তুমি কি এখনও আমার কথা ভাবো
নিঝুম দুপুরে নিঃশব্দ তন্ময়তায়—
জানালায় চোখ রেখে
হারিয়ে যায় তোমার মন।
কিছু মৌনতা, স্বপ্ন ও আদরে জড়াও।
দূর শিয়ালদায় বিকট শব্দ তুলে
ছুটে যায় তিনটে পচিশের নৈহাটি লোকাল।
তোমার তন্ময়তা ভেঙ্গে
বুকের মধ্যে তুলে এক উত্তাল তরঙ্গ।
ট্রেনের শব্দের সঙ্গে মিলেমিশে যায়।
(২)
কলেজ কেটে আমি বিদ্যুতের গতি নিয়ে
ছুটে আসতাম তোমার কাছে—
হারিয়ে যাওয়ার নেশা আমাকে তাড়িত
করে নিয়ে আসত তোমার কাছে।
আমি জানতাম না এর মধ্যে কোন
ক্রিয়া কাজ করত।
তোমার টোল খাওয়া গালে চুমু দিয়ে
তোমার সামনে বসতাম। মনে হত যেন
খোরাসানের সেই চঞ্চল মেয়ে
যার সঙ্গে কবি গালিবের কবিতার
আশ্চর্য মিল।
আমি তোমাকে ভালোবাসি আকাশের মত
উদারতা নিয়ে। তবু যেন মনে হয়
তোমাকে ভালোবাসার মত ভাষা নেই।
(৩)
চায়ের আড্ডায় তোমার সেই কবিতা
এখনও আমাকে মনে করিয়ে দেয়
‘—বিবর্তনের মধ্য দিয়ে কি বিপ্লব আসে
নাকি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বিবর্তন।‘
অহেতুক আমি তোমার  কবিতার বিতর্কে
জড়িয়ে যেতাম।
এক ঝাঁক হলুদ পাখীর মত, চায়ের কাপে
তুমি ঝড় তুলে উড়ে যাও।
চায়ের আড্ডায় তোমার উপস্থিতি
যেন শীতের সকালে রৌদ্র স্নান।
(৮)
কলকাতার নগ্ন ফুটপাতে হাঁটতে হাঁটতে
তুমি প্রতিবাদ জানিয়েছিলে—
ক্ষুধিত নিঃপীড়িত মানুষের জন্য।
আজ বসনিয়ায় নারী নির্যাতন
রুয়ান্ডা, ল্যাতিনে বোমাবর্ষণ ।
বৃষ্টি ভেজা মাঠের মত নরম গলায়
আমরা শান্তির বানী প্রচার করি—
নতুন প্রজন্মে আর যেন আমরা একটাও
নগ্ন সভ্যতার জন্ম না দিই।