অহংকার আমাদের শিরা উপশিরায় --
সর্বশ্রেষ্ট জীব ভেবে গর্বে বুক হাপরের মতো ফুলিয়েছি বহুবার
জ্ঞান গরিমায় আমরা ধরা কে সরা ভেবেছি বহুকাল হতে
সভ্যতার বিবর্তনের ইতিহাসে আমাদের উত্থান হয়েছে পতন ও হয়েছে  
আবার ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার চিহ্ন স্বরূপ শিলালিপি  হয়ে গেছি বহুবার
আবিষ্কারের নেশায় ভুলে গেছি আমাদের আধার স্বরূপ জন্ম ধাত্রীকে
তার বুকের ওমে খুঁড়ে খুঁড়ে বানিয়ে নিয়েছি আমাদের অহমিকার প্রাসাদ
তার মমতাময়ী প্রকৃতিতে আমরা আমাদের পার্থিব জগৎ গড়েছি
তার মমতা , বাৎসল্যে আমরা আমাদের কামনা বাসনায় ভরিয়েছি
তারপর ও সে জন্মভুমি জন্মদাত্রী মা হয়ে সয়ে গেছে  
তার অবোধ সন্তানদের বালখিল্য আচরণ সে মেনে নিয়েছে
সে মাঝে মাঝে রুষ্ট হলে ও বিমাতা হয়নি কখোনো


এরপর ও আমরা সুখী নই , আরো কিছু , আরো অনেক চাই
সুনাম চাই , যশ , খ্যাতি , ঐশ্বর্য , আধিপত্য সব  চাই সব --
তার জন্যে , নিচে নামবো , ভায়ের রক্ত নিয়ে খেলবো , মায়ের যোনী ছিঁড়বো !
প্রয়োজনে নিজের বোন , স্ত্রী-সন্তানকে অর্থের লোভে বিক্রি করবো
উদ্ভাবন করবো মানুষ মারার নতুন নতুন হাতিয়ার
তাতেও যদি না মরে রক্ত শিরায় ঢুকিয়ে দেবো মারণ জৈব বিষ  


তারপর প্রতি সুপ্রভাতে খবর পাবো লাখোলাখো লোক মরছে
রাস্তার অলিতে গলিতে পড়ে আছে অগুনতি লাশ
তাদের শেষকৃত্যের লোকেরা তখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে
প্রাণভয়ে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে আতঙ্কে হাঁসফাঁস করছে
শতেক কষ্টে , দুঃখে কেউ কাউকে ছুঁয়ে তার সমবেদনা জানাতে পারছেনা
কেউ অনাহারে , অনিদ্রায় বন্ধ ঘরে কড়িকাঠ মেপে রাতের প্রহর গুনছে
আর দিনপোহালে উঁকি মারছে বড় রাস্তায় যদি কেউ আসে সাহায্যে
এইভাবে চলতে চলতে একদিন সবার বাইরে যাওয়া ফুরাবে
ভাঁড়ার ফুরাবে , অভুক্ত অনাহারে দিকে দিকে উঠবে ক্রন্দন !
সব সীমা অতিক্রম হলেই বাঁধ ভাঙবে রাজপথ অন্নহীন হাহাকারে
তারপর ই মেতে উঠবো ছোঁয়াছুঁয়ির মারণ খেলায় !
তার ও পর সবাই মরবে আর আমাকে ও লাশ বানাবে
আর শুইয়ে দেবে এই মানব সভ্যতার অন্তিম শরশয্যায় !