চাষি করে চাষ - বছরের পর বছর একই কাজ,
নতুন বর্ষায়, নতুন আনন্দ, নতুন সাজে সাজ।
ধান, গম, আলু, মূলো - লাউ, কুমড়ো আর বাদাম,
কলা, কমলা, বাতাবি, বেদানা -  আম, কাঁঠাল আর জাম।  


বছর বছর চাষ করে - শরীরে নেই কোনো ক্লান্তি,
মাঠে মাঠে সবুজ ফসল - চোখে মুখে প্রশান্তি।
মাথায় করে এনে ফসল - গিন্নি'রে দেয় হাঁক;
দেখবে এসো ফসল এনেছি - কাঁধ থেকে নামাও বাঁক।


গিন্নি দেয় পাখার বাতাস - সাথে গুড়-বাতাসা জল,
ঠান্ডা বাতাস পেয়ে চাষীর - শিড়দাঁড়াটা হয় সরল।
এমনি করে তাদের কাটে - বছরের অনেক দিন,
সোনার ফসল পেয়ে তারা - আনন্দে নাচে তাধিন তাধিন !


প্রতিবছর ভীষণ বর্ষায়, ক্ষেত ডুবে যায়,
অনেক ফসল নষ্ট হয়, অনেক ভেসে যায়।
তবুও তাদের মিটে না আশ, নিখুঁতভাবে করে চাষ,
লোকে বলে হারুকে; সাবাশ ! চাষা'র বেটা - সাবাশ !  


গত বর্ষায় হারু'র ঘরে - অকস্মাৎ এলো বিপদ,
চারদিনের অঝোর বর্ষা - কাটলো জীবনের সব আপদ।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে - আর করবে না সে চাষ,
তাদের গরু ছাগল, মোষ - খাবেনা মাঠের ঘাস।


তিন বিঘে ছিল ধানী জমি - আর একটি পুকুর,
নদী গর্ভে সব গেলো চলে  - মায় ছাগল, বিড়াল কুকুর।
সবই গেলো ভেসে ভেসে - জলের ভিতর - শ্মশান কবর।
গ্রামের মাঝে সবুজ নদী - হইলো টিভি'র খবর।


শত দুঃখ কষ্ট সয়ে - করেছে চাষি, সকলকে অন্ন দান,
সারাজীবন কর্মে অবিচল - তাইতো তারা মহান।
আগামী জীবন সুখী হোক - এই মোর কামনা,
তাঁদের আত্মা শান্তি লাভ করুক - এই করি প্রার্থনা।