মুখে আমারে যতই স্পেশাল কও
আমি তো জানি
আমি তোমার কাছে কতটা ফ্যালনা
তোমার সমগ্র জীবনে আমার মতন কেহ নাই আর  
পাবলিক বাসের মতন
ভাসমান ফেরিওয়ালার মতন
অফিসের পিয়নের মতন
কিংবা তার থেকেও তুচ্ছ।


প্রিয় আমার
আমি রোজ তোমার স্পেশাল খেতাব নিয়া
হেল্পারের ধাক্কা খাই।  
ধাক্কা খাওয়ার গল্পও তোমারে শুনাই  
শত বচ্ছর ধরে তুমি এই এক গল্প
শুনতে শুনতে বলো
পাবলিক বাসে চড়তে আসলে কেমন লাগে?  
আমিতো কোনদিন চড়ি নাই।    
কিন্তু তোমার কষ্টটা ঠিকই বুঝতে পারি।
  
এককোটি মাইল দূরত্বে বইসা তুমি বোঝো  
বাসে উঠতে গিয়া হেল্পারের ধাক্কা খাইতে কেমন লাগে।
পার্পল কালারের সানগ্লাস দিয়া চোখ ঢাইকা  
মার্সিডিজ ড্রাইভ করতে করতে হাসতে হাসতে
গান শুনতে শুনতে
গ্লাসের বাইরে বিদেশি মাইয়া দেখতে দেখতে
তুমি বোঝো
হেল্পারের ধাক্কায় কেমন লাগে?


এক মুখে তোমার কত রকম কথা।  
ঐ একই মুখ দিয়া বলো রিক্সা খুবই কুৎসিত যানবাহন।
এতে মানুষ চড়ে ক্যামনে!!
নাহ,  
রিক্সায় তো মানুষ চড়ে না,  
মানুষ শুধু মার্সিডিজে চড়ে গো।
হাতে রোলেক্স ঘড়ি পইড়া
ঝকঝকা চেহারা নিয়া।
তারা স্বর্ণের রাস্তায় চলাচল করে।  


তোমার সমবেদনায় আমি হাঁটতে হাঁটতে উল্টা দিকে যাই।
যাইতে যাইতে
থামি।
দাঁড়াই।
বড় বড় রাস্তাঘাঁট দেখি,
বিল্ডিং দেখি
অচেনা মানুষ দেখি
বাস আসে কিনা সেদিকে দেখি,
পেছনে সস্তা খাবারের উটকো গন্ধে
তোমার কথা মনে আসে।  
এই পচা গন্ধের মধ্যে তোমারে হাত পা বাইন্ধা
ফেললে ভালো হইতো।
    
তুমি ও আমার কথা ভাবো
কফি মিটিং কমিউনিটি মিটিং করতে করতে
কোটি টাকার লাভ লস হিসাব করতে করতে  
মারিয়ট হোটেলের ব্যালকনি দিয়া
সুইমিং পুলের বিকিনি পরা হুর পরী দেখতে দেখতে  
তুমি তো আমার কথাই ভাবো।
আমি বিশ্বাস করি।  
আমি দেখি কেম্ব্রিয়ান কলেজ
আমি দেখি দরিদ্র যুবতী মা
বাচ্চা কোলে
সেও আমারে দেখে
সেও আমার মত বাসের অপেক্ষায়
তারেও হেল্পার ধাক্কা দেয়।

প্রিয়তম
তোমার আমার সাথে
আসমান জমিনের ফারাক
আমি কোনোদিন আসমানে পৌঁছাইতে পারবোনা।
কিন্তু পাবলিক বাসের
হেল্পারের ধাক্কা খাওয়াইতে তোমারে
বড়ই সাধ হয়।