজাপতি নয়! </p>
<br /><p>কে না জানে, প্রতিক্ষার ক্লান্তিতে সবাই পাখি হয়ে যায়! <br />মুক্তির আনন্দে আকাশজুড়ে উড়ে বেড়ায়; সন্ধে হলে<br />আমি তাকে নীড়ের সন্ধান দিতে গেলে–<br />সে বলে, আপনি বড় দেরি করে আসলেন<br /> অবশেষে ভালোবাসলেন, কিন্তু অবেলায়! </p>
<br /><p>পাঁপড়ি কিংবা পালক সবই তো একদিন ঝরে যায়–<br />সকাল হলে বাগানে নতুন ফুল সুগন্ধি ছড়ায়<br />নতুন পাখি ডালে ডালে গান গায়;<br />কিন্তু প্রেম ঝরে গেলে, প্রেম উড়ে গেলে কিংবা মরে গেলে<br />তা কি এই এক জীবনে আর ফিরে পাওয়া যায়?</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/illness/অসুখ2023-10-12T19:59:21-04:002024-01-15T15:11:21-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>সকালটা তোমার ঠোঁটে<br />ফুল হয়ে ফুটুক–<br />না-বলা কথাগুলি সব<br />কবিতা হয়ে উঠুক! </p>
<br /><p>দুপুরটা তোমার ভেজা চুলে<br />রোদ হয়ে মুছে দিক জলের ঘ্রাণ–.<br />ভীষণ উত্তাপে গলিয়ে দিক <br />যত শীতল জমাট অভিমান! </p>
<br /><p>বিকেলটা তোমার শাড়ির ভাঁজে<br />মায়ার মতন জড়িয়ে যাক–<br />আঁধার ঘনিয়ে এলে<br />শরীরজুড়ে ঘুরে বেড়াক! </p>
<br /><p>রাত্রিটা কেবল আমার নিজের থাকুক–<br />আঁধারের মুখোমুখি বসে থাকি আমি<br />আর আমার জীবনব্যাপী বয়ে চলা অসুখ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/death/মৃত্যু 2023-10-12T11:29:57-04:002023-10-12T11:29:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মৃত্যু আমায় কানে কানে বলেছে<br />মৃত্যু আমায় গানে গানে বলেছে<br />তোমাকে পাবার আগেই সে আমাকে নিয়ে যাবে! </p>
<br /><p>ভয় পেও না, আমার জন্য তোমাকে ছাড়তে হবে না বাড়ি<br />আমার জন্য তোমাকে পরতে হবে না সাদা শাড়ি <br />শুধু তোমার চোখের ঘোলাটে জলে<br />ভাসবে আমার কাফনে মোড়া লাশ! <br />কিছুদিন পার হয়ে গেলে<br />আমার কবরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাবার মুহূর্তে<br />তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবে কিছু ঘাস! </p>
<br /><p>তোমাকে পাব না জেনেও ভালোবেসেছি<br />জানি না, এতে কী দোষ?<br />শুধু আফসোস–<br />তোমাকে বলতে পারি নি কখনো<br />'ভালোবাসি'<br />অথচ মনে মনে চেয়েছি কত শত বার–<br />সাদামাটা হলেও হোক না একটা সংসার! </p>
<br /><p>আজ তোমার বদলে আমার পাশে শুয়ে আছে মৃত্যু–<br />সম্ভবত, মৃত্যুর সাথেই হবে আমার প্রথম সঙ্গম <br />মৃত্যুর সাথেই হবে আমার শেষ আলিঙ্গন!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/vul-noy-ful/ভুল নয়, ফুল2023-09-28T22:51:09-04:002023-09-29T12:27:02-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি শেষ বিকেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে<br />সেদিন রোদের ক্ষত মুছতে মুছতে<br />শুধু তোমার বাড়ি ফেরা দেখেছি–<br />আমি কখনো দেখে নি তোমার নিঃশব্দে <br />বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া, শুধু শুনেছি <br />কানে কানে বলছে সে কথা পুবের হাওয়া! </p>
<br /><p>আমি জানি না, তোমাকে ভালোবাসি কিনা <br />শুধু জানি, তোমাকে দেখলে আমার মরতে ইচ্ছে হয় না<br />শুধু জানি, তুমি চলে গেলে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে<br />বিষাদের বাষ্প, শরতের নীলাকাশ <br />ঢেকে যায় কালো মেঘে; সন্ধ্যা হলে<br />একটা জোনাকি উঠোনজুড়ে উড়ে উড়ে<br />শুধু তোমাকে খুঁজে বেড়ায়–<br />আমার রাতগুলো নির্ঘুমে নির্ঘুমে ভোর হয়ে যায়! </p>
<br /><p>আমরা একই বাগানের একই গাছের একই ডালের<br />ভিন্ন দুটি প্রাণ; তুমি ফুল হয়ে ফুটবার মুহূর্তে<br />কেন যে আমি শুকনো পাতার মতন ঝরে গেলাম!<br />তারপর স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় <br />কত লোক যে পদতলে মাড়িয়ে গেল;<br />একদিন শুনলাম, ভালোবাসার ছদ্মবেশে<br />ওরা তোমাকে তুলে নিলো...</p>
<br /><p>তুমি ভুল নও, নও কারুর খেলার পুতুল <br />তুমি কি জানো, তোমার নাম থেকে <br />একটা বর্ণ মুছে দিলে তুমি হয়ে যাও 'ফুল';<br />তুমি আমার ফুরিয়ে যাওয়া ডায়েরির শেষ পাতা;<br />সিগারেটের বিষাক্ত নিকোটিনে <br />ক্ষয়ে ফেলা সোনার জীবন–<br />তুমি টিউশনে পড়ার টেবিলে বসা বিস্মৃত সন্ধ্যা<br />তুমি হাসিনা ফুফুর বাগানে ঝরে পড়া শেষ রজনীগন্ধা!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/bristy-hole/বৃষ্টি হলে2023-03-19T18:08:58-04:002023-06-26T19:22:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>বৃষ্টি হলে আমার সেই মুহূর্তটার কথা মনে পড়ে–<br />এক জীবনের তীব্র ভালোবাসা যখন ভেসে গেল<br />প্রত্যাখ্যানের ঘোলাটে জলের স্রোতে;<br />বৃষ্টি হলে আমার বিক্ষুব্ধ নদীর পাড় হতে ইচ্ছা করে<br />সাময়িক দৃষ্টিতে তলিয়ে গেলেও সাঁতরে সাঁতরে<br />যেন জেগে উঠতে পারি তোমার বিশুস্ক মনের চরে! </p>
<br /><p>বৃষ্টি হলে আমার বিস্বাদ লাগে সব প্রেমের গান<br />বৃষ্টি হলে তোমার অতিপ্রিয় ফুলের বাগান<br />হয়ে যায় প্রজাপতিদের শরনার্থী-শিবির;<br />বৃষ্টি হলে গলতে শুরু করে<br />আমার সব শীতল জমাট অভিমান! </p>
<br /><p>বৃষ্টি হলে আমার সেই বন্ধুটার কথা মনে পড়ে যায়<br />প্রিয় নারীটি তার নিজস্ব নদী হয় নি বলে<br />কোনো এক বৃষ্টিভেজা দুপুরে<br />সে নিঃশব্দে ডুবে গেল পুকুরে! </p>
<br /><p>বৃষ্টি হলে ইদানীং আমার খুব ঘুম পায়–<br />স্বপ্নের ভিতর একটা পাখি মেঘ হয়ে যায়!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/tumi-jwalo-alo-hoye/তুমি জ্বলো আলো হয়ে 2023-03-18T19:30:38-04:002023-06-26T04:19:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তুমি কবে এসেছিলে, বিক্ষুব্ধ বাতাসের ভিতর<br />ফের মিলিয়ে গেলে কী এক ভুলভাল অভিমানে! <br />তবু স্মৃতিতে কাঁপছো তুমি অবিরাম থরথর<br />পিঞ্জরবন্দি পাখির মত হৃদয়-ভাঙার গানে।</p>
<br /><p>আজ নিঃসঙ্গ আঁধারে নেশার মত জড়িয়ে গেছি<br />ফেরার সব দুয়ারে ঝুলছে অহমের শক্ত তালা–<br />আঘাতে আঘাতে সেই কবেই তো আমি ঝরে গেছি<br />স্বেচ্ছায় হাতে তুলে নিয়েছি ভরা বিষের পেয়ালা! </p>
<br /><p>তবু মৃত প্রাণের আঁধারে তুমি জ্বলো আলো হয়ে–<br />বলো, কে কাকে ভলোবেসেছে এতটা বেদনা সয়ে? </p>
<br /><p>২৭/০২/২০২৩</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/unmad/তুমি নদী, তুমি চাঁদ– আমি এক অভুক্ত উন্মাদ2023-03-15T23:28:06-04:002023-06-26T04:19:56-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তুমি তো মেঘ না– বেদনার ভার সইতে না পেরে<br />আমার অপলক দৃষ্টিতে বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাবে! <br />তুমি নদী, এই অন্ধকার অরণ্যের মায়া ছেড়ে<br />চলে যেতে পারো কোনো আলোকিত নগরীর দিকে। </p>
<br /><p>আমি এক নির্লজ্জ ভিখারি, ভালোবাসার কাঙাল–<br />তবু তৃষ্ণার্ত শরীরে আজো পাই নি জলজ ঢেউ<br />ক্ষতটা মুছে নি কেউ, তাই দু'চোখ করেছি লাল;<br />এতটা বৈষম্য কেন পৃথিবীতে প্রেমিকে প্রেমিকে? </p>
<br /><p>মেঘ না হলেও তুমি আকাশের গায়ে গেঁথে আছো<br />আর আকাশ তোমার পায়ে– আমার হৃদ-জমিনে<br />নদী হয়ে বয়ে যাচ্ছো, দুই চোখে চাঁদ হয়ে বাঁচো–<br />স্বপ্নটা আমি গেঁথে দিলাম তপ্ত বেদনার শিকে!  </p>
<br /><p>তবু তুমি জেনে রেখো, হে আমার অপ্রাপ্তির ক্ষত!<br />তুমি যারে চেয়েছিলে খুব হৃদয়ের কড়া নেড়ে<br />সে যদি উন্মাদ কেউ হয়, কিংবা আমিই হয়তো–<br />জল আর জ্যোৎস্নার পার্সেল পাঠিয়ে দিও এদিকে... </p>
<br /><p>তুমি নদী, তুমি চাঁদ– আমি এক অভুক্ত উন্মাদ–<br />জল আর জ্যোৎস্নায় মিটে নি তোমাকে পাবার সাধ!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/porabastab-guhay/পরাবাস্তব গুহায়2023-03-14T18:31:03-04:002023-06-26T04:19:45-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি তো জন্মাতে চেয়েছিলাম<br />আবদ্ধ জলাশয়ে<br />দিনভর সাঁতরানো কোনো হাঁস হয়ে–<br />অভুক্ত শরীরে চেয়েছিলাম ক্ষণিকের আলোড়ন<br />একটুখানি সঙ্গমসুখ! <br />আমি তো তোমাকে ছুঁতে চেয়েছিলাম বাতাস হয়ে...<br />সত্যিই আমি মেঘেঢাকা চাঁদের চাপা অভিমান নিয়ে<br />লিখতে চাই নি কোনো কবিতা! </p>
<br /><p>ক্রমাগত আদিম দংশনে নীল হয়েও<br />আমি ভালোবেসে গেছি তোমার চোখের গভীরে <br />লেপ্টে থাকা সমস্ত সবুজ, ক্লাসরুমের মলিন আলোয়<br />মগ্ন হয়ে দেখেছি নোটখাতায় নিবিষ্ট তোমার মুখভঙ্গি হঠাৎ আমার দিকে তোমার চুম্বকীয় চাহনি<br />আমি ফেঁসে গেছি, অতঃপর একদিন অস্পষ্ট হয়ে গেছি <br />মহাজাগতিক কুয়াশায়...  <br />বিশ্বাস করো, আজও আমি এক অভুক্ত মানুষের <br />শরীর নিয়ে বেঁচে আছি কোনো পরাবাস্তব গুহায়! </p>
<br /><p>সভ্যতার স্বচ্ছ আলোয় যার চোখ দুটি ক্রমশ পুড়ে যাচ্ছে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/river-is-not-personal/নদী কারো ব্যক্তিগত নয়2023-03-13T18:30:52-04:002023-09-24T16:00:33-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি সেই ছবি–<br />যা কখনো তোমার ব্যক্তিগত অ্যালবামে <br />ঠাঁই পায় নি; তবু তুমি এসেছিলে স্বপ্নে<br />বসেছিলে পাশাপাশি, লাল গোলাপের পাঁপড়ির মত তোমার লিপেস্টিকমাখানো ঠোঁটে<br />কিছু কথা ফুটেছিল অত্যন্ত গোপনে<br />যা এখন আর আমার মনে নেই! <br />অতঃপর তুমি মেঘের জানলায় দৃষ্টি রেখে<br />এক হাতে চেপে ধরেছিলে আমার করুন হাত<br />তোমার অন্যহাতে স্মার্টফোন ; দাঁড়িয়ে বললে–<br />'এবার একটা সেলফি হয়ে যাক'<br />অদূরেই দাঁড়িয়েছিল তোমার বাবা!</p>
<br /><p>আমার মনে পড়ে গেল–<br />শৈশবে স্বপ্নের ভিতর একটা নদী <br />আমাকে একান্ত সময় দিবে বলে কথা দিয়েছিল;<br />আমি জানি, তুমি সেই নদী নও<br />আমি এও জানি, নদী কারো ব্যক্তিগত নয়<br />তবু আমি চাই, খুব গোপনে <br />তুমি বুকের ভিতর বয়ে যাও<br />আমি শুধু চাই, তুমি একান্তই আমার হও! </p>
<br /><p>১৪/০৩/২০২৩</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/she/সে2023-03-07T20:12:13-05:002023-06-26T04:19:50-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এই এক জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে <br />তছনছ করে দিতে মন চায় খুব, পারি না<br />যেমন পারি না অভিমানের তালা ভেঙে<br />প্রাক্তন প্রেমিকার রাত্রিকালীন নিষ্প্রদীপ<br />ব্যক্তিগত ঘরে ঢুকে পড়তে! পথের কুকুরের মত<br />লেজ নেড়ে নেড়ে ভালোবাসা ভিক্ষা চাইতে<br />আজ আর আমার ভাল্লাগে না<br />আজ আর আমার রাম-রাবণ, এজিদ-হাসান<br />কোনোটাই হতে ইচ্ছে করে না, তবু আমার বুকের তলে<br />কেঁপে কেঁপে ওঠে একটা ভয়ানক উত্তাল 'বিষাদ-সিন্ধু'! <br />মস্তিষ্কের প্রতিটা সেলে জ্বলজ্বল করে জ্বলে <br />অতীব দুর্বোধ্য 'মেঘনাদবধ'! </p>
<br /><p>আমার শুধু দরজা-জানলা বন্ধ করে <br />নিকোটিনপোড়া নীল ধোঁয়ায় রক্তিম ফুসফুসটাকে<br />জ্বালাতে জ্বালাতে ছাই করে দিতে মন চায়; তবু <br />মায়ের কাছে প্রতিবেলা শপথ করি, আগামী মাসে<br />সিগারেট ছেড়ে দিব; কেউ আমার কাছে ইমার্জেন্সি <br />রক্ত চাইলে আমি বলি, আমার রক্তে ভীষণ দূষণ<br />তাছাড়া আমি আজো জানতে পারি নি <br />আমার ব্যক্তিগত ব্লাডগ্রুপ, যেমন ভুলতে পারি নি <br />আমার প্রাক্তন, শেষ এবং একমাত্র প্রেমিকার পুরো নাম! </p>
<br /><p>যদিও আমি ভুল গেছি, তার শরীরে জড়িয়ে থাকা<br />সবগুলো শাড়ির নকশা; যদিও আমি ব্যর্থ হয়েছি<br />তার দৈহিক বাগানে একটা ফুল হয়ে ফুটে উঠতে<br />আচ্ছা, আমি কি আজও লিখতে পেরেছি<br />তার আত্মার অন্তস্থলে ক্রমাগত ধ্বনিত হওয়া <br />কোনো কবিতা কিংবা স্লোগান? <br />আমি জানি না! <br />শুধু জানি–<br />সে শাড়ি, ফুল আর কবিতা খুব ভালোবাসতো<br />মাঝে মাঝে আমার সঙ্গে সে মিছিলে হাঁটতো!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/ekti-mumurshu-kobita/একটি মুমূর্ষু কবিতা2023-03-07T14:31:24-05:002023-06-26T04:18:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি আর কবিতা লিখব না বলেও <br />লিখে ফেলি একটি মুমূর্ষু কবিতা–<br />জন্ম নেয়ার আগেই যারা অবিরাম <br />মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, লাথি মারছে <br />পদ্যের চিরায়ত চোয়ালে ! <br />পঙক্তিতে পঙক্তিতে পথ হেঁটে<br />প্রচণ্ড পিপাসায় আমি পান করি <br />কবিতার স্নিগ্ধ জল; আর মুতে দিই <br />তোমাদের নান্দনিক নগরিক দেয়ালে! </p>
<br /><p>যেভাবে– আর দেখা হবে না বলেও <br />বার বার আমি তোমার কাছেই ফিরে আসি;<br />যেভাবে– আর ভালোবাসব না বলেও <br />ভালোবেসে ফেলি বাঁজপাখির ঠোঁটের মত<br />তোমার নাক, তাতে দুঃখ হয়ে ফুটে থাকা<br />নীল নাকফুল, আমি ভালোবেসে ফেলি<br />খয়েরি কামিজের আড়ালে ঘেমে ওঠা <br />তোমার শরীর, কবিতার মত স্নিগ্ধ অথচ<br />ক্লেদাক্ত কামনায় শিহরিত শরীর! </p>
<br /><p>যেভাবে– আর মিছিলে হাঁটব না বলেও <br />আমি ঘুমাচ্ছন্ন স্বপ্নের ভেতর হেঁটে বেড়াই <br />এই নগরীর সমস্ত অলিগলি, বিড় বিড়<br />ঠোঁটের স্পন্দনে স্লোগান ধরি, স্তব্ধ হাওয়ায় <br />উড়ে বেড়ায় আমার প্রকম্পিত মগজের ভিতর<br />নেচে ওঠা অপ্রকৃতস্থ শব্দাবলি;<br />আমি জেগে উঠি, আমি আর ঘুমাতে পারি না… </p>
<br /><p>হ্যাঁ, ঠিক সেভাবেই আমি কবিতার কাছে<br />ফিরে আসি, তার শরীরে সঁপে দিই আমার <br />অতৃপ্ত আত্মার নির্মেদ ইচ্ছেগুলি। </p>
<br /><p>এভাবেই আমার কবিতা বেঁচে ওঠে <br />আমি মরে যেতে থাকি ; অথবা<br />আমি বেঁচে উঠি, আমার কবিতা <br />বুলেটবিদ্ধ রক্তাক্ত পাখি!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/ami-r-kobita-likhbo-na/আমি আর কবিতা লিখব না 2023-02-28T18:07:51-05:002023-06-27T15:16:52-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি আর কোনোদিনও কবিতা লিখব না! <br />আমার কবিতা আজ আর কেউ পড়ে না<br />তুমিও না<br />এমনকি লেখার পর <br />আমিও না। </p>
<br /><p>এক অদ্ভুত স্বপ্নের ইশারায় সেই লেখা শুরু <br />কোনো এক উজ্জ্বল জ্যোৎস্নায় আলোকিত সন্ধ্যায়;<br />আজ স্মৃতিভ্রষ্ট মাঝরাতে শেষ হল! </p>
<br /><p>আমার এখন আর কিছু মনে পড়ে না,<br />মনে পড়ে না, কোথায় কে ধর্ষিত আঁধার গুঁজে দিয়েছিল<br />শরীরের প্রতিটা লোমে, তিনজন অদ্ভুত মোহনীয়<br />নারী আমাকে ভালোবেসেছে কিনা, আমার এখন <br />আর কিছু মনে পড়ে না... </p>
<br /><p>আমার কাছে সব খুব বিষণ্ণ লাগে<br />বড় বিষণ্ণ লাগে এই রাস্তা-ঘাট-হাটবাজার<br />আমার বিষণ্ণ লাগে এই স্বার্থান্বেষী মানুষের ভিড়<br />তবুও কারা যেন নিঃস্বার্থে ভালোবাসতে চেয়েছিল পৃথিবীটাকে<br />কাস্তে-হাতুড়ি খচিত লাল পতাকা হাতে ; অনুপাতে অনুপাতে তারা<br />এখন একানব্বই আর নয়; তবু ভালোবাসতে হয় <br />বাঁচতে হয়,  বাঁচার জন্য লড়তে হয়। <br />মনে রেখো আমিও তোমাদের সাথে ছিলাম, কমরেড <br />আমিও ছিলাম– আগুনের মশাল হাতে <br />সন্ধ্যারাতে অদ্ভুত সব মিছিলের ব্যর্থ হুঙ্কারে<br />আমিও ছিলাম রুগ্ন শীর্ণকায় পৃথিবীর একজন<br />হয়ে! পুঁজিবাদ অমরত্ব লাভ করেছে শুনে <br />আমি অস্বীকার করে আক্রোশে বলেছিলাম,<br />তার মৃত্যু হয়েছে; তাই ওরা আমাকে সিজোফ্রেনিক<br />বলেছিল; গারদে ধরে মারল;<br />আচ্ছা তুমি কি সত্যি কেঁদেছিলে, নীলিমা;<br />আচ্ছা তুমি কি পড়েছিলে আমার শেষ লেখাটা? <br />তোমাকে নিয়ে লিখেছিলাম, আমি নিশ্চিত তুমি <br />পড়েছো লুকিয়ে লুকিয়ে ও-পাড়া থেকে;<br />আমার কবিতার শেষ বিকেল যেখানে অন্ধকারে হারাল–<br />তুমি ছাড়া আমার কবিতা আর কেউ তো পড়ে না! </p>
<br /><p>১৫ টা লাইক দিয়ে যুদ্ধের বাজারে একটা সিগারেটও <br />পাওয়া যায় না, তাই আমি আর কবিতা লিখব না। </p>
<br /><p>তবুও কেউ কেউ পড়েছিল মনে হয়;<br />কেউ কেউ পড়বে<br />ঝড়ো সন্ধ্যার আঁধারে বিজলীর আলোয়। <br />হয়তো। হয়তো না। <br />আমার কিছু আসে যায় না। <br />তবে খুব ভালোবেসে গেঁথেছি প্রিয় অক্ষরমালা! <br />জল আর আগুনের স্রোতে ভাসা প্রিয় অক্ষরমালা! </p>
<br /><p>২৮/০২/২০২৩</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/jibon-zapon/জীবন-যাপন2023-02-28T07:50:04-05:002023-06-27T10:29:10-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আজকাল আয়নার মুখোমুখি দাঁড়ালে<br />নিজেকে খুব অসহায় লাগে–<br />মনে হয়, জলের মতন তোমার নরম বুকে <br />একটা ছেঁড়া পৃষ্ঠা হয়ে কেবলই ভাসছি<br />কিংবা পাথরের টুকরোর মতন <br />নিঃশব্দে ডুবে গেছি অতলে! <br />তবুও কিছু স্মৃতি কুয়াশার জাল ছিঁড়ে <br />উদ্ভাসিত রোদের মতন ঝলমলে;<br />মখমল স্পর্শে প্রকম্পিত হয় নিউরন–<br />যেন আজো আমি প্রতি সন্ধ্যায়<br />একটা সস্তা সিগারেট ঠোঁটে <br />তোমার অপেক্ষায় বসে থাকি হলগেটে<br />জ্যোৎস্নার বৃষ্টিতে দুটি শরীর ভেজাব বলে! </p>
<br /><p>তোমার সেই প্রেম, তোমার সেই স্পর্শে <br />আমার জীবন ধন্য হলেও দামী হয় নি!<br />এমনকি, তোমার বিচ্ছেদের আগুনে পুড়েও <br />হতে পারি নি কোনো বিশেষ রত্ন<br />কিংবা বিশুদ্ধ মানুষ– <br />নিঃশ্বাসে শুধু ঝরে কষ্টের কার্বন<br />পদাঘাতে বিক্ষুব্ধ হয় পথের মাটি;<br />শরীরে বেকারত্বের গন্ধ লেগে আছে বলে<br />পৃথিবীতে কেবলই অনর্থক অন্নের অপচয়–<br />চতুর্দিক ঘিরে আছে এক নির্মম অক্ষমতা <br />আর ঘিনঘিনে অপমান! </p>
<br /><p>এ এক অদ্ভুত জীবন-যাপন<br />এ এক হৃদয়বিদারক বেঁচে থাকা! <br />মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়, হয়ে যাই অশরীরী–<br />সর্বক্ষণ তোমাকে হন্য হয়ে খুঁজি<br />বীভৎস ভুতুড়ে অন্ধকারে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/kukuriyo-rat/কুকুরীয় রাত2023-02-26T19:43:33-05:002023-06-27T16:53:59-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মাংসের উত্তাপে গলে গলে ঝরে পড়ছে আজকের এই কুকুরীয় রাত— অথচ তুমি বরফকুচিগুলা নিজের গায়ে না মেখে খালি বেকুবের মত দেয়ালের গায়ে ছিটাচ্ছ, জলকামী শুকনা ঠোঁটের দংশনে অযথা নির্বিষ বাতাসটাকে বিষাচ্ছ, মানবীয় ফণা তুলে ঘামছাটা জিভের শূলে জীবনটাকে ঝুলিয়ে রাত্রিটাকে করে তুলেছ জান্তব ।<br /> <br />বেটোফেনের সিম্পনি বাজিয়ে কিংবা যাতনার কলিং বেল টিপাটিপিতে এখন আর কাজ নেই— রেঁনেসার সমস্ত আলোর শেকল ছিঁড়েবিড়ে আমি ঢুকে গেছি অন্ধকারমগ্ন ঈশ্বরের অন্তর্বাসে !<br /> <br />১৮/৬/২০১৭</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/childhood/ছেলেবেলা 2023-02-25T18:42:37-05:002023-06-27T17:06:52-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>জলজ ঘাসের মঞ্চে ডানা ঝেড়ে নাচতে থাকা <br />লাল লাল প্রজাপতিগুচ্ছ তোকে ভুলে গেছে ।<br />গোধূলির প্রস্থানে বাবুই পাখির ঝরে পড়া নীড়<br />ইলেক্ট্রিক জ্যোৎস্নায় প্রকম্পিত ঝড়ো সন্ধ্যা<br />এমনকি, সূর্যময়ী সকালের গাছতলায় <br />আলোছায়ার ঝিলমিল প্রিয় ঢেউগুলি<br />এরা কেউ তোকে মনে রাখে নি, <br />যে যার নিজস্ব নিয়মে সবাই ভুলে গেছে ।<br /> <br />ছেলেবেলা— মায়ের ভাতমাখানো হাতে <br />দাঁত বসানো আমার ছেলেবেলা <br />নষ্ট অন্ধকারে শুয়ে থাকা জীর্ণ পাতাগুলো<br />তোকে মনে রেখেছে, কালো জলের স্রোতে <br />ভেসে আসা রক্তচোষা জোঁক তোকে মনে রেখেছে !<br /> <br />ছেলেবেলা— অধরা চাঁদের দিকে <br />হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আমার ছেলেবেলা <br />চাবুকপেটার শব্দের মতন কবর ফেটে <br />বেরিয়ে আসা বীভৎস কঙ্কালটা <br />তোকে আজো তাড়া করে বেড়ায় !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/byarthotar-kichu-kalo-akkhor/ব্যর্থতার কিছু কালো অক্ষর2023-02-23T18:09:12-05:002023-06-26T04:18:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>ইতিহাস তো লেখা হয় সফল মানুষদের নিয়ে <br />সুতরাং আমি কোনো সফল মানুষকে নিয়ে লিখছি না ।<br />অসংখ্য কাঁটাছেঁড়া শেষে ঝুঁড়িতে দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে থাকা <br />কবিতার পৃষ্ঠার মতন <br />একদিন ইতিহাসও<br />ব্যর্থদের ছুঁড়ে ফেলে দেয় ।<br />সুতরাং আমি ব্যর্থদেরকে নিয়েই দুপাতা লিখি । </p>
<br /><p>তাছাড়া ব্যর্থদেরকে নিয়ে লেখা সোজা <br />এই যেমন আমি<br />আমাকে নিয়ে লিখতে বসলে আমার শব্দ সংকটে পড়তে হয় না <br />বরং শীতের বিকেলে<br />ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা রঙ বেরঙের পাখির মতন <br />অজস্র শব্দ আমার মাথায় এসে ঝেঁকে বসে ।<br />ইতিহাসের স্বর্ণালি অক্ষরমালা মাথা থেকে একদম ঝেড়ে ফেলে<br />আমি বরং আমাকে নিয়ে ব্যর্থতার কিছু কালো অক্ষর সাজাই । </p>
<br /><p>আমি একজন ব্যর্থ মানুষ <br />ব্যর্থ হতে হতে আমার কাঁধ আজ এতটাই নুয়ে গেছে যে <br />চাইলেই এখন খুব সহজে মাথা দিয়ে জমিন ছুঁতে পারি<br />তবুও আমি মাথা উঁচিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখি । <br />প্রত্যেক ব্যর্থ মানুষের মনে হয় একটাই বাতিক<br />আর কিছু না থাক্, এদের অনেক বড় স্বপ্ন থাকে ।<br />আমারও ছিল...</p>
<br /><p>ছেলেবেলায় আমার কোনো ঢাউস ঘুড়ি ছিল না <br />পলিথিন আর শলার ছোট ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে আমি স্বপ্ন দেখতাম<br />ঘুড়ি নয়, বড় হলে আকাশে বিমান ওড়াব । <br />আজ উড়ন্ত বিমানের ডাক শুনতে পেলে <br />আমার কাঁধ আর নত হয়ে থাকে না <br />মাথা উঁচিয়ে আকাশ দেখি । </p>
<br /><p>আমি একজন ব্যর্থ মানুষ<br />ব্যর্থরা সারা জীবন সূর্যোদয়ের পরিবর্তে বোধহয়<br />সূর্যাস্ত দেখতেই বেশি ভালোবাসে<br />আমিও<br />প্রতিটা সূর্যাস্তের দিকে তাকিয়ে আনন্দে হেসে উঠি<br />এই বুঝি অন্ধকার কাছে এলো !<br />অন্ধকারকে এভাবে আলিঙ্গনে বেঁধে রেখে <br />যদি  আরো কিছুকাল চুপচাপ বাঁচতে পারি <br />প্রতিটা ব্যর্থ মানুষ যেভাবে বেঁচে থাকে<br />প্রতিটা ব্যর্থ মানুষ যেভাবে বেঁচে থেকেও মরে যায় !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/tobou-ami-pakhi-hobo/তবুও আমি পাখি হব2023-02-22T19:38:40-05:002023-06-26T04:19:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>যদি কোনোদিন মাটি আমার পদাঘাত আর না মানে <br />যদি বুঝে যাই বিদ্রোহের আঁচ অনুমানে <br />তবেই আমি পাখি হব, উড়ে যাব<br />পাখায় নিয়ে জীবনভর <br />বিষাদগ্রস্ত স্মৃতির জ্বর <br />আমি উড়ে যাব, যদি কোনোদিন রাগে কিংবা অভিমানে <br />পদতল থেকে সরে দাঁড়ায় মাটি <br />তবেই আমি পাখি হব । <br /> <br />আমি জানি আকাশ আমাকে নিবে না <br />আলতো করে হলেও বাতাস আমাকে ছোঁবে না<br />দুই বাহু প্রসারিত করে মেঘগুলিও <br />চিরদিন শুধু চাঁদ আর সূর্যকেই জড়িয়ে ধরবে, চুমু খাবে <br />অহংকারে ক্রমাগত দূরে দূরে সরে যাবে নক্ষত্রেরা<br />তবুও আমি পাখি হব, মাটি-মেঘ-আকাশ-বাতাস-চাঁদ-নক্ষত্র <br />সবকিছুকে ছেঁড়েছুঁড়ে অস্পৃশ্য অন্ধকারে বাঁধব নীড় <br />তবুও আমি পাখি হব, উড়ে যাব, সব অনুভবের ঊর্ধ্বে <br />শূন্যতার অতল গর্তে পড়ে রব অনন্তকাল নির্বিকার !<br /> <br />০১/০৯/২০১৭</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/guccha-guccha-agniful/গুচ্ছ গুচ্ছ অগ্নিফুল2023-02-19T20:20:21-05:002023-06-26T04:18:59-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তোমাদের সমস্ত আরামের দামে <br />আজো আমরা কিনতে পারে নি <br />একজোড়া সুখের পায়রা <br />এত ঘাম, এত এত রক্তের বিনিময়ে এতকাল ধরে<br />শুধু ক্ষুধার আগুন জ্বেলেছি, আর নিভিয়ে দিছি<br />বেঁচে থাকার উত্তাপ; সত্যি বলছি—<br />তোমাদের পুষ্পশয্যার তলে <br />দু-চারটা ঘৃণার গ্রেনেড <br />পুঁতে রাখতে ইচ্ছে করছে খুব ! <br /> <br />না, না— আজ আর তোমাদের প্রতি ঘৃণা নয় <br />ঘৃণার পরিবর্তে ছড়িয়ে পড়ুক ক্রোধ <br />আজ বিপ্লবের বন্দুকনল হতে নির্গত গুচ্ছ গুচ্ছ অগ্নিফুলে <br />বিশুদ্ধ হোক তোমাদের বিনষ্ট বুর্জোয়া মূল্যবোধ ! <br /> <br />০১/০৯/২০১৭</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/death-river-magic-light-and-mask/মৃত্যুনদী, ম্যাজিক বাতি এবং মুখোশ 2023-02-19T08:50:17-05:002023-06-26T04:18:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>(১)<br />ঝিমধরা সন্ধ্যাগুলো ঝাপসা স্মৃতির সিঁড়ি বেয়ে <br />চলে যাক সেই প্রেমহীন মৃত্যুনদীর ওপারে <br />তুই আর আমি মিছামিছি আবেগের স্রোতে মেয়ে<br />জীবন-তৃষ্ণায় ডুবি ভাসি মরি বাঁচি বারে বারে !</p>
<br /><p>(২)<br />পথের দুই ধারে কাঁপছে ভয়ানক আলোছায়া<br />হঠাৎ হৃৎপিণ্ডে তুমি জ্বালিয়ে দাও ম্যাজিক বাতি-<br />তবু একা আমি পথ চলি ! তুমি অনর্থক মায়া,<br />অনন্ত নিঃসঙ্গতার মাঝে অসুস্থ পথের সাথী !</p>
<br /><p>(৩)<br />দিনের আলোয় তুমি অনেক বেশি সমাজ মানো<br />আর রাত্রি হলে বুকে টেনে নাও সব অন্ধকার!  <br />তোমার মুখোশের আড়ালে কোনো মুখ নেই যেন;<br />আলোয় খুব সুসভ্য, অন্ধকারে এত কদাকার !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/nidramagno-nodi/নিদ্রামগ্ন নদী2023-02-17T18:08:01-05:002023-06-26T04:19:09-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>যদি কোনোদিন খুব ভোরে তোমার মনের চরে <br />বিষাদের বৃষ্টি নামে, আমি কোনো বাঁধা মানব না<br />সোজা স্রোতে ভেসে যাব । যদি কোনোদিন ভুল করে <br />ভালো আমায় বেসেই ফেলো, আমি আর ভাসব না <br />ডুবে যাব, মুছে দিব সব নীল বিষাদের দাগ !<br />যদি ইচ্ছে-মেঘের পাহাড় ছুঁতে চাও ডাক দিও<br />সব জৈবিক জঞ্জাল ছেড়েছুঁড়ে রইব সজাগ <br />তুফান হয়ে ছুটে আসব— শক্ত করে ধোরো প্রিয় ।<br /> <br />কোথায় এত উল্লাসধ্বনি বাজে, কোথায় আনন্দ !<br />আমার প্রাণের কাছে কেবল একটা পাখি নাচে <br />ডানা দুটি ক্রামাগত কাঁপছে, খাঁচাটা তার বন্ধ—<br />পাতাদের সব আলোড়ন থেমে আছে গাছে গাছে । <br />স্বপ্নজল বুকে নিয়ে বয়ে যাচ্ছে নিদ্রামগ্ন নদী—<br />বয়ে যাচ্ছে, ক্রমাগত বয়ে বয়ে যাচ্ছে নিরবধি !<br /> <br />২৮/০৮/২০১৭</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/before-suicide/আত্মহত্যা করার আগে2023-02-16T18:29:34-05:002023-06-27T17:05:11-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>জীবনের স্বাদ জিভ থেকে খসে বসে আছে বিষাদের শূলে <br />সুতরাং আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে ! </p>
<br /><p>তবে আত্মহত্যা করার আগে আমি ঈশ্বরের বাহু থেকে <br />ছিনিয়ে আনতে চাই অমরত্বের তাবিজ;<br />অলৌকিক অন্তর্বাস থেকে চুপে চুপে <br />চুরি করে নিব স্বর্গের চাবি । </p>
<br /><p>আত্মহত্যা করার আগে আমি এই নগরের <br />সবগুলো ল্যাম্পপোস্টের উচ্ছেদ চাই;<br />অন্ধকারে  শুধু নিঃশব্দ শীৎকারে প্রেম হোক--<br />পাতালে পড়ে যতখুশি সাঁতার কাটুক <br />সভ্যতার মাতাল আলো । </p>
<br /><p>আত্মহত্যা করার আগে আমি মেঘনাপারের<br />ঐ সন্ত্রস্ত মেয়েটাকে সমতার মিছিলে <br />সবার সম্মুখে দেখতে চাই;<br />তার কণ্ঠের বারুদে ঘটুক গণ-বিস্ফোরণ–<br />পুড়ে ছাই হয়ে যাক এই অসাম্যের বন্দিশালা!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/mumurshu-shopner-vir/মুমূর্ষু স্বপ্নের ভিড়2023-02-15T18:11:25-05:002023-06-27T12:49:00-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>জীবনের গলিপথে ভিড় জমে আছে;<br />মুমূর্ষু স্বপ্নের ভিড়— হাওয়ার চাবুকে<br />ধীরে ধীরে অনেকের নিঃশব্দতা ভাঙে,<br />কারো নিভু নিভু চোখে টলমল করে<br />শান্ত গোধূলিবেলার শেষ আলোটুকু;<br />অস্ফুটিত আর্তনাদ বুকে বেঁধে নিয়ে<br />কেউ কেউ ক্ষেপে উঠে দৃঢ় প্রতিজ্ঞায়—<br />‘বাঁচতেই হবে, বেঁচে উঠতেই হবে ।’<br /> <br />কেউ কি নেই ওখানে, ওই গলিপথে—<br />মুমূর্ষু স্বপ্নের মানবিক গলিপথে ?<br />বাঁচিয়ে তোলো ওদের, মরণের মুখে<br />লাল কালি লেপ্টে দিয়ে যেই স্বপ্নগুলো<br />বেঁচে উঠতে চাইছে জীবনের জন্য—<br />যেভাবেই হোক, বাঁচিয়ে তোলো ওদের ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/bachte-hole-bachate-chaile/বাঁচতে হলে, বাঁচাতে চাইলে2023-02-14T19:50:23-05:002023-06-27T08:00:33-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মারো, নইলে মারা খাবে <br />একে একে সরে যাবে <br />সব ছায়া, সমস্ত আশ্রয় ।<br />আমি চাই নি কখনো <br />আমি চাই না এখনো<br />মধ্যপথে চাকাহীন গাড়ি হয়ে<br />নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকুক জীবন<br />কিংবা কাকতাড়ুয়ার মত<br />রোদের চাবুক মুখ বুজে <br />সয়ে যাও, মেনে নাও ।<br />তাই বলছি, মারো <br />মেরে ফাটিয়ে দাও <br />আঘাতে প্রতিঘাতে রক্ত ঝরাও !</p>
<br /><p>বুকে জিভে ঠোঁটে বারুদ জমাও <br />ওসব ইশ্তেহার, কাগজের জঞ্জাল<br />ছুঁড়ে ফেলে হাতের আঘাতে <br />একটা বিস্ফোরণ যদি না হয়<br />জীবনে উত্তাপ আসবে না <br />মহাজাগতিক অন্ধকার সাঁতরে<br />পৃথিবীর কোলে ফিরবে না আলো ।</p>
<br /><p>কারা, ওরা কারা আকাশে আকাশে <br />বড় বড় স্বপ্নের ফানুস ওড়ায় ?<br />কারা স্ব স্ব জীবনকে পদতলে মাড়িয়ে <br />মৃত কবির কঙ্কালে খোঁজে জীবন-<br />নীল ধোঁয়ার জাল পেতে আটকাতে চায়<br />বিষাদের কালসাপ, ফোঁস ফোঁস ছোবলে<br />কালো হয়ে যায় ফুসফুসের লালিমা !<br />ওরা কারা ? কোন মায়ের ছেলেরা ?<br />আমি চিনি না, আমি জানি না !</p>
<br /><p>শুধু জানি, এইটুকু জানি :<br />বাঁচতে হলে, বাঁচাতে চাইলে<br />মারতে হয়, মরতে হয় ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/life-on-nothing/শূন্যতায় বাঁচি2023-02-13T18:33:56-05:002023-06-26T04:19:07-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>পায়ের তলে গোলাপগুলো চূর্ণ করে <br />তোমার যেদিকে ইচ্ছে চলে যেতে পারো<br />শুনশান নীরবতা— তালা নেই ঘরে <br />চাইলেই হয়ে যেতে পারো অন্য কারো<br />সব প্রেম সব স্মৃতি সব ছেড়েছুঁড়ে <br />মড়মড়ে পাতার মত উড়ে যেতে পারো <br />কিংবা বজ্রাঘাতে দূর থেকে আরো দূরে <br />পুড়ে পুড়ে ধ্বসে ধ্বসে খসে যেতে পারো !<br /> <br />আমি তো লটকে আছি লটকেই থাকি<br />কাঁটাতারে ঘৃণাবিদ্ধ লাশটার মত<br />দেহটা ঝরে পড়ার খানিকটা বাকি <br />আকাশে পা তোলা মাটিতে মস্তক নত<br />প্রেম আর ঘৃণা নাকি থাকে কাছাকাছি— <br />প্রেম নয়, ঘৃণা নয়— শূন্যতায় বাঁচি ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/nosto-valobasha/নষ্ট ভালোবাসা 2023-02-12T19:33:09-05:002023-06-26T04:19:11-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আকাশের পালকি থেকে নববধূর মতন ঘোমটা মাথায়<br />এই নগরে যখন সন্ধ্যা নামে—<br />পেট্রোলদগ্ধ ধোঁয়া উপেক্ষা করে<br />অগণিত নীল জোনাকির ছুটাছুটি<br />একটু উষ্ণ সুখের সন্ধানে...<br /> <br />বুক-পকেটে কিছু উষ্ণতা জমা রেখে<br />তোমার শীতল হাতে রাখি হাত—<br />তীব্র ঝলকানি দিয়ে একসঙ্গে জ্বলে ওঠা<br />নগরের সবগুলো ল্যাম্পপোস্টের মত সমস্ত শরীরে<br />জ্বলে ওঠে কামনার দীপ;<br />অনন্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে <br />আমরাও তখন একজোড়া নীল জোনাকি ।<br />ক্রমাগত সুখোষ্ণ চুমুতে লাল হয়ে ওঠে সব নীল !<br /> <br />সবশেষে তুমি তোমার, আমি আমার;<br />নাগরিক ডাস্টবিনে পড়ে থাকে<br />আমাদের নষ্ট ভালোবাসা ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/aj-ar-ami-kothao-nei/আজ আর আমি কোথাও নেই2023-02-11T19:57:38-05:002024-03-01T06:59:07-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>একটা অমীমাংসিত প্রেম আমাকে খুব একা করে দিল;<br />আমাকে বিলুপ্ত করে দিল <br />অনন্ত রহস্যময় অন্ধকারের অতলে;<br />আজ আর আমি কোথাও নেই– </p>
<br /><p>মেঘাচ্ছন্ন বিক্ষুব্ধ আকাশের তলে আমি নেই<br />কিংবা হিমার্ত হৃদয়ে উত্তরের জানলাতে রোদ পোহাতে;<br />বৃক্ষের ছায়ায়, কৈশোরকালীন কবিতার খাতায়<br />বিষাদগ্রস্ত শেষ বিকেলের প্রজাপতির পাখায়<br />জলের তরঙ্গে টলমলরত <br />ছোট পুকুরটার ধারে, কিংবা <br />সুনিবিড় আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জ্যোৎস্নারাতের কোলে<br />উড়ন্ত জোনাকিদের স্পন্দনে– কোথাও আমি নেই। </p>
<br /><p>আজ আর আমি নেই কোনো বন্ধনে কিংবা<br />নিঃসঙ্গতার যাতনায় ঢুকরে ওঠা ক্রন্দনে;<br />স্লোগানে স্লোগানে বিষ্ফোরিত প্রতিবাদী মিছিলে<br />বিক্ষোভ সমাবেশে, ঘুম ঘুম লাল চোখে<br />সাহিত্য আড্ডা কিংবা পাঠচক্রে<br />এমনকি, ফেসবুকে স্ক্রলিংরত কোনো গ্রুপ ফোটোতে! </p>
<br /><p>সত্যি বলতে আজ আর আমি নেই কারো সাথে;<br />একটা অমীমাংসিত ভালোবাসা কিংবা বিচ্ছেদ–<br />আমাকে খুব একা করে দিল, বিলুপ্ত করে দিল… </p>
<br /><p>আজ আর আমি কোথাও নেই–<br />সত্যিই কি আমি ছিলাম <br />কোনদিনও–কোথাও–কারো সাথে?</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/swavabik-lage/স্বাভাবিক লাগে2023-02-11T14:02:41-05:002023-06-27T14:06:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি পুনরায় সভ্যতার চাদর গায়ে জড়িয়ে নিলাম । কোনো বিনষ্ট বাতাসের ঘিনঘিনে ছোঁয়ায় আর আমি কেঁপে উঠব না । কিংবা ওসব দেখে লজ্জা ? ক্রোধ ? বেদনা ? কিচ্ছু না ।<br />ওসব আমার কাছে এখন খুব স্বাভাবিক লাগে !<br /> <br />মধ্য দুপুরের তপ্ত ফুটপাথে মৃত কুকুরের মত শুয়ে থাকা জীবন্ত মানুষ, ডাস্টবিনে কাক আর মাছিদের সঙ্গে অনাহারী বৃদ্ধের পৃথিবীর বাতাসে আরো একটা বেশি নিঃশ্বাস নেয়ার লড়াই, নির্জন অফিসকক্ষে বড় কর্তার হিংস্র থাবায় গার্মেন্টসকর্মীর ছিন্নভিন্ন পাজামা, কনকনে শীতের রাতে বেওয়ারিশ নগ্ন শিশুর থরথর কাঁপুনি, থাই গ্লাস বেষ্টিত উঁচু দালানে মোটা কম্বলের নীচে ঘুমন্ত ঈশ্বর... আরো কত ছবির প্রদর্শনী দেখি রোজ ।<br />লজ্জা ? ক্রোধ ? বেদনা ? কিংবা ‘মানুষগুলোকে বাঁচতে দাও, বাঁচতে দাও’ বলে চিৎকার ? কিচ্ছু না ।<br />ওসব আমার কাছে এখন খুব স্বাভাবিক লাগে !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/request/নিবেদন 2023-02-09T20:07:41-05:002023-06-26T04:19:48-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>নীলিমা,  কিছু জরুরী কথা ছিল<br />আজ না, তুমি অন্যদিন এসো<br />নয়নে নীল আলো জ্বেলে<br />অন্য কোনো বিকেলে, নীলিমা। </p>
<br /><p>আজ আমার কণ্ঠস্বর<br />জমাট অভিমানের শীতলতায় আড়ষ্ট;<br />কথা জড়িয়ে আসে– চারপাশে<br />তোমার স্মৃতি ছাড়া <br />উল্লেখযোগ্য কোনো সঙ্গী নেই। <br />তবুও রোজ বাতাসে কথা ভাসে<br />আর আগুনের ফুলকির মতো <br />বিন্দু বিন্দু চাপা কষ্টের উদগিরণে<br />ভারী হয়ে আসে শ্বাস! <br />রোজ না, তুমি একদিনই এসো। </p>
<br /><p>যেদিন সূর্যের উষ্ণ চুম্বনে<br />বেদনার মেঘগুলো সব <br />বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে;<br />বৃষ্টি থেমে গেলে পর<br />ভেজা ঘাসপাতাকে দুই ডানা মেলে<br />প্রবল মমতায় জড়িয়ে ধরবে প্রজিপতিটা–<br />অতঃপর বিষণ্ণ বিকেল ঘনিয়ে <br />আমাদের পৃথিবীতে নামবে স্নিগ্ধ সন্ধ্যা;<br />সেদিন–সেই সন্ধ্যায়–<br />সমস্ত সংকোচ ভুলে<br />গোধূলির মতো ধূসর কালো খোলা চুলে <br />তুমি এসে আমার পাশে বোসো নীলিমা। </p>
<br /><p>হাওয়ার তরঙ্গে ভাসতে থাকা সব দুঃখকথা<br />আমি দুই হাতের মুঠোয় আটকে <br />তোমার শরীরের প্রতিটা পল্লবে গেঁথে দিব;<br />আর নিঃশব্দে তোমার বুকে <br />মাথা রেখে শুনবো রক্তের আলোড়ন! </p>
<br /><p>আজ না, তুমি অন্যদিন এসো;<br />নয়নে নীল আলো জ্বেলে<br />অন্য কোনো বিকেলে, নীলিমা–<br />নিবিড় নিস্তব্ধতায় <br />আমি আবার তোমায় ভালোবাসব।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/kobi-o-kobutor/কবিতা ও কবুতর 2023-02-08T19:21:22-05:002023-06-26T04:19:05-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এই সকালের অনুভব, শরীরের আলিঙ্গনে শরীর<br />বিমুগ্ধ জানলায় হঠাৎ সতেজ রোদের চিৎকার <br />যেন ভেঙে চুরমার করে দিছে অবসাদের চার দেয়াল !</p>
<br /><p>আমি ছিঁড়ে ফেলেছি সমস্ত ফুলের শেকল <br />মাতাল প্রজাপতিটা এবার দেয়ালের মায়া ছেড়ে আসুক <br />বসুক, ঘুরে ঘুরে উড়ে বেড়াক তোমার সুবাসিত চুলের চারপাশে ।<br />ঘাসে ঘাসে শিশিরের টলমল, তোমার নির্মল বুকের কুয়াশায় <br />মুখ লুকিয়ে আমার এই শত শত চুম্বনের বর্ষণ <br />যে উত্তাপ জাগিয়ে দিছে, তাতে মিছে হয়ে গেছে <br />গলে গলে ঝরে পড়ছে সব ঠাণ্ডা জমাট পাপবোধ <br />পুড়ে গেছে অনুতাপের ভেজা কাঠ !</p>
<br /><p>আমি খুলে ফেলেছি সব সভ্য পোশাক <br />শরীরের আনাচে কানাচে প্রতিটা পল্লবে <br />ফুটে ওঠে রোমাঞ্চিত ঘামের কণিকা, তোমার চোখের নিঃশব্দ পলকে<br />যত আদিম ইশারা, ভালোবাসাবাসির স্রোতে<br />বিলীন হয়ে যাওয়ার পিপাসা- আমাকে আরো উন্মাদ করে দেয়<br />টেনে নিয়ে যায় শান্ত কুয়ার ওপারে জ্বলন্ত রক্তিম চুলার দিকে !</p>
<br /><p>আগুনের অনুভবে আমি তোমাকে প্রশ্ন ছুঁড়ি--<br />কেন লোকে কাগজ ঘেঁটে ঘেঁটে ঠোঁটের স্পন্দনে কবিতা পড়ে ?<br />তোমার শরীরের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় কত শত শত কবিতা ফুটে আছে !<br />কেন লোকে শ্বাসরুদ্ধ অন্ধকার খাঁচায় কবুতর পোষে ?<br />তোমার চোখের নীলিমায় আজ অজস্র কবুতর ওড়ে বেড়ায় !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/from-feminist-stage/নারীবাদী মঞ্চ থেকে 2023-02-07T18:29:51-05:002023-06-26T04:18:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>নারীবাদী মঞ্চে পাঁচটা পাপেটের অনর্গল চিৎকারে<br />কবির চোখে নিদ্রা নামে । সেমিনার রুমের যান্ত্রিক হাওয়ায়<br />দুপুর দুটা থেকে বিকেল চারটা--<br />ভিজে ভোরের স্তব্ধতা আর নিশাচর রাত্রির প্রলাপ । </p>
<br /><p>বিষণ্ণ আঁধারের বাঁকে বাঁকে লেজে মাথায় <br />ঝুলে আছে মানুষের ছেঁড়া স্বপ্নের পোস্টার !</p>
<br /><p>নারী তুমি জাগো, জেগে জেগে ঘুমাও, আমরা রয়েছি <br />সর্বক্ষণ সরব । তোমার শরীরের প্রতিটা পল্লবের গোড়ায় <br />আমরা পুঁতে দিয়েছি অর্থকরী অঙ্কুর । নারী তুমি <br />এবার পাপড়ি মেলো, ফোটাও অজস্র মুক্তির ফুল । <br />আমরা রয়েছি ডালা হাতে দাঁড়িয়ে।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/inside-own-fraction/নিজস্ব ভগ্নাংশের ভিতর2023-02-06T13:45:02-05:002023-06-26T04:19:00-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছি আমার ভেতর <br />হৃৎপিণ্ডে বসে বিন্দু বিন্দু হিসাব কষে পোড়া রক্ত <br />মগজের অন্ধকারে মারা খাচ্ছে বিবেক, মারা খাক<br />প্রেম-প্রীতি, গুহামানবের আদিম আবদার <br />আর স্বপ্নের যাত্রাপথে টলমলরত মাতালের ঝাঁক<br />উড়ে উড়ে যে যার নিজস্ব গন্তব্যে ফিরে যাক,<br />বাকীসব পড়ে থাক্ মাটির ঘনিষ্ঠতায় <br />অচ্ছুৎ বাদামের খোসার মতন । </p>
<br /><p>আমি ক্রমশ নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি নিজস্ব ভগ্নাংশের ভেতর <br />অথচ আমি চেয়েছিলাম তাকে <br />সর্বস্বের বিনিময়ে শুধু তাকে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/on-urban-love-s-fire/নাগরিক ভালোবাসার চুলায়2023-02-02T20:13:09-05:002023-06-27T03:44:25-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>নাগরিক ভালোবাসার দেয়াল ঘেঁষে <br />যে বৃক্ষ স্বপ্নের ডালপালা মেলতে চায় <br />তাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দাও ।</p>
<br /><p>তার শিকড়ে পুঁতে দাও হৃদয়ে যত রাখা আছে <br />কষ্টের কার্বন, সে নির্দ্বিধায় হজম করে নিবে <br />ভোর হলে টুপটাপ শিশিরে ভুলিয়ে দিবে <br />বিগত রাত্রির পাপ; বাকলে লিখে রাখো <br />দু'চারটে ধূসর অক্ষর কিংবা প্রিয় কোনো নাম <br />সে ভুলবে না, আমাদের হৃদয়ের গোপন ক্ষতের মত<br />বহুদিন স্তব্ধতায় আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রাখবে; <br />তার পাতায় পাতায় মিশিয়ে দাও সব লজ্জার রঙ <br />সন্ধ্যা এলে বিবর্ণ মাটির তলে একে একে সব গুঁজে দিবে । </p>
<br /><p>নাগরিক ভালোবাসার চুলায় <br />যে বৃক্ষ স্মৃতির লাকড়ি হয়ে জ্বলতে চায়<br />তাকে ইচ্ছেমতো জ্বলতে দাও, পুড়তে দাও <br />জ্বলেপুড়ে একদিন সে প্রতিটা প্রেমহীন প্রাণে<br />বেঁচে থাকার নতুন উত্তাপ এনে দিবে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/the-unwanted-life/যে জীবন চাই নি 2022-04-07T21:21:16-04:002023-06-27T03:57:44-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি তো এমন জীবন চাই নি;<br />যেখানে শুধু স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা<br />আকাশে তাকালে, ছোট বড় সব আকাঙ্ক্ষা<br />সাদা মেঘের কাফনে ঢাকা! <br />যেখানে সকাল হলে, তাজা রৌদ্রের ভিতর<br />তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখের বদলে দেখি,<br />একটা পাতাঝরা বিরহী বৃক্ষের ছায়া;<br />সন্ধ্যাকালীন বৃষ্টি নামলে, যেখানে বুকের মাটি খুঁড়ে <br />জেগে উঠে প্রাগৈতিহাসিক মায়া–<br />অচেনা অরণ্যের পথ ধরে <br />সরীসৃপের মত এঁকেবেঁকে চলে যায় <br />চিরচেনা সেই নিজস্ব নির্জন নদী! </p>
<br /><p>আমি তো এমন জীবন চাই নি;<br />যেখানে জলের টানে ভাসা যায় <br />তোমার পানে চেয়ে বাঁচা যায়, মরা যায়; <br />কিন্তু মায়ের গর্ভে আর কখনো ফেরা যায় না!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/haturir-heartbeat/হাতুড়ির হার্টবিট2022-01-29T08:53:25-05:002023-06-26T04:18:59-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>নিষিদ্ধতার চাবুকে ক্রমাগত <br />ক্ষয়ে যাচ্ছে, ঝরে যাচ্ছে, রক্তাক্ত হচ্ছে<br />অলৌকিক লৌহদণ্ডে ঝুলন্ত<br />আমাদের যাপিত জীবনের ফাঁসগুলি—<br />আমরা বুঝে ফেলেছি, চলমান <br />পৃথিবীর ইস্পাতি ছদ্মবেশ! </p>
<br /><p>বরফ-বরফ যুদ্ধে পরাস্ত পাখিরা <br />যখন ডানায় করে কিছু শুভ উল্লাস নিয়ে<br />আমাদের নগরে বেড়াতে আসে<br />তখনও আমরা যুদ্ধবাজ ঈগলের খামচিতে<br />মানবতার মানচিত্র দেখতে প্রস্তুত; <br />হরদম যান্ত্রিক হর্নে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় <br />পদ্মপুকুরের প্রতিটা ঢেউ <br />প্রতিটা কোমল পাপড়ি। </p>
<br /><p>তবু ভোরের বাগিছায় গান গেয়ে যায় <br />কিছু পাখি— তবু আমাদের রক্তনালিতে <br />ধুক ধুক বেজে চলে হাতুড়ির হার্টবিট!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/sudhu-khoyechi-jutar-tola/শুধু ক্ষয়েছি জুতার তলা 2022-01-28T07:08:38-05:002024-02-23T11:17:46-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>রক্তাক্ত চোখ মেলে কী চাস তুই, কিছু কেড়ে নিতে ?<br />দীর্ঘশ্বাসগুলি রাখা আছে উত্তরের ব্যালকনিতে;<br />আকাশখানাও আজ নিঃস্ব, তাই নত রাখি দৃষ্টি— <br />পাতালে চালান করে দিছি সব রৌদ্র-ছায়া-বৃষ্টি ।<br /> <br />প্রাণের চূড়ায় বাঁধি গান , প্রেমের চূড়ায় সুর <br />তবু তুই একটানা জঁপে যাস শুধু— ধু্র ধুর ! <br />ছেড়ে চলে যাব ? না না এ আর কখনো ভাবব না<br /> যেখানে মুক্তি আমার , সেখানেই যত প্রবঞ্চনা ।<br /> <br />ক্যামনে ভুলে যাব বল্ অশ্রুদগ্ধ সেই রাতদিন ?<br />পাথর আমি, উপেক্ষা সব সয়ে গেছি শব্দহীন ।<br />পাই নি কিছু, কখনো কাউকে হয় নি কিছু বলা<br />তোর সঙ্গে হেঁটে হেঁটে শুধু ক্ষয়েছি জুতার তলা !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/tin-romonir-moddhomoni/তিন রমণীর মধ্যমণি2020-12-13T17:04:40-05:002024-02-23T11:16:40-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এইমাত্র কুয়াশাময় শীতের সকালটা <br />তোমার রক্তিম হাসির চিৎকারে <br />চৌচির হয়ে গেল !<br />এ কথা আমি কাউকে বলে <br />বিশ্বাস করাতে পারব না, মেয়ে ।</p>
<br /><p>তিন রমণীর মধ্যমণি হয়ে <br />তুমি কতটা উত্তাপ ছড়িয়েছিল<br />এই হিমার্ত হৃদয়ে ?<br />রোদ্দুরের অবিরাম দুরন্ত চুম্বনে <br />কতটা রাঙা হয়ে উঠেছিল <br />তোমার সবুজ কামিজের আড়াল ?<br />এসব আমি জানতে চাচ্ছি না !</p>
<br /><p>শুধু বলি, তোমার আমার এই চুপচাপ <br />দৃষ্টি-দৃষ্টি খেলায় কেন সামনে এসে দাঁড়ায় <br />একটা ক্ষতবিক্ষত লাল পর্দা ?<br />কেন বার বার সরে যায় <br />তোমার বিমুগ্ধ বুকের জমিনে জড়িয়ে থাকা <br />ওই কালো সিল্কের ওড়নাটা ?</p>
<br /><p>শিশিরের শীতলতায় আড়ষ্ট মানকচুর ডগায় ডগায় <br />ক্লান্ত একাকী ডাহুক ঘুর ঘুর করে কার সন্ধানে ?<br />তুমি বলে দাও, হাসি আর রোদ্দুরের স্রোতে<br />ভাসমান শীতার্ত পাখিদের তুমি জিজ্ঞেস করো--<br />শুধু কি পালকে পলক ফেলে বেঁচে থাকা যায়? <br />আমার হৃদয় তো আস্ত পাখিটাকে চায়!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/nothing-but-only-to-love/শুধু ভালোবাসতে চেয়েছি 2020-12-10T12:59:53-05:002023-06-26T04:19:11-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>(১)<br />সেইসব শীত-বিকেলের জানালায় মাঠজুড়ে <br />আজো সূর্য তার লাল আকাঙ্ক্ষার দাগ কাটে;<br />আজো আমার ব্যথিত চোখে শীতার্ত পাখিরা উড়ে<br />ঠোঁটে সিগারেট জ্বলে, স্মৃতিগুলো পোড়া রক্ত চাটে!</p>
<br /><p>(২)<br />সমস্ত প্রত্যাখ্যানের ক্ষত চাঁদের নগ্ন শরীরে <br />আমি লেপ্টে দিতে চাই, যেন নীল বিষাক্ত জ্যোৎস্নায়<br />এই রাত্রি ভরে যায়! যেন দৃষ্টি হতে ধীরে ধীরে<br />তোমার সেই আগুনমাখা মুখচ্ছবি সরে যায়! </p>
<br /><p>(৩)<br />আমি তো বেশি কিছু চাই নি, তোমার নরম হাতে<br />এই হাত রাখতে চেয়েছি কোনো পড়ন্ত বিকেলে <br />আমি তো শুধু ভালোবাসতে চেয়েছি মেঘলা রাতে<br />যেভাবে আকাশ ভালোবাসে পৃথিবীকে ছাতা মেলে!</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/vonvone-machider-sathe/আড়ষ্ট হয়ে শুয়ে আছি 2020-12-05T11:37:36-05:002023-06-26T04:19:56-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তোমাদের সাদা দেয়ালে একটা জ্বলজ্বলে রাঙা পোস্টার <br />সেঁটে দিব বলে আমি ছেড়ে এসেছি ছেলেবেলা<br />পাখির কলতানে মুখরিত ভোর, মায়ের তুলতুলে হাতের <br />টাকি মাছের ঝোল, নরম সুখোষ্ণ কোল; <br />তোমাদের ভালোবাসা পাব বলেই তো ক্রমাগত লাথি মেরেছি <br />পড়ন্ত শীতবিকেলের চোয়ালে, জ্বেলেছি আগুন <br />উজাড় করে দিছি সবুজের সারি, বসন্ত না আসতেই <br />শুকাতে শুকাতে মরে গেছে ফাগুন !<br /> <br />তবুও তোমাদের সাদা দেয়ালে একটুও রক্তের উত্তাপ লাগল না <br />আমিও ভালোবাসা পেলাম না; তবুও কেউ এসে বলল না—<br />‘ভালোবাসা ছাড়া কেউ কি বাঁচে ? এই গাছে ওই গাছে <br />এত এত মৃত্যু ঝুলে আছে !’<br />ভালোবাসা পাবার বদলে আমি কেবল বিষাক্ত ছোবল পেয়েছি <br />ছোবলের নীল নিপীড়নে আমি কেবল ক্ষয়ে ক্ষয়ে ঝরে গেছি;<br />ভালোবাসা পাবার বদলে আমি শুধু নষ্ট হয়ে গেছি, ভ্রষ্ট হয়ে গেছি <br />আড়ষ্ট হয়ে শুয়ে আছি ভনভনে মাছিদের সাথে !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/people-final-speech-about-her/সবশেষে তার সম্পর্কে মানুষেরা যা বলল 2020-10-05T22:49:30-04:002023-06-26T04:19:13-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>সূর্যের শেষ ছোবলে আকাশটা রক্তাক্ত হওয়ার আগেই <br />তার শরীরজুড়ে চারজোড়া হাত <br />আটপাটি দাঁতের অবাধ্য বিচরণ !<br />সে চিৎকার করতে চেয়েছিল <br />ভয়াল হাতের থাবা চেপে ধরেছে কণ্ঠনালী <br />সে আগলে রাখতে চেয়েছিল <br />তার আগেই হিংস্র নখের আঁচড়ে ছিঁড়েফেঁড়ে উড়ে গেল ওড়না<br />কিছুক্ষণ পিঞ্জরবন্দি পাখির মত ঝাপটা-ঝাপটি শেষে <br /> সে আকাশের মত উন্মুক্ত হয়ে গেল !<br />আকাশ কাউকে বাঁধা দেয় না<br />সুতরাং সেও আর বাঁধা দিল না—<br />গোধূলিবেলার মত নিস্তেজ<br />ঝরাপাতার মত নিষ্প্রাণ <br />সে মাটিতে পড়ে রইল । <br /> <br />সূর্য ডুবে যায়, রাত্রির ক্যানভাসে ঈশ্বর <br />রংতুলি হাতে আঁকতে বসেন সেলফ্-পোট্রেট<br />নীলাভ আঁধারে মৌচাকভাঙা মৌমাছির মত <br />নক্ষত্রদের ছুটাছুটি;<br />ঈশ্বরের তুলির আঁচড়ে ক্রমাগত গাঢ় হতে থাকে রাত <br />নীলাভ আঁধার ক্রমশ নীল হয়ে আসে— <br />সে তখন শীতল মাটির কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে । <br /> <br />সূর্য জাগে, নতুন আশার নির্মল আলো ঢেলে দিয়ে<br />সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর মত ফুটফুটে ভোরকেও জাগিয়ে তোলে <br />সোনালি ইশারায় আকাশকে তার কাছে ডাকে;<br />বিগত ছোবলের ক্ষত মুছতে মুছতে <br />অভিমানের জমাট-বরফ ভাঙতে ভাঙতে <br />অবশেষে আকাশটাও ফিরে আসে । <br />কিন্তু সে তো আর জাগল না <br />তার চোখে তো আর কোনো ভোরের আলো লাগল না <br />অনেক ডাকাডাকি হল, কই, সে তো আর ফিরল না !<br /> <br />সূর্য বলল সে ভোরের আকাশের মত ফুটফুটে নির্মল ছিল <br />ভোরের আকাশ বলল সূর্যের মত জ্বলন্ত তেজস্বী অগ্নিমূর্তি<br />আর মানুষেরা বলল সে একটা মাংসপিণ্ড ছিল, স্রেফ একটা মাংসপিণ্ড !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/ghumkhuri-patal-nogori/ঘুমখুরী পাতাল নগরী2020-06-21T12:39:48-04:002023-06-26T04:18:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>অনুভূতির তলে ফকফকা চাঁদ জ্বলে আছে <br />অন্ধকার মাতৃগর্ভ থেকে টেনে আনা মৃত শিশুর মত !<br />চাঁদকে ঘিরে শোকার্ত জমাট মেঘের কান্না <br />গলে গলে ঝরে পড়ছে<br />ভিজিয়ে দিচ্ছে অচেতন পাথরের চোখমুখ;<br />আর আমি নরম বালিশের উপর আরামসে চেপে আছি বুক <br />দুঃখ-শোকে অন্ধকারে আজকাল আমি মোটেই<br />প্রকম্পিত হই না<br />হিপোক্রেসিকে আপাতত জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে<br />নির্বিবাদে স্বীকার নিচ্ছি--<br />সুন্দরের শরীরে কেউ কালিমা লেপুক কিংবা চন্দন মাখুক <br />আমার কিছুই আসে যায় না । </p>
<br /><p>বরং দেয়াল ভাল লাগে আমার<br />ভালো লাগে টিকটিকি হয়ে মশা-শিকার<br />ক্ষুধার ফাঁদে আটকা পড়া দোয়েলের ছট-ফট;<br />আর ভালো লাগে গাঞ্জা টেনে রোজ স্মৃতির পঙ্কিলে<br />ডুবে থাকতে, এথিক্সের চাবুক-পেটায় <br />রক্ত ঝরাতে ঝরাতে, ক্লান্ত হতে হতে <br />অবশেষে ঘুমের শাসন মেনে নেয়া বেশ রোমাঞ্চকর । </p>
<br /><p>ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠলে আজো মা<br />ঘামে ছুপছুপ কপালে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, <br />কেন নষ্ট হয়ে গেলি ? কার দোষে <br />পড়ে রইলি ভ্রষ্ট আঁধারে !<br />কোল-বালিশের প্রতি বিশেষ আসক্তি আছে বলে <br />প্রেমিকার আলিঙ্গন পাই নি কতদিন হয়ে গেল; <br />জীবনটাকে 'জঞ্জাল' ভেবে নির্জন ছাদ থেকে<br />কতবার চুপে চুপে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছি<br />ছুরির ফলার মত পুলসিরাতের তলে !<br />তবু কেন জানি পারি না, বাঁচবার সাধ হয়<br />অশ্রুর লবণে আড়ষ্ট ঠোঁটের সামনে <br />কে জানি ঝুলিয়ে রাখে একগুচ্ছ টসটসা আঙুর । </p>
<br /><p>ফের চোখ বুজে আসে, ঘাসে ঘাসে <br />ঘাতকের ছদ্মবেশ ঝেড়ে ফেলে <br />একে একে প্রকাশিত হতে থাকে প্রজাপতিগুচ্ছ;<br />আমিও রৌদ্রের ঘরদোর ভেঙেচূরে <br />ডেকে আনি নির্লিপ্ত ছায়াপুঞ্জ;<br />অনুভূতির যাবতীয় খনিজ খুঁড়ে খুঁড়ে <br />অচেতন হয়ে রই এক নগরীতে<br />ঘুমখুরী পাতাল নগরী !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/kotota-manush-kotota-jontra/কতটা মানুষ, কতটা যন্ত্র2020-05-19T17:32:43-04:002024-02-23T11:14:04-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আজ আর কোনো ভালোবাসাবাসি নয়—<br />ইলেক্ট্রিক চুম্বনে পুড়ে গেছে ঠোঁট <br />শরীরের বাঁকে বাঁকে অলিতে গলিতে<br />রমণীয় স্পর্শগুলো আজ শুধু বিতৃষ্ণা জাগায়<br />ক্লান্তির ঢেউ তোলে...<br />চুম্বকীয় ইশারায় আমাকে ক্রমশ <br />টেনে নিয়ে যাচ্ছে দিকহীন অন্ধকার !<br /> <br />চলো, তার চেয়ে বরং <br />বসে থাকি কোনো মৃত নদীর পাড়ে <br />কান পেতে শুনি তার যৌবন শুকাতে শুকাতে<br />একদিন হুট করে মরে যাওয়ার ট্র্যাজিক গল্পটা <br />কিংবা চাঁদনীরাতের মাঠে <br />জ্যোৎস্নাভেজা ঘাসে <br />ঝির ঝির হাওয়ায় <br />মেলে ধরি হাতের মুঠো<br />জোনাকির মতন উড়তে থাকুক<br />আমাদের দুঃখবিদ্ধ স্বপ্নগুলি...<br /> <br />আজ আর কোনো ভালোবাসাবাসি নয়—<br />চলো, তার চেয়ে বরং <br />টেনে টুনে খুলে ফেলি সভ্য পোশাকগুলি <br />নিজের ভিতর হাতড়ে বেড়াই নিজেকে স্পর্শহীন <br />আয়নায় নিজেকে নগ্ন দেখি নিজে লজ্জাহীন—<br />কতটা মানুষ আছি আজও <br />কতটা যন্ত্র ?</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/andhokar-ek-muthu-uttap-ebong-ratrir-rasta/অন্ধকার, একমুঠো উত্তাপ এবং রাত্রির রাস্তা2020-05-11T20:37:00-04:002024-02-23T11:10:49-05:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>(১)<br />অন্ধকার মুছে যাবে, অন্ধকার মুছে যায়<br />চোখ মেললেই দেখবে, তোমার শিয়রের পাশে <br />চোখ বুজে শুয়ে আছে চুপচাপ ভোর;<br />জানলাগুলিও মেলে দিও, তোমার তুলতুলে গাল <br />রাঙিয়ে দিয়ে যাবে চৈতালী রোদ্দুর ।<br /> <br />(২)<br />বুক-পকেট থেকে একমুঠো উত্তাপ <br />গুঁজে দিলাম শীতল রাত্রির হাতে;<br />বাতাসে বারুদগন্ধ <br />জ্যোৎস্নামাখা ঘাসপাতা কাঁপতে কাঁপতে<br />নিস্তেজ হয়ে আসুক<br />ল্যাম্পপোস্টগুলো নত হতে হতে <br />মিশে যাক মৃত্তিকার সাথে ।<br /> <br />(৩)<br />একহাতে রাঙা পোস্টার, অন্য হাতে গোলাপ <br />বিপ্লব আর ভালোবাসার জয়ধ্বনি করতে করতে<br />তুমি ফিরে যাও ফিরে আসো... আর আমি...<br />আমি রাত্রির রাস্তায় বসে বসে সূর্যোদয়ের আল্পনা আঁকি;<br />মিছিলের শেষ স্লোগানের মত প্রতিধ্বনি হয়ে <br />তুমি বার বার ফিরে আসো ফিরে যাও<br />আমি রাত্রির রাস্তায় কান পেতে থাকি ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/jole-vasche-premiker-kata-shir/জলে ভাসছে প্রেমিকের কাটা শির2020-05-06T22:18:27-04:002023-06-26T10:38:17-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>বিমানবন্দরে প্লেন উড়াল মারার পরও <br />ওরা কারা এখনো বুকের অন্দরে <br />এত এত যত্ম করে <br />জোড়-কবুতর পোষে <br />চোখের বাত্তি নিভায়ে জলজ্যান্ত আন্ধারে <br />ওরা কারা অমন শোঁ শোঁ করে ঘুমায় <br />আর স্বপ্নের ছিপি খুলে <br />স্মৃতির রক্ত চোষে </p>
<br /><p>আমি মিস্টিক জ্বরে অনবরত কাঁপতে থাকি<br />পৃথিবীতে মিথ্যার পোশাক ছুঁড়ে ফেলে <br />ডিল্যুশন্যাল ঢঙে নাচতে নাচতে <br />স্বর্গে চলে যাচ্ছেন যুধিষ্ঠির <br />আমি পাগলের মত এদিক-ওদিক ছুটি <br />ইউলিসিসের ঠোঁটে বিজয়ের শিস্ <br />পুড়ে গেছে ট্রয়, নিভে গেছে প্রেম <br />জলে ভাসছে প্রেমিকের কাটা শির</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/moshader-concert/মশাদের কনসার্ট2020-05-04T20:42:18-04:002023-06-26T04:19:09-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>(১)<br />স্যাঁতসেঁতে জ্যোৎস্নারাতের ক্যানভাস<br />আমার তন্দ্রাকাঁপা চোখে দুলে উঠতেই <br />আমি একটা উজ্জ্বল স্বপ্নের শরীর হাতড়ে বেড়াই<br />থোকায় থোকায় ঝুলন্ত তারাদের ভিড় থেকে <br />দু-একটা আধমরা তারা মাটিতে খসে পড়তেই<br />আমি একটা মুমূর্ষু নদীকে কালেমা পড়াই !<br /> <br />(২)<br />শিরশিরে হাওয়ার মাদকতায় <br />জোনাকির ঝাঁক নেচে নেচে <br />ঝিমুনি ধরিয়ে দিক শিরায় শিরায় <br />হাতের মুঠোয় বিদ্রোহ জমে <br />নষ্ট চাঁদটাকে আস্ত গিলে খাব <br />প্রচণ্ড জান্তব ক্ষুধায় !</p>
<br /><p>(৩)<br />মধ্যরাতে ব্যথিত পাখির চিৎকারে<br />ভেঙে পড়ে ডিপ্রেশনে ভোগা বৃক্ষের ডাল<br />ছিঁড়েবিড়ে উড়তে থাকে আমার লবণাক্ত শার্ট<br />গুম খুন নারীধর্ষণের প্রতিবাদে <br />ঈশ্বরের পৃথিবীতে ক্রমাগত বজ্রাঘাত বাজে <br />আর আমি কান পেতে শুনি মশাদের কনসার্ট !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/duniar-mojdur-ek-hao/'দুনিয়ার মজদুর এক হও’2020-04-30T20:04:16-04:002023-06-26T04:18:57-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>হিংস্র বুনো অন্ধকার ঘিরে ফেলেছে<br />আমার বুলেটবিদ্ধ দেহের চারদিক—<br />স্লোগান-মুখর বিক্ষুব্ধ মুখগুলি কোথায়<br />উড্ডীন লাল পতাকার ছায়াতলে মুষ্টিবদ্ধ হাতগুলি কোথায়<br />সেই পেস্টুনগুলি কোথায়—<br />যার প্রতিটিতে রক্তাক্ষরে লেখা ছিল :<br />‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’<br /> <br />হিংস্র বুনো অন্ধকার আমার দেহের সব রক্ত চুষে নিচ্ছে—<br />তবুও আমি সাম্যবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি<br />পৃথিবীর সমস্ত দানবিক অট্টালিকা উপড়ে ফেলার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি<br />কোটি কোটি উল্লাসিত মুখে উচ্চারিত শুধু একটি প্রার্থনা শুনতে পাচ্ছি :<br />‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/ghumot-andhare/গুমোট আন্ধারে 2020-04-29T19:56:13-04:002023-06-26T04:18:59-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>১.<br />চাঁদের আলিঙ্গন ছিন্ন করে গুমোট আন্ধারে মেডিটেশনে মগ্ন বোবা মেঘমালার প্রতি আমার আর কোনো জিজ্ঞাসা নেই । আক্ষেপ নেই । অভিযোগও নেই । যাক, ঢুকে যাক । প্রেম এবং রোমাঞ্চের প্রিয় পদ্যগুলো সব অনুভূতির ব্ল্যাকহোলে ক্রমশ ঢুকে যাক । </p>
<br /><p>২.<br />এবং আমাদের ঠোঁটে ঠোঁটে লেগে থাকা ত্যানাপ্যাঁচানো আবেগী পঙক্তিগুলিও খসে যাক । ঠিক চৈতালী বিকেলের মরা পাতাদের মত । </p>
<br /><p>৩.<br />আজাইরা সব তামাশার দোলনায় সাইকেডেলিক রিদমে দুলতে দুলতে আমরা বরং একটা ম্যাজিক্যাল দুনিয়া বানিয়ে ফেললেই তো সব ল্যাঠা চুকে যায়।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/keu-valobashe-ni/কেউ ভালোবাসে নি2020-04-28T20:06:17-04:002023-06-26T04:19:03-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এক দীর্ঘ স্বেচ্ছাচারী ভ্রমণ শেষে<br />তোর কোলে শুয়ে পড়েছে ক্লান্ত দুপুর ।<br />চৈতী হাওয়ায় কেঁপে কেঁপে ওঠা কচি পাতাগুলো<br />আদুরে সুরে এখন আর তোকে কাছে ডাকে না;<br />বিষণ্ণ রোদের স্পর্শে ঘেমে ওঠা গোলাপগুলো<br />নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে তোর দিকে<br />বিনষ্ট সৌরভ—<br />দু’চোখে আক্ষেপের নীল আগুন মেখে<br />তুই চিৎকার করে উঠিস<br />উন্মত্তের মত চিৎকার করে উঠিস—<br />তোকে ওরা কেউ ভালোবাসে নি, কেউ ভালোবাসে নি !</p>
<br /><p>গোধূলি-বেলার বিধ্বস্ত বর্ণিল আকাশ থেকে<br />এক এক করে খসে পড়া মেঘের পালক<br />বিস্তীর্ণ প্রান্তরময়;<br />মৃত্তিকার নরম শরীর ফেটে বেরিয়ে আসা<br />সবুজ ঘাসের শীষে লেগে থাকা শিশির-ফোটা—<br />তোর বুকের ভিতরটাকে বিষিয়ে তোলে ব্যাপক;<br />তুই চিৎকার করে উঠিস<br />উন্মত্তের মত চিৎকার করে উঠিস—<br />তোকে ওরা কেউ ভালোবাসে নি, কেউ ভালোবাসে নি !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/tobu-o-beche-achi/তবুও বেঁচে আছি2020-04-28T11:39:51-04:002023-06-26T04:19:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এই নিথর নগ্ন শরীরের প্রতিটা পল্লবের করুণ আর্তচিৎকার <br />পৃথিবীর মাটি ভেদ করে কোনদিনও <br />ওই মৃত কানে পৌঁছাবে না <br />আমি জেনে গেছি ।</p>
<br /><p>বিপন্ন আকাশের গায়ে লেপ্টে থাকা<br />দেবতাদের প্রতারণার ফাঁদ আর মিথ্যা প্রলোভনের গল্পগুলি<br />আমার শুনতে আর কিছু বাকি নেই । <br />তবুও জন্মান্তরের প্রতীক্ষা, ওড়ে যাওয়ার নেশা...</p>
<br /><p>একাকী রাজপথের পথিকের চেয়েও <br />আরো নিঃশব্দে হেঁটে চলা<br />প্রতিটা রক্তকণিকার আলোড়ন<br />যেন স্বপ্নের চাদরে মোড়া সেই অপরূপ ভোরের শিশির পতনের ট্রাজিডি !</p>
<br /><p>ল্যম্পপোস্টে পিঠ ঠেকাতেই<br />দুঃস্বপ্নের চেয়েও ঘন অন্ধকার চোখে : <br />তবুও বেঁচে আছি, বাঁচতে হবে বলেই ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/nisshobdei-shoye-jabo-shob/নিঃশব্দেই সয়ে যাব সব 2020-04-26T17:03:52-04:002023-06-26T04:19:11-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি আর কোনো চিৎকার করব না—<br />নিঃশব্দেই সয়ে যাব সব ...</p>
<br /><p>তোর সেই অভিমানী জানলা দিয়ে<br />এখনো কি উঁকি দেয় লাল দুটি নেশাখুরী চোখ<br />এখনো কি সেই নিষিদ্ধ বাগিছায়<br /> উড়ে বেড়ায় হলদে প্রজাপতিটা—<br />আমি এসবের কিছুই জানতে চাচ্ছি না<br />জানতে চাইব না আর কখনো !<br /> <br />মেঘের আলমারিতে ঠিকঠাক <br />গুছিয়ে রেখেছি তোর দেয়া সব বেদনা<br />আক্রোশের আলপিন দিয়ে নীরবে নীরবে<br />প্রতিরাতে ছিদ্র করি মৃত প্রেমের শরীর<br />আর সোনায় মোড়ানো স্বপ্নগুলি<br />জানি না কখন ছিনতাই হয়ে গেছে !<br /> <br />না না— আমি আর কোন চিৎকার করব না—<br />নিঃশব্দেই সয়ে যাব সব...</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/sudhu-stobdho-pothchola/শুধু স্তব্ধ পথচলা 2020-04-24T15:16:18-04:002023-06-26T04:19:52-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>স্তব্ধতাকে চিরসঙ্গী করে প্রেমহীন পথে হেঁটে যাচ্ছে ব্যথিত আত্মা !<br />কেউ তাকে দেখছে না, কেউ দেখবে না কখনো ।<br />কেউ শুনছে না তার পদধ্বনি, কেউ শুনবে না কখনো ।<br /> <br />কচি ঘাসের শরীরে রোদ আর শিশিরের মাখামাখি<br />সোনার দুল পরে মাঠজুড়ে পাকা ফসলের তাদিং তাদিং নাচ<br />পাংশু মেঘের ঠোঁটে সূর্যের দীর্ঘ লাল চুম্বন—<br />কোনো দিকেই তার ভ্রুক্ষেপ নেই, শুধু স্তব্ধ পথচলা ।<br /> <br />দুচোখে অন্তহীন ধূসরতা নিয়ে প্রেমহীন পথে হেঁটে যাচ্ছে ব্যথিত আত্মা—<br />থামছে না, থামছে না সে, থামবে না কখনো ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/home-alone/নিঃসঙ্গ অসহ্য শয্যায়2020-04-22T15:53:41-04:002023-06-26T04:19:00-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>চার চারটা দেয়াল কখন যে আমাকে আটকে ফেলল<br />আমি টেরই পেলাম না ।... নেশাগ্রস্তের মতন<br />সেই কবে থেকে ঝিমোচ্ছি নিঃসঙ্গ অসহ্য শয্যায়<br />জোনাকি, তুই একটুও খোঁজ নিলি না !</p>
<br /><p>বিক্ষুব্ধ যন্ত্রণাগুলি বুকের চৌদিকে<br />যতই তুলুক সর্বনাশী ঝড়;<br />স্মৃতির দর্পণে দৃষ্টি ফেলে তবুও চোখজোড়া ফের দেখতে চায় <br />লঞ্চঘাটের সেই অপরিচিতা বালিকাটির মায়াবিনী চাহনি...<br />অল্পকিছু গান-গল্প শেষে চাঁদনীরাতে<br />চৌরঙ্গীতে রাশেদের সঙ্গে সিগারেট ফুকাফুকি—<br />উৎকট ধোঁয়ায় রুপোলি জোছনার রংটাও তখন ধূসর !</p>
<br /><p>বীভৎস চোয়াল বের করে মৃত্যু আমাকে যতই তাড়া করুক<br />আমি শুধু জানি— বেঁচে উঠতেই হবে, বেঁচে উঠতেই হবে আমাকে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/lenin-ashche/লেনিন আসছে2020-04-21T15:29:14-04:002023-06-26T04:19:07-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কপালে উদ্বিগ্নতার ভাঁজ ফেলে<br />রকিং চেয়ারে দুলছে উদারপন্থি অধ্যাপক;<br />উপবাসী কাকের মত ঊর্ধপানে চেয়ে আছে<br />লম্বা দাঁড়িওয়ালা ধর্মব্যাবসায়ী;<br />রক্ত আর ঘাম নিয়ে উদ্দাম লাম্পট্য শেষে<br />মহাভয়ে কেঁপে উঠে পুঁজিপতি অসুর—<br />লেনিন আসছে !</p>
<br /><p>বিপ্লবের লাল নিশান উড়িয়ে<br />লেনিন আসছে—<br />চূর্ণ হয়ে গেছে সব ভয়ের পাথর ।<br />শোষণের নীল কারাগার ভেঙে<br />লেনিন আসছে—<br />দুইচোখে বঞ্চনার তীব্র প্রতিশোধ ।<br />ন্যায্যতার কঠোর চাবুক হাতে<br />লেনিন আসছে—<br />দাউ দাউ আগুন জ্বলছে রক্তে ।<br />বৈষম্যের সব কালো ছাই পুঁতে ফেলে<br />লেনিন আসছে—<br />কণ্ঠে বিজয়ের উল্লাস ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/harano-biggopti/হারানো বিজ্ঞপ্তি 2020-04-20T14:48:36-04:002023-06-26T04:18:59-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>এই লাল ইটের বিল্ডিংটার সামনেই দেখা হয়েছিল । <br />দিন... মাস... সাল— মনে পড়ছে না কিছুই <br />মধ্যদুপুর— শীতার্ত সূর্যটা কুয়াশার ওপারে<br />হয়ত কম্বল মুড়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল !<br />গায়ে আমার কৈশোরের গন্ধ লেগে থাকা চাদর, ঠোঁটে <br />জ্বলন্ত সিগারেট, ইউক্যালিপ্টাসের ছায়া থেকে সরে<br />আমি দাঁড়িয়েছিলাম খোলা আকাশের নিচে—<br />বিশুষ্ক মানুষের স্রোত থেকে ছিটকে এসে <br />জলের মত নরম এক টুকরো হাসি হেসে <br />মেয়েটি, সেই মেয়েটি চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল পাশেই;<br />কোন এক নদীর নামে মেয়েটির নাম<br />আর নদীটার নাম ?<br />মনে পড়ছে না, এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না<br />কেউ কি দিতে পারেন মেয়েটির সন্ধান ? <br /> <br />গায়ের রঙ ? গায়ের রঙটা... ঠিক শেষ বিকেলের রোদের মত ।<br />লাল ফ্রেমের চশমার ভিতর ডুমুরের মত গোলগাল শান্ত দুটি চোখ<br />চোখে যেন রবি ঠাকুরের ছোটগল্পের অতৃপ্ত সমাপ্তির চিহ্ন<br />না, মাথায় স্কার্ফ কিংবা ওড়না কিছুই ছিল না<br />প্রিয় কোনো গাঁয়ের বাঁকহীন সরু মাটির রাস্তাটির মত<br />যেন নিতম্বে এসে থামল চুলের বেণী;<br />কোন এক নদীর নামে মেয়েটির নাম<br />আর নদীটার নাম ?<br />মনে পড়ছে না, এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না<br />কেউ কি দিতে পারেন মেয়েটির সন্ধান ?<br /> <br />সেখানে এখন চৈত্রের দহনে মাটিপোড়া গন্ধ—<br />খোলা আকাশের নিচ থেকে সরে <br />আমি দাঁড়িয়ে আছি ইউক্যালিপ্টাসের ছায়ায়<br />দু-চারটে ক্লান্ত মানুষের নিঃশব্দ পায়চারি<br />কিন্তু নেই, সেই মেয়েটি কোথাও নেই;<br />কোন এক নদীর নামে মেয়েটির নাম<br />আর নদীটার নাম ?<br />মনে পড়ছে না, এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না<br />কেউ কি দিতে পারেন মেয়েটির সন্ধান ?</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/noroke-jabo/নরকে যাব 2020-04-19T11:47:26-04:002023-06-26T04:19:11-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>নরকে যাব বালিকা— সঙ্গে যাবে ?<br /> <br />সবাই তো ভালোবেসে সভ্য হতে চায়,<br />শান্তিময় নীড়ের নির্জনতা খুঁজে বেড়ায়,<br />স্বর্গের বিছানায় শুয়ে শুয়ে সিক্ত হয় মধুজলে;<br />আমরা নাহয় ভালোবেসে বন্য হব,<br />অশান্ত কোলাহল খুঁজব,<br />ঝাঁপ দিব অনন্ত আগুনে ।<br /> <br />নরকে যাব বালিকা— সঙ্গে চলো ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/jolonto-pakhi/জ্বলন্ত পাখি2018-10-30T13:16:29-04:002023-06-26T04:19:03-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তুমি যত জ্বলে ওঠো আমি তত পুড়ে যেতে থাকি <br />তুমি জ্বলে ওঠো পাখি, উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে <br />ছড়িয়ে দাও সতেজ আগুনের গোলা <br />এই শরীরের অলিগলি—<br />আমি শুধু পুড়ে যেতে থাকি, ডুবু ডুবু আঁধারের তলে <br />পরিত্যক্ত ছাই হয়ে পড়ে থাকি !<br /> <br />আমার হৃদয়ের নিশ্চুপ বন্দিশালায় <br />যে পাখিটা সকাল-বিকাল ডানা ঝাপটায় <br />জানি তার সাথে তোমার হবে না মিল <br />তাই সদা এঁটে রাখি খিল, আগুনঝরা জ্বলন্ত পাখি <br />তুমি যত জ্বলে ওঠো আমি তত পুড়ে যেতে থাকি !<br /> <br />তুমি জ্বলে ওঠো পাখি— আমি পুড়ে যেতে থাকি <br />দুচোখে শীতল জল গুঁজে আমি মরে যেতে থাকি <br />শোকে শোকে যতই শুকাতে থাকো <br />পাতাল কাঁপিয়ে তুমি ডাকো, যত খুশি ডাকো <br />ফায়দা হবে না, কিছুই ফিরে পাবে না, তার চেয়ে ভালো <br />আমার টুকরো টুকরো মৃত্যুর ফাঁকে <br />তুমি জ্বলন্ত জীবন হয়ে ঝুলে থাকো ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/valobashak-bachte-dao/ভালোবাসাকে বাঁচতে দাও 2017-07-29T17:45:24-04:002023-06-26T04:19:56-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমি কতবার আকাশের ওপারে <br />মুখ তুলে প্রার্থনা করেছি—<br />এবার তোমার শুকনো মনের চরে <br />নূপুরের বাজনা বাজিয়ে <br />এক পশলা বৃষ্টি নামুক <br />বৃষ্টি শেষে সুখী শিশুর মতন <br />একফালি রোদ হাসুক । </p>
<br /><p>আমি কতবার পাতালের অতল অন্ধকারে <br />মুখ গুঁজে অভিশাপ দিয়েছি—<br />এবার তোমার ঠোঁটের আংটায় <br />একটু মরচে ধরুক <br />খাঁচাবন্দি পায়রার মত নরম বুক থেকে<br />কয়েকটা পালক ঝরে পড়ুক ।</p>
<br /><p>প্রার্থনা আর অভিশাপ— দুটোই অলৌকিক হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে <br />আমি কতবার তোমাকে মনে মনে বলেছি—<br />ভালোবাসাকে বাঁচতে দাও— প্রত্যাখানকে রাখো দূরে সরিয়ে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/toke-khub-kator-lagche/তোকে খুব কাতর লাগছে 2017-05-21T23:00:26-04:002023-06-26T04:19:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>সদ্য বৃষ্টি হওয়া পথে যখন পিছলে পড়ল রোদ<br />স্বর্ণালি সানগ্লাসটা খুলে তোর দিকে দৃষ্টি ফেরালাম—<br />তোকে খুব কাতর লাগছে, যেন জমাট মেঘে হাত রেখে<br />আকাশের সমস্ত দুঃখকে তুই নিজের করে নিলি এইমাত্র ।</p>
<br /><p>মোটর বাইকের লুকিং গ্লাসে এবং গাছের পাতায় পাতায় <br />বৃষ্টিজলে মিশে নৃত্য করছে মাতাল রোদ—<br />সেদিকে তোর ভ্রুক্ষেপ নেই ।<br />তোর হাতে এখনো মেঘের গন্ধ লেগে আছে—<br />তোর চোখে ভয়ানক অনাবৃষ্টি !</p>
<br /><p>এবার তুই দৃষ্টি নিভিয়ে নেশাখুরী ঘুমে ঘুমিয়ে পড়্—<br />নীল নীল স্বপ্নে কেটে যাক তোর সমস্ত কাতরতা ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/khudha/ক্ষুধা 2017-04-21T16:35:49-04:002023-06-26T04:19:03-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কেউ কি শুনতে পাচ্ছো, ক্ষুধা পেয়েছে আমার, তীব্র ক্ষুধা ।<br />জিভ, দাঁত, চোয়াল— সব প্রস্তুত হচ্ছে...</p>
<br /><p>গাবতলি বাস-টার্মিনালে গণপিটুনিতে এইমাত্র মেরে ফেলে হল<br />অন্ধ ভিখারীর একমাত্র ছেলেটাকে<br />উপড়ে ফেলা হল চক্ষু দুটি—<br />মিনিস্টারের ভাগ্নির ভ্যানিটি ব্যাগে নাকি তার কুদৃষ্টি পড়েছিল !<br />ছেলেটার লাশের দিকে দৃষ্টি পড়তেই আমি ক্ষুধা টের পাই, তীব্র ক্ষুধা ।</p>
<br /><p>মণীষা ভিলার ফোর্থ ফ্লোরে জানলার গ্রিল ধরে বুক ফাটিয়ে কাঁদছে<br />বিধবা আমিনার সাত বছরের কন্যাশিশুটি—<br />এই মুহূর্তে ওর ময়লা নীল ফ্রকটা শরীর থেকে খুলে নিলে <br />পাওয়া যাবে অসংখ্য পাশবিক আঘাতের ছিহ্ন !<br />কন্যাশিশুটির বুকফাটা কান্নার শব্দ কানে আসতেই আমি ক্ষুধা টের পাই, তীব্র ক্ষুধা ।</p>
<br /><p>লোকাল বাসে মধ্যবয়সী মহিলাটা আমার পাশের সিটেই বসেছিলেন<br />মিরপুর লডস্টার গার্মেন্টসে উনি মজুর খাটেন<br />ওনার শরীর থেকে তীব্র দুর্গন্ধ ভেসে আসছে <br />ঘাম নয়, রক্তপোড়া দুর্গন্ধ !<br />মহিলাটার রক্তপোড়া দুর্গন্ধ নাকে আসতেই আমি ক্ষুধা টের পাই, তীব্র ক্ষুধা ।</p>
<br /><p>তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ক্ষুধা<br />না, না— সিরাজের হোটেলের ভূনা খিচুড়ি আর ডিম-মামলেটে<br />এই ক্ষুধা মিটবে না;<br />জিভ, দাঁত, চোয়াল— সব প্রস্তুত হচ্ছে <br />তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ক্ষুধা—<br />বিপ্লবের লাল আগুনে আমি ঝলসে খাব<br />বুর্জোয়া শুয়োরের মাংস !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/post20160324040714/একটা দীর্ঘশ্বাসের এলোমেলো আনাগোনা2016-03-24T04:08:00-04:002023-06-27T16:40:30-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>গতরাতে কেউ যেন এসেছিল, এইখানে ।</p>
<br /><p>দরজায় ঠক ঠক শব্দ শুনতেই<br />চোখ থেকে গাঢ় অন্ধকার ধুয়ে ফেলে <br />আমি জেগে উঠি তন্দ্রার ভিতর থেকে <br />হয়ত দেখব বলে কোনো এক প্রিয়মুখ<br />হয়ত নেশাগ্রস্ত ঠোঁটে একটু চুমুক...</p>
<br /><p>দরজা মেলতেই কোথাও কেউ নেই <br />কেবল হাওয়ায় হাওয়ায়<br />একটা দীর্ঘশ্বাসের এলোমেলো আনাগোনা ;<br />সেই দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজ কানে বাজতেই<br />আমি টের পাই কোনো এক নিঃসঙ্গ আত্মার<br />২৩ বছরের পিপাসা-বিষাদ-ক্রোধের তীব্রতা !</p>
<br /><p>বারান্দার গ্রিলে দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তার আর্তচিৎকার <br />পৃথিবীর প্রতিটা কানে পৌঁছালেও মানুষ হয়ত জানতে পারবে না, <br />মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে মরে গেছে !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/post20150423054213/অনর্থক নয়2015-04-23T05:42:42-04:002023-06-26T04:19:48-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আকাশের কোল থেকে এইমাত্র লুট হয়ে গেছে সূর্য !<br />আকাশের নীচে এখন সন্ধ্যা—<br />আবছা আলোর হাত ধরে নীড়ে ফিরছে ক্লান্ত পাখির ঝাঁক <br />স্তব্ধ দীঘির জলে কাঁপছে লালচে আকাশ;<br />আমি ও এক নির্বাক ছায়ামূর্তি মুখোমুখি—<br />পৃথিবীর কোথাও কোনো শব্দ নেই ।</p>
<br /><p>হঠাৎ স্তব্ধতার জাল ছিন্নভিন্ন করে <br />ধর্ষিতার বিপন্ন চিৎকার !<br />অতঃপর মুয়াজ্জিনের আযানধ্বনি ।<br />জ্বলন্ত সিগারেটের সোনালি ফিল্টারে চুমুক দিতেই<br />আমরা টের পেয়ে যাই, বার বার টের পেয়ে যাই—<br />জীবনটা বিস্বাদ হলেও অনর্থক নয় ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/post20141021060642/এ বুক আজ চাবুক চায়2014-10-21T06:07:18-04:002023-06-26T04:19:45-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>চুমু নয়, এ বুক আজ চাবুক চায়;<br />নীল দুঃখগুলি রক্তাক্ত হবে বলে<br />দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় ছিঁড়ে ফেলতে চাইছে<br />সমস্ত শিরা-ধমনী !<br />মার্ ! মার্ ! শপাং শপাং চাবুক মার্ !</p>
<br /><p>দাউ দাউ ক্রোধের চুলোয়<br />পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব সুখস্বপ্ন—<br />এই আঙিনায় এখন শুধু<br />বখাটে নীল দুঃখের উৎপাত !<br />মার্ ! মার্ ! শপাং শপাং চাবুক মার্ !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/post20140909111149/ছাড় নেই2014-09-09T11:14:31-04:002023-06-26T04:19:45-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আজ কিছু দিতে আসি নি, নিতে এসেছি ।<br />যা দিয়েছি, যতটুকু দিয়েছি— তার সবটুকু ফেরত চাই;<br />একটুও ছাড় নেই, সবটুকু ফেরত চাই ।</p>
<br /><p>রক্তকে উত্তপ্ত রৌদ্রে পানি করে গড়ে দিয়েছি<br />এই ছোট বড় সব অট্টালিকা;<br />অথচ আমি কেন বাস্তুহারা ?<br />তীব্র প্রসব-ব্যথায় ফুটপাথে কাতরাচ্ছে<br />আমার গর্ভবতী স্ত্রী !<br />আজ সব— সব অট্টালিকা আমার ফেরত চাই ।</p>
<br /><p>সতী নারীর স্পর্শে পবিত্র শরীরকে কাঁদাজলে মেখে<br />শূন্য জমিকে ভরে দিয়েছি সোনার ফসলে;<br />অথচ আমার পেটে কেন ক্ষুধার আগুন ?<br />চোখভরা অশ্রু নিয়ে শূন্য হাড়ির দিকে চেয়ে আছে<br />আমার নয় বৎসরের অবুঝ কন্যাশিশুটি ! <br />আজ সমস্ত জমি আমার ফেরত চাই ।<br />সব সোনার ফসল নিয়েই ঘরে ফিরব ।</p>
<br /><p>না না, আজ কোন ছাড় নেই— সবটুকু ফেরত চাই;<br />যা দিয়েছি, যতটুকু দিয়েছি— তার সবটুকু ফেরত চাই ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/post20140815105806/কথা আছে2014-08-15T11:01:21-04:002023-06-26T04:19:45-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কথা আছে চুপে চুপে—<br />এইখানটায় বসো, ঠিক এইখানটায়<br />কম্পমান হৃৎপিণ্ডের মধ্যখানে ।</p>
<br /><p>ওদিকে চেও না, <br /> চোখের তারায় রাখো চোখ—<br />কাজল-মাখানো ভ্রুর চারপাশে <br />লেগে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘামে<br />মিশিয়ে দাও <br />সব লজ্জা;<br />কাছে আসো, আরো কাছে—<br />কথা আছে চুপে চুপে ।</p>
<br /><p>শিমুল ফুলের পাপড়ির মত দুই ঠোঁটে<br />জমাট বাঁধা গোপন আদর<br />এবার মেলে ধরো <br />উড়িয়ে দাও হাওয়ায় হাওয়ায় ;<br />ভয়ের দেয়াল চূর্ণ করে<br />কাছে আসো, আরো কাছে—<br />কথা আছে চুপে চুপে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20140103012155/আমি ওদের কাউকে বাঁচাতে পারি নি2014-01-03T01:28:01-05:002023-06-26T04:19:43-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>গত মধ্যরাতে দৃশ্যহীন পৃথিবীর এক কোণে<br />একদল নরনারী চরম আক্রোশে<br />এক মদ্যপায়ী মাতালের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল<br />অন্যায়কে চিরতরে উৎখাত করবে বলে ।</p>
<br /><p>আমি ওদের কাউকে বাঁচাতে পারি নি—<br />সবাইকে এক এক করে টেনে নিয়ে গেল<br />ওঁৎ পেতে থাকা দানবিক অন্ধকার !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/dead-morality/মৃত বিবেকের পচা গন্ধ2013-12-31T00:37:38-05:002023-06-26T04:18:54-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মানুষ তুমি এত দৃষ্টিহীন !<br />তোমার সামনে প্রতিদিন<br />পুড়ে ছাই হচ্ছে জীবন্ত মানুষ;<br />অথচ তোমার চোখে ক্রোধ নেই, প্রতিশোধ নেই—<br />শুধু অন্ধকার, নিস্তেজ নিবিড় অন্ধকার !</p>
<br /><p>মানুষ তুমি এত বোধহীন !<br />তোমার সামনে প্রতিদিন<br />লালামাখা তৃষ্ণার্ত জিভ দিয়ে ওরা<br />অনবরত চাটছে মানুষের রক্ত;<br />অথচ তোমার মুখে প্রতিবাদ নেই, অভিশাপ নেই—<br />শুধু গন্ধ, মৃত বিবেকের পচা গন্ধ !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131227090330/জাহান্নামেও ঠাঁই হবে না তোদের2013-12-27T09:04:11-05:002023-06-27T00:19:17-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>বেহেশ্তের লালসা দেখিয়ে ধোকা দিতে পারবি না আমাকে—<br />তোদের বর্বরতাময় ইতিহাস আমি আজো ভুলি নি,<br />ভুলে নি বাংলাদেশ ।<br />দূর হয়ে যা সামনে থেকে—<br />তোদের মুখগুলি দেখলেই<br />ঘেন্নায় ঝলসে উঠে চক্ষু !</p>
<br /><p>আমার দিনমজুর বাবার রক্তের দাগ<br />এখনো স্পষ্ট লেগে আছে তোদের হিংস্র নখে;<br />আমার কিশোরী বোনের সতিত্ব মিশে আছে<br />তোদের বিষাক্ত লালায়— আমি গন্ধ পাচ্ছি;<br />তীব্র শোকে বেহুঁশ আমার মায়ের আর্তচিৎকার<br />কিছুতেই বিফলে যাবে না—<br />দেখিস, জাহান্নামেও ঠাঁই হবে না তোদের ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131213042453/মানবতার মুখে বিজয়ের হাসি2013-12-13T04:26:39-05:002023-06-26T15:14:50-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>তোরা সব চোখ মেলে চেয়ে দেখ্ , ইতিহাস ফিরে এসেছে !<br />রক্তাক্ত মানবতার প্রতিশোধ নিতে ইতিহাস ফিরে এসেছে !<br />একাত্তর ফিরে এসেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধ ফিরে এসেছে !<br />ন্যায়ের দড়িতে ঝুলে আছে অন্যায়ের পূজারী কসাই কাদের—<br />তোরা সব চোখ মেলে চেয়ে দেখ্ , মানবতার মুখে বিজয়ের হাসি।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131204062323/আজকের কবিতা2013-12-04T06:30:49-05:002023-06-26T04:19:43-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>শুধু আজকের জন্য কবিতার শরীর থেকে<br />মুছে ফেল্ সব সুগন্ধি, খুলে ফেল্ চকচকে সব অলংকার ।</p>
<br /><p>কবিতা আজ ধর্ষিতা নারীর আর্তনাদ হয়ে<br />ঝালাপালা করে দিক সভ্যতার কান;<br />কবিতা আজ বেওয়ারিশ পথ-শিশুর অশ্রু হয়ে<br />পচন ধরিয়ে দিক সমাজের বক্র চোখে;<br />কবিতা আজ খেটে-খাওয়া মানুষের বিক্ষত বুকে<br />জাগিয়ে তুলুক বুর্জোয়া-বধের সুতীব্র তৃষ্ণা ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131203065023/মানুষের অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই2013-12-03T06:54:55-05:002023-06-26T04:19:40-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>ওরে ধর্ ! ধর্ ! ধর্ !<br />সকল ভয়ের গলা টিপে ধর্ !</p>
<br /><p>ওরে মার্ ! মার্ ! মার্ !<br />পুঁজিপতি দানবের পাষাণ বুকে পাথর ছুঁড়ে মার্ !</p>
<br /><p>ওরে ভাঙ্ ! ভাঙ্ ! ভাঙ্ !<br />আকাশচুম্বী সব শোষণালায় ভেঙে ফেল্ !</p>
<br /><p>ওরে তোল্ ! তোল্ ! তোল্ !<br />বিশ্বময় আজ মানবিক স্লোগান তোল্ :<br />‘মানুষ হয়ে জন্মেছি, মানুষের অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই ।’</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131125064219/তবুও আমি ভালোবাসতে চাই2013-11-25T06:44:26-05:002023-06-26T04:19:40-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>ক্ষুধার্ত নেকড়ের মত মাংসাশী দাঁত দিয়ে<br />ভালোবাসা ছিন্নভিন্ন করেছে আমাকে;<br />কখনো বা বিষাক্ত সর্পের মত<br />দংশনে দংশনে বিবর্ণ করে দিয়েছে রক্ত -<br />তবুও আমি ভালোবাসতে চাই !</p>
<br /><p>কেবল ভালোবাসার জন্য<br />জীবন আমার দুঃস্বপ্নের চোরাবালি,<br />হৃদয়ে নিঃসঙ্গতার তপ্ত মরু,<br />দু'চোখে দুঃসহ দুঃস্মৃতির অবিরাম বৃষ্টি -<br />তবুও আমি ভালোবাসতে চাই !</p>
<br /><p>আমি জানি না, ভালোবাসার কাছে কেন আমি এত অসহায় !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131112125549/মুক্তি2013-11-12T00:56:37-05:002023-06-26T04:19:40-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>একদা কোন এক নারীর বুকের মাটি খুঁড়ে<br />গোলাপের চারা বপন করে শূন্যতার বন্দিদশা থেকে<br />আমি মুক্তি চেয়েছিলাম ।</p>
<br /><p>সেই নারীর বুকে আজ ৫২ টি গোলাপের সৌরভ—<br />চার ধারে ঘুরে ফিরে কত বর্ণীল পতঙ্গ !<br />অথচ এখনো প্রতি সন্ধেবেলা<br />সেই বন্দিদশার শিক মুষ্টিবদ্ধ করে<br />মুক্তি দাও, মুক্তি দাও বলে<br />বুক-ফাটা চিৎকারে...</p>
<br /><p>অবশেষে বুকের রক্ত-মাখানো সিঁড়ি বেয়ে<br />উঠে আসে মুক্তি; দেখায় তার বীভৎস চেহারা !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131111021524/বুকের খুব কাছে একটা পাখি ডেকে উঠে2013-11-11T02:16:04-05:002023-06-26T07:40:55-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>সূর্যের সর্বনাশী ছোবলে<br />গোধূলির আকাশ যখন রক্তাক্ত—<br />বুকের খুব কাছে একটা পাখি ডেকে উঠে ।</p>
<br /><p>সে সুশ্রীর মাঝে কুশ্রীকে পেতে চায় ।<br />সে ঘৃণার বুকে ভালোবাসার চুম্বন প্রার্থনা করে;<br />সন্ধ্যার চোখ হতে সব অশ্রু মুছে ফেলে<br />অবশেষে রাত্রির কোলে ঘুমিয়ে পড়ে ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/jibon-mrityu/জীবন-মৃত্যু2013-10-22T01:44:59-04:002023-06-26T04:19:00-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>মৃত্যুর বীভৎস মুখে পদাঘাত করে<br />নিঃসঙ্কোচে বসে পড়ি জীবনের কাছে—<br />বুকের সব গঞ্জনা চিহ্নহীন হয়ে<br />জাগে সুখের উচ্ছ্বাস; প্রবল আঘাতে<br />ছিন্নভিন্ন হতে থাকে শৃঙ্খলার বাঁধ,<br />উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে উঠে রক্ত !<br />হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ে নিঃশ্বাসের বাষ্প ;<br />চোখে মুখে শুধু এক সুখোষ্ণ মত্ততা !</p>
<br /><p>ডুব দেই জীবনের নিস্তব্ধ গভীরে—<br />অকস্মাৎ থেমে যায় ভিতরের সব<br />উচ্ছ্বসিত সুখ; চারদিকে বেজে উঠে<br />অজস্র কান্নার শব্দ; কোথায় আমার<br />সেই রক্তের উষ্ণতা ? আমি চোখ বুজি—<br />মৃত্যুর চাদরে ঢেকে যায় হিম দেহ ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131008065003/কার্ল মার্ক্স তুমি আবার জাগ্রত হও2013-10-08T07:11:31-04:002023-06-26T14:56:17-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>আমরা এখন বড্ড অসহায় ।<br />বুর্জোয়া প্রভুরা আমাদের দিকে শুধু<br />অজস্র ধারালো বর্শা ছুড়ে মারছেন—<br />আমাদের রক্তের চিৎকারে<br />মৌমাছিরা মৌচাক ছেড়ে পালায়;<br />তবু মানবতার ঘুম ভাঙে না ।</p>
<br /><p>কার্ল মার্ক্স, তোমার দেখানো সেই স্বপ্ন<br />এখন কুঠারের আঘাতে ছিন্নভিন্ন;<br />দিনে দিনে রুদ্ধ হয়ে আসছে মুক্তির পথ !<br />কার্ল মার্ক্স, তুমি আবার জাগ্রত হও;<br />নিষ্পেষিত পৃথিবীর বুকে<br />জ্বালাও নতুন স্বপ্নের প্রদীপ ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/kobi-kokhono-nissongo-noy/কবি কখনো নিঃসঙ্গ নয়2013-10-07T03:59:42-04:002023-06-26T04:19:05-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>কে বলে তুমি নিঃসঙ্গ ?</p>
<br /><p>সকালবেলা তোমার স্বপ্নাহত চোখ দুটো<br />যখন দৃষ্টি মেলে খোলা জানলায়—<br />তৃষ্ণার্ত সোনালি রৌদ্র ছুটে এসে তোমার কপোলে চুমু খায়;<br />একমুঠো স্বপ্ন মেখে দেয় তোমার স্বপ্নহীন হৃদয়ে !<br />তবুও তুমি নিঃসঙ্গ ?</p>
<br /><p>কেবল তোমার জন্য বেগুনি মেঘের সঙ্গে<br />রক্তিম সূর্যের দিনভর লুকোচুরি খেলা,<br />হলুদ শাড়ি পরা চাঁদের সঙ্গে<br />রাত্রির মধুসিক্ত মিলন,<br />শুভ্র জ্যোৎস্নার সমুদ্রে ডুবে থাকা<br />অবুঝ শিশুর স্বপ্নের মতন<br />জোনাকির উড়াউড়ি !<br />এরপরও তুমি নিজেকে নিঃসঙ্গ ভাবো ?</p>
<br /><p>তুমি কখনো নিঃসঙ্গ নও;<br />কবি কখনো নিঃসঙ্গ নয় ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131004053511/সুন্দরের পাশে মানবিক আওয়াজ তোলো2013-10-04T17:37:39-04:002023-06-26T04:19:37-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>(উৎসর্গ : এই আসরের সব সুহৃদ কবিকে)</p>
<br /><p>আর দেখতে চাই না কোন নোংরা খেলা;<br />শুনতে চাই না নষ্ট কবির মুনাফেকি বাক্য—<br />আজ সুন্দরের ধ্যানে মগ্ন হয়ে<br />নিজেকে নিঃশেষ করে ছড়িয়ে দিতে হবে<br />প্রতিটি হৃদয়ে;<br />প্রতিটি দুঃখকে ভালোবাসার পরশ দিয়ে<br />ফুটিয়ে তুলতে হবে এই কাব্য-বাগিচায় ।</p>
<br /><p>শুধু তাই নয়—<br />যে অবুঝ শিশুটি এইমাত্র ধর্ষিত হল<br />যে গৃহবধূর সর্বাঙ্গে মদ্যপায়ী স্বামীর<br />অগণিত আঘাতের চিহ্ন<br />যে বৃদ্ধ মায়ের বুকে এখনো আঁচড় দেয়<br />একাত্তরের হিংস্র নেকড়েগুলো—<br />সেই বিপন্ন মানবতার পাশে<br />বিপ্লবের মশাল হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হবে;<br />সেই বিপন্ন মানবতার মুক্তির জন্য<br />প্রতিটি কণ্ঠে তুলতে হবে কান-ফাটানো আওয়াজ ।</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131002035455/শিয়রের পাশে হিংস্র দুঃসময়2013-10-02T04:01:52-04:002023-06-26T04:19:37-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>যাদের ছুটি দিয়েছিলাম বহুদিন আগে -<br />ভয়ানক সেই কষ্টগুলি আবার ফিরে এসেছে;<br />ক্রমাগত সশব্দ চিৎকারে হৃদয় ফেটে চৌচির !</p>
<br /><p>মধ্যরাতে অকস্মাৎ ঘুম ভেঙে গেলে<br />টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দেখি,<br />শিয়রের পাশে হিংস্র দুঃসময় !<br />বিষাদ-মেশানো রক্ত চাটবে বলে<br />তার জিব হতে ক্রমাগত লালা ঝরছে ।</p>
<br /><p>সকালবেলা রৌদ্র এসে দেখে<br />আমার শরীরে ৩৬০ টি চুম্বনের দাগ !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/poem20131001031025/পতিতার গায়ে আজ কবিতার ঘ্রাণ2013-10-01T03:38:49-04:002023-06-27T05:15:38-04:00সালমান মাহফুজhttps://www.bangla-kobita.com/salman/<p>ভোরের বাগানে ফুটে থাকা<br />অবুঝ শিশুর মত পুষ্পে নয়,<br />সবুজ ঘাসে মুক্তোর মত<br />জ্বলজ্বলে শিশিরে নয়,<br />কিংবা কুমারী নারীর মধুময়ী ঠোঁটে নয় -<br />রাতের আঁধারে ফুটপাথে বসে থাকা<br />পতিতার গায়ে আজ কবিতার ঘ্রাণ !</p>
<br /><p>সভ্যতার চোখে যে মানুষ নয়, পণ্য;<br />কিতাব যাকে পাপিষ্ঠা বলে ধিক্ দেয়;<br />দিনের আলোয় যার মুখ দেখলেই<br />ঝলসে উঠে সুশীলদের পবিত্র চক্ষু,<br />অথচ রাতের অন্ধকারে হিংস্র শকুনের মত<br />চিরে চিরে খায় তার শরীরী সতিত্ব -<br />সেই অসতীর গায়ে আজ বিশুদ্ধ আত্মার বিচরণ !<br />সেই পতিতার গায়ে আজ কবিতার ঘ্রাণ !</p>@ 2024 - সালমান মাহফুজ