ওগো সুন্দরী তব বাগানে কি
ফুঠেছে মাধবী মঞ্জুরী?
সুবাস আসিছে বাতায়ন হতে
হৃদয় ভরিয়া লই তাহে সঞ্চারী।


এনেছি আমি বাদল দিনের
কদম্ব-রেনু ডালি ভরি
নিবে কি তুমি শ্রাবণ দিনের
বিদায় বেলায় অন্তরে তা ধরি
এসো তাহলে বদল করি।


আমার হৃদয়ে বাজিছে
বিদায়ের বিরহ রাগিনী,
তাইতো তোমরে সাধিতে
আপনার ক'রে বাঁধিতে
আজও যেন তেমন পারিনি।


ওগো বাদলের অপ্সরী
যাবে তুমি কোন সুদূরে
হেথা হতে বুঝি বহু দূরে
সেথায় কি বাধা আছে
ঘাটে পারাপারের কোন তরণী?


ক্ষণিকের এই পূর্ব অভিসার
রহিবে কি মনে তব?
আগামীর তরে জাগিবে কি
মনে, কোন ভাব অভিনব।


আজ হঠাৎ পড়িছে মনে
কেন জানি অকারণে
তব কপলের স্পর্শ না পেয়ে
ঝড়ে গেছে বর্ষার কদম্ব-রেনু।
তোমারে স্মরিয়া আসিছে ভাদরে
কাঁদিবে হৃদয় তব অনাদরে
প্লাবিত করে গেছ শ্রাবণের প্লাবণে।


ওগো শ্রাবণের মেয়ে
কাঁজল মেঘে ঢাকা আকাশ
হয়তো এখনি হইবে প্রকাশ
জল ছলছল চোখপানে চেয়ে;
শুভ্র-ধবল কাশফুল সম
ভেসে যাবে দূর আকাশের
পথযাত্রী বিরহিনী মেঘ মম।

শোন বাদলের কন্যা
তোমার বিদায়ে ধরায়
আজিকে ডাকিছে বন্যা;
বিদায় পথে কদম্ব রেনু
বিছায়ে দিয়াছি হয়ে নতজানু,
চলে যাবে কোথা দূর-দেশে
সেথায় যদি কাহারেও ভালোবেসে
ব্যথা করে বুক উঠিবে অবশেষে।


যাবে যবে মহিমার হিমগিরি শিখরে
যেথায় কঠিন তুষার, নির্মম শুভ্রতা
নাহি সেথা কারো হৃদয় আখরে
স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসার কোন সরলতা
সেথা কি শুধু বিরহ ব্যাথা-না মধুর পবিত্রতা।


যাও যবে চলে কি হবে আর বলে
তবে রেখে যাও খুলে বর্ষার নুপুর
নিয়ে যাও মাের বিরহী সময়ের দুপুর;
এসো আজ বদল করি তাহলে;
দিয়ে যাও তব বিদায় গোধুলির আলো,
বিরহে তোমার কাটিবে হেথা
নিরাশ হলে উচাটনি মন
মেঘের আঁধারে নিকষ কালো।
নিয়ে যাও তুমি ধ্যান-মগ্নতা
মোর তাপসিনী অচপল
আমার আশায় কাঁদিবে হৃদয়
ধরায় কাঁদে যেমনি ফটিক জল।
-------------------------------
-------------------------------


পল্লবী, ঢাকা-১২১৬।


,