ঘুণপোকা দেখেছ কি কখনো ?
কেমন করে টুকরো টুকরো করে ঘরের সব বর্ণিল আসবাব ।
আমার হারিয়ে যাওয়া মধুর অতীত
আজ ঘুণপোকা হয়ে বাসা বেঁধেছে-
এই দেহের ভিতর নীরবে নিভৃতে।
আর কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে রংধণুর রঙে সাজানো
অনাগত সব স্বপ্নিল অবয়ব।
কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অনন্তকাল বেঁচে থাকবার
অদম্য আর দুর্বার ইচ্ছে গুলো।
আমি যেন নিজের অজান্তেই লালন করে চলেছি সেই ঘুণপোকা।
বেচেঁ থাকবার সমস্ত সাধ হারিয়ে গেছে
তেজদীপ্ত সূর্যের মত রাতের অন্ধকারে,
হারিয়ে গেছে মায়াবিণী পূর্ণিমার মত ভরা অমাবস্যায়।
কিন্তু এমনতো হবার ক্থা ছিল না!
কত যত্নে গড়া এই মায়ার শরীর,
কত আদর সোহাগে বেড়ে ওঠা-
সেই সোনালি শৈশব থেকে কৈশর ;
কোথাও অযত্ন আর অবহেলার লেশ মাত্র ছিল না কোন দিন।
সেই যত্নে গড়া সুঠাম দেহের ভিতর
আজ ঘুনপোকাদের উম্মাদনা সয়ে যাই নীরবে,
যুদ্ধাহত সৈনিকের মত আমি যেন অনেকটাই নির্বিকার।
অথচ শৈশবে সামান্য অসুখে বেচেঁ থাকবার অদ্যম আকুতি নিয়ে
দু'হাতে নাক চেপে অনেক কষ্টে-
কট লিভারের মত অখাদ্য গিলেছি বহুবার ।
দীর্ঘ আয়ু আর পুরূষত্ব লাভের অকুন্ঠ আশায়
চিরতা আর নিম পাতার রস খেয়েছি কত সকাল।
বেঁচে থাকবার সেই অদম্য ইচ্ছে গুলো
আজ আমায় উপহাস করে প্রতিক্ষণ,
জীবন যুদ্ধে পরাজিত করবার সীমাহীন উল্লাসে
উজ্জীবিত সেই ঘুণপোকার দল-
হ্রদয়ের শূণ্য করিডোরে করে আনন্দ মিছিল।
আর চার দেওয়ালের মাঝে বন্দি এক বিধ্বস্ত কবি-
বড্ড বেশী একাকী আর মূল্যহীন অভিমান নিয়ে
আজও তোমারি প্রতীক্ষায়।