হৃদয়ের কাছাকাছি এসে তুমি সরে যাও
শুধু জেগে থাকে শেষ রাতে ফোঁটা ফুল
হিমশীতল হাওয়ায় গড়িয়ে যায়
ভোরের আলো।
স্বপ্নময় ঘুম ভেঙ্গে ।
নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকি আমি
দিনের সুপ্ত চাঁদের প্রকাশ দেখব
রাতের অন্ধকারে।
ঝরে যায় কৃষ্ণচূড়ার পাতা ফুল
ঝরতে থাকি আমি – আমার বয়স
আমার চুল আমার হাত পা মস্তিষ্ক আমার স্নায়ু
কালের অনন্ত প্রবাহে-
পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসে
এই রাত এই অমানিশা এই ছন্দহীন জীবন।
তোমাকে শেষ বার দেখেছিলাম
তোমাদের বাড়িতে  
দুর্গা পুজার সময়।
পুজার ঢাক বাজছে, বড্ড কোলাহল
ভিড়ের মাঝে দেখলাম লাল পাড় শাড়ীতে
তুমি অঞ্জলি দিচ্ছ। অনেক দিন পর তোমাকে দেখলাম
হৃদয়ের অবিরল অন্ধকারে সূর্যকে ডুবিয়ে দিলাম।
সেই জমাট অন্ধকারে মৃত্যুর মত মিশে
থাকতে চেয়েছি আমি— তোমার মধ্যে
তোমার স্তনের মধ্যে তোমার যোনীর মধ্যে।
তুমি কি আগের মত কাজল পর
তুমি কি আগের মতই আছো-
তোমাকে ভুলতে পারিনি আজও।

আমাকে তুমি পাবে সবখানে—
তোমার রক্তের মধ্যে তোমার চুলের সুঘ্রানে
তোমার জিহ্বার ডগায়।
আমি থাকতে চেয়েছিলাম তোমার
সিঁথির সিন্দুর হয়ে।
আমি থাকতে চেয়েছিলাম
তোমার হাতের বালা হয়ে
আমি থাকতে চেয়েছি তোমার
শাড়ীর ভাঁজে, তোমার ব্লাউজের
অন্তর্বাসে। তোমার চোখের কাজল হয়ে।
    পৃথিবীটা তখন ঘুরতে ঘুরতে
অন্তরীক্ষ পার হয়ে সিন্ধু নদের দেশে।
তোমাকে দেখব বলে
আমি হাজার বছর ধরে শুয়ে
আছি এই হরপ্পার মাটিতে –
সিন্ধু নদীর জলে আমি দেখলাম তোমার ছায়া
পিছনে পড়ে আছে বিস্তীর্ণ প্রান্তর
দূরে ওই চিনার গাছের তলায়
তোমার পায়ের শব্দ।
জন্ম মৃত্যুর সরলরেখায় দাঁড়িয়ে
আমি ছুটে আসি তোমার কাছে।
                                             ক্রমশ....